মেঘ-বৃষ্টি -পার্ট ১

গল্প :মেঘ-বৃষ্টি
❤❤
রোদ-রোদেলা

লেখিকা :তানিয়া[আনিতা]

ইন্টারভিউ রুমে অপেক্ষা করছে বৃষ্টি। খুব অস্থির লাগছে চাকরিটা আদো হবে কিনা তা নিয়ে, কিন্তু চাকরিটা যে তার খুব দরকার, সংসার চালানো, ছোট ভাই এর পড়ালেখা, মায়ের ঔষধ খরচ সব মিলিয়ে খুব টেনশনে আছে যদিও তার স্টাডি ব্যাকগ্রাউন্ড খুব ভালো তবুও। কারণ বর্তমানে মেধার চেয়ে টাকার দাম বেশি, সেই সাথে আছে যৌন হয়রানি। এর আগে ও অনেক জায়গায় ইন্টারভিউ দিয়েছিল কিন্তু অনেকে তাদের খুশির জন্য টাকা দাবি করে, অনেকে তো আবার তাদের সাথে সময় কাটানোর অফার দেয়। যার জন্য আর চাকরি গুলো তার পাওয়া হয়নি।





সে ভাবতে লাগলো তার অতীতের কথা কতই না ভালো কাটছিল তাদের দিন গুলো। হঠাৎ করে তার জীবনে নেমে আসে অন্ধকার। তার বাবার ক্যান্সার ধরা পড়ায় তাদের জমানো টাকা যা ছিল তা সব খরচ হয়ে যায়। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস তার বাবাকে বাচানো যায়নি। বাবার মৃত্যুর পর এলোমেলো হয়ে যায় তাদের পরিবার। এরপর তার মাও অসুস্থ হয়ে পরে তখন পুরো পরিবারের দায়িত্ব এসে পড়ে বৃষ্টির ওপর আর পরিবারকে ভালো রাখার আপ্রান চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে এসব ভাবতে ভাবতে ডাক পরল বৃষ্টির
“এখানে বৃষ্টি কে”?
“জ্বি আমি ”
“ভেতরে আসুন ”
ভেতরে ঢুকে সে কিছু মধ্য বয়সী মানুষ দেখল দেখে বুঝতে পারল ওনারই তার পরীক্ষা নিবে। যথারীতি তাকে তাদের সামনের চেয়ারে বসতে বলা হলো। তারপর তার তথ্যগুলো ভালো করে দেখতে লাগলো তথ্য গুলো দেখে তাকে প্রশ্ন করবে এমন সময় বিচারক দের একজনের ফোন বেজে উঠল ফোনটা রিসিভ করতেই ওপাশ থেকে……….


ওকে।

ওকে।


ওকে স্যার।
আপনার চাকরি হয়ে গেছে আপনি কাল থেকে জয়েন করতে পারেন।

তারপর একজন লোক কে ডাকা হলো আর বৃষ্টি কে দেখিয়ে বল্ল “ওনার সাথে যান ওনি আপনাকে সব বুঝিয়ে দিবে আর কাল ১০ টায় অফিসে চলে আসবেন”।

বৃষ্টি কিছু বুঝল না তার সাথে কি হলো। এতদিন অনেক ইন্টারভিউ দিয়েছে কিন্তু এমন কখন হয়নি তবুও মনে একটা স্বস্তি পেল চাকরিটা হওয়ায়। বাইরে গিয়ে সব কিছু ঠিক করে বাসার দিকে রওনা দিল।

বাসায় এসে ফ্রেশ হয়ে মায়ের কাছে গেল তখন তার ভাই রুমে পড়ছিল বৃষ্টি দেখে তার মা জিজ্ঞেস করল
“কীরে মা আজ এতো দেরি হলো যে”?🙂🙂
“বলো না একটু দেরি হয়ে গেছে কিন্তু আনন্দের কথা কি জানো চাকরিটা না হয়ে গেছে “শুনে তার মা ও ভাই খুব খুশি হলো তার ভাই বলল
“তাহলে তো আর আমাদের কষ্ট থাকবে না কী বলো আপু😊😊”?
“😊😊হুম ”
রাতে খাওয়া দাওয়া করে তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়ল কারণ সকালে অফিস আছে বিছানায় শুয়ে বৃষ্টি ভাবতে লাগলো অনেক দিন পর আরামের একটা ঘুম হবে ভাবতে ভাবতে কখন যে ঘুমিয়ে পড়ল তা বুঝতে ও পারল না।



সকালে,
ভোরে ঘুম থেকে উঠে বৃষ্টি নামাজ পড়ে মাকে ঔষধ দিয়ে ভাইকে গুছিয়ে স্কুলে পাঠিয়ে নিজও রওনা দিল অফিসের উদ্দেশ্যে।

অফিসে ঢুকে সবার সাথে পরিচিত হয়ে নিজের ডেক্সে গিয়ে বসল হঠাৎ একটা মেয়ে এসে বল্ল,
“হাই আমি তৃণা এখানে কাজ করি শুনলাম তুমি নাকি
নতুন জয়েন করেছ তাই দেখা করতে আসলাম। 😊😊”

তৃণাকে দেখে বৃষ্টি মুচকি হাসি দিয়ে বলল
“আমি বৃষ্টি নাইস টু মিট ইউ 😊😊😊”
এভাবে কিছুক্ষণ কথা বলার পর একজন কর্মচারী বৃষ্টির ডেক্সে এসে বল্ল
“আপনি কি মিস বৃষ্টি “?
“জ্বি ”
“আপনাকে স্যার ডাকছেন ”
তখনই মনে পরল ওর সাথে এখন ও স্যারের দেখা হয় নাই। তাই ও তৃনা থেকে বিদায় নিয়ে স্যারের কেবিনে পা বাড়ালো, তখনও জানত না তার জন্য সামনে কি অপেক্ষা করছে।

স্যারের দরজা নক দিয়ে বলল,
“মে আই কাম ইন স্যার “?
“ইয়েস কাম ইন”
“নতুন জয়েন করলেন কিন্তু এখন ও আমার সাথে দেখা করার দরকার মনে করলেন না( খুব রাগী গলায় বলল)”?
সরি বুঝতে পারি নাই আসলে , আর বলতে না দিয়ে
থাক আমি কোনো সাফাই শুনতে চাই না
কথাটি বলার পর বলল “টেবিলে কিছু পেপার রাখা হয়েছে ওগুলো সাইন করুন ”
“কিসের পেপার “?🤔🤔
“এগ্রিমেন্ট পেপার ৩ বছরের আগে যাতে আপনি জব ছাড়তে না পারেন তার কিছু কন্ডিশন বলা তো যায় না যদি ভালো কোনো জব পেয়ে আমাদের জবটা ছেড়ে চলে যান। তাই কোম্পানির নিরাপত্তার জন্য এই ব্যবস্থা যদি কোনো কারণে জব ছেড়ে দেন তাহলে ১০ লাখ টাকা জরিমানা”।

এতোক্ষণ কথা বলছিল কিন্তু এখানো পর্যন্ত সামনে থাকা মানুষটির চেহারা দেখতে পায় নাই বৃষ্টি, কারণ মানুষটি তার উল্টো দিক করে বসে ছিল।

আর কিছু না ভেবে বৃষ্টি সাইন করে দেয় সব পেপারে যেই না সাইন শেষ করে বলল,
“স্যার হয়েছে ”
সাথে সাথে চেয়ারটি ঘুরানো হলো আর চেয়ারে থাকা মানুষটিকে দেখে বৃষ্টি অনেক বড় শকড খেল, তার মুখ থেকে একটাই লাইন বের হলো

😮😮😮😮😮😮😮😮😮

“মেঘ আপনি “?

পর্ব=১
(খুব ইন্টারেস্টিং একটা গল্প আশা করছি ভালো লাগবে এখানে ২ জোরা কাপল নিয়ে গল্পটা সাজানো হয়েছে যদি ভালো রেসপন্স পাই তবে পরবর্তী অংশ দেওয়া হবে ধন্যবাদ 😊😊😊)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here