রোদ বৃষ্টির প্রেম পর্ব -০১

পার্টিতে বহু মানুষেরর ভীর ঠেলে একপাশে একটা মেয়ে চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে। হুট করে কেউ একজন সেই মেয়ের মুখটা পেছন থেকে চেঁপে ধরে। তাকে গরুর মতো টানতে টানতে বাহিরে বাগানে একটু দূরে সাজানো একটা টেবিলের মানে নিয়ে এসে দাঁড়ায়।

এরপর বলে,”দেখ তোর পছন্দ মতো সব কিছু সাজিয়ে রেখেছি। এসব কিছু দেখে কি করে আমার উপর রেগে থাকবি? জানি তোর রাগ এখুনি পানি হয়ে গলে গেছে। মুখটা ছাড়বার পর ছাগলের মতো ভ্যা ভ্যা করতে শুরু করবি না কিন্তু ছাগলি।”

মেয়রটাকে ছেড়ে দিতেই পেছন ঘুড়ে ছেলেটার গালে কষিয়ে মনের সুখে থাপ্পড় বসিয়ে দেয়।

হচকিত হঠাৎ এমন কান্ডে ছেলেটা মেয়েটার মুখের দিকে তাকিয়ে আকাশ থেকে বিজলী পড়ার মতো পড়ে।

তার সামনে আকাশ থেকে নেমে আসা পরি দাঁড়িয়ে আছে। কিন্তু মেয়েটার চোখ দুটো এতোটাই রাগে লাল টকটকে হয়ে আছে। মনে হচ্ছে এখুনি চোখ থেকে রক্ত বেড়িয়ে আসবে।পারলে ছেলেটাকে এখুনি খুন করে দিবে। টেবিলের আশেপাশে থাকা রঙবেরঙ এর লাইটের আলোতে মেয়েটার সৌন্দর্য আরো দ্বিগুণ বাড়িয়ে দিচ্ছে।
তবে এসবে গলে যাবার পাত্র ছেলেটা মোটেই নয়।
তার গায়ে আজ পর্যন্ত তার বাবা-মা কখনো থাপ্পড় দেয় নি। সেখানে এই মেয়েটার সাহস হয় কি করে?
সুন্দরি হয়েছে বলে কি সবার মাথা কিনে নিয়েছে?

ছেলেটা – এই বেয়াদব মেয়ে আমার গায়ে হাত তোলার সাহস পেয়েছেন কোথায় থেকে?

মেয়েটা রাগি কন্ঠে বলে,”চোরের মায়ের আবার বড় গলা।”
তাই বলে ছেলেটার কোর্টের কলার ধরে বলে,” এই শয়তান, বেয়াদব, অপদার্থ আমাকে স্পর্শ করার সাহস কোথায় পেয়েছেন? কোন অধিকারে আমাকে স্পর্শ করেছেন? আপনি আমার বাবা,ভাই,না স্বামী? তাহলে আমাকে স্পর্শ করার সাহস করেন কি করে? বিনা অধিকারে আমাকে নিজের সাথে জড়িয়ে রাখার দুঃসাহস দেখিয়ে আমার উপরে উল্টা ঝাড়ি বারি?”

ছেলেটা দাঁতের উপর দাঁত চেপে বলে,” এই জানেন আমি কে?”

মেয়েটা – আপনি জানেন আমি কে? চেনা নেই জানা নেই। একটা মেয়েকে একটু ছুঁয়ে দিতে পারলেই হলো তাই না? বেয়াদব লোক! পরিবারের কাছ থেকে এই শিক্ষা পেয়েছেন? বাড়ির মহিলাদের ও এই সম্মান করেন বুঝি?

ছেলেটা – দেখুন আপনি অনেক বেশি কথা বলছেন। আমি মানছি আপনাকে ভুল করে স্পর্শ করেছি।
আমি আপনাকে অন্য কারো সাথে তাল-গোল পাকিয়ে ফেলেছি। সেই জন্য আমার মিস্টেক হয়ে গেছে।
দেখুন আপনার মতো এতো সুন্দর মেয়েকে বিবাহ না করে স্পর্শ করার কোনো ইচ্ছা আমার নেই।
তবে ভুলটা যখন আমার তখন আমি ক্ষমা চাইছি।
আর দয়া করে এসবের মাঝে আমার পরিবার কে টানতে যাবেন না।

মেয়েটা- হ্যাঁ মেয়েদের একটু ছুঁয়ে দেওয়ার জন্য কতো তাল-বাহানা করতে পারে ছেলেরা তা আমার খুব ভালো করে জানা আছে। তার উপর আপনার মতো চরিত্রহীন কিছু লোক তো সব সময় সুযোগের অপেক্ষায় থাকে।

ছেলেটা – দেখুন মিস না মিসেস জানি না, তবে আপনি অকারণে অযথা আমার চরিত্রের উপর কালী লেপেপুছে দিতে পারেন না।

মেয়েটা- আপনি যে আমাক ছুঁয়েছেন পারবেন সেই স্পর্শ গুলো উঠিয়ে নিতে? যদি পারেন তাহলে বলবেন আমিও আমার কথা গুলো শুধরে নিবো।

ছেলেটা- আচ্ছা বেয়াদব মেয়ে তো আপনি? বলছি তো ভুল হয়ছে। করে ফেলেছি ভুল তার জন্য চাইছি তো মাফি। তারপর এতো কথা আসছে কেনো?

মেয়টা হুট করে ছেলেটাকে ধাক্কা দিতে দিতে বাগানের সাইডে থাকা সুইমিংপুলের পানিতে এনে ফেলে দেয়। তারপর বলে,”আপনাদের মতো বখাটে ছেলেদের কি ভাবে সোজা করতে হয় তা এই আতিয়া ইবনাত বৃষ্টি খুব ভালো করে জানে।” বলে সেখান থেকে চলে যায়।

এদিকে পানিতে থাকা ছেলেটা বলে,”বেয়াদব মেয়ের এতো সাহস হয় কি করে? আমাকে পানিতে ফেলে দেওয়ার? এই আমাকে? নেক্সট টাইম হাতের কাছে পেলে পুরো আলুভর্তা বানিয়ে ছাড়বোমাইন্ড ইট বেয়াদব।”

এদিকে মেয়েটা পার্টিতে না গিয়ে সোজা সেখান থেকে বেড়িয়ে বাড়িতে চলে যায়। বাড়িতে ফিরে সে সোজা বাথরুমে প্রবেশ করে। তারপর যেখান যেখানে ছেলেটা স্পর্শ করেছে সে সব স্থানে ভালো করে সাবান দিয়ে ধৌত করতে থাকে। আর জোড়েজোড়ে ছেলেটার চৌদ্দপুরুষ কে গালি দিতে থাকে।

পুলসাইডে ছেলেটা পানি থেকে উঠে কাক ভেজা অবস্থায় নিজেকে একবার দেখে নেয়। সুইমিং পুল থেকে উঠে এসে এক সাইডে দাঁড়িয়ে থেকে নিজের রাগ সংযোত করার চেষ্টা করতে থাকে। তবে তা কিছুতেই হচ্ছে না। কিন্তু কি করবে বুঝতে পারছে না। একটা ভুলের জন্য বাহিরে মেয়ে তাকে এতো কথা শুনিয়ে দিয়ে গেছে। এমনকি তাকে ধাক্কাতে ধাক্কাতে পানিতে ফেলে দিয়ে গেছে।
এই কাকভেজা অবস্থায় সে কি করে যাবে তার বাড়িতে? মান-সম্মান বিনা পানিতে ধুয়ে দিয়ে গেছে। এই ঘটনা যদি সাত-পাঁচ কান হয় তাহলে তার সম্মান কিছুই রইবে না।

এমন সময় ছেলের বাবা মা সেখানে এসে বলে,”আরে তোর এই অবস্থা হলো কি করে?”

ছেলেটা- আমার রাতের বেলা সুইমিং করার শখ করছিল তাই পানিতে ঝাঁপ দিয়েছি তোমাদের কোনো সমস্যা?

ছেলের মা ভ্রু কুঁচকে বলে,” তুই আমার পেটে হয়েছিস না কি আমি তোর পেটে? আমাকে ঢোপ দিতে আসবি না। কি সমস্যা হয়ে সোজা ভাবে বলবি!”

ছেলেটা রেগে বলে,”এই তোমাদের জন্য আমার মান সম্মান আজ পানিতে ফেলে দিতে পারছে ঐ বেয়াদব মেয়েটা। আমি তো মেয়েটাকে কোনোদিন ও মাফ করবো না। মানবতা বোধ বলতে কিছুই নাই।”

মা বলে,”কোন মেয়ের কথা বলছি? রিয়ানা তো ভেতরে আছে। তাহলে তোর এই অবস্থা কে করছে?”

ছেলেটা- তোমরা করছো আমার এই অবস্থা।এখন যে সম্মান টুকু আছে তা নিয়ে বাড়ি যেতে দাও নয়তো বলো বাকিটুকু আমি পানিতে ভাসিয়ে দেই।

মা-বাবা ছেলের কথার আগা মাথা না বুঝলেও বুঝতে পারছে সমস্যা আছে। তাই তারা দেড়ি না করে ছেলেকে নিয়ে বাড়ির দিকে রওনা দেয়।

(নতুন গল্প নিয়ে হাজির হলাম। আপনাদের রিসপন্সের উপর ভিত্তি করে গল্পট সামনের পর্ব লিখবো নয়তো রিমুভ দিবো।এর আগেও একটা গল্প রিমুভ দিয়েছি।
আর হ্যাঁ বলেন নায়কের পেশা কি দিব? এটা আপনারা বলবে!কোন পেশার হিরো দেখতে চাইছেন।)


‘ ”’
::::::
।।।।। চলবে????? (এটা পুরো আপনাদের উপর নির্ভর করে)

#রোদ_বৃষ্টির_প্রেম
#Nishi_khatun
#সূচনা পর্ব ০১

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here