সে_আমারঃ (আপডেট) পর্বঃ-১৯

সে_আমারঃ (আপডেট)
পর্বঃ-১৯
মোর্শেদা হাবিব!
***************
বিয়ে নিয়ে একটা অন্যরকম ফ্যান্টাসী মীরার মনে সবসময় কাজ করতো।বিয়ের কনে মানেই রাজকন্যা!যাকে ঘিরে চলে সকলের এক বিপুল উৎসব আয়োজন।
ইরা আপুর বিয়ের আগে থেকেই দেখেছে কত সব প্রস্তুতি চলছিলো তাকে ঘিরে।জগতের সেরা জিনিসগুলো বেছে বেছে জড়ো করা হয়েছিলো তার জন্যে!
বিয়ের এক সপ্তাহ আগে থেকেই ইরাপুকে পার্লারে ফেসিয়ালের জন্য নিয়ে যাওয়া হয়েছিলো!ম্যানিকিউর পেডিকিউর আরো কত কি…!বিয়ের গায়ে হলুদে ইরাপুকে টাটকা ফুলের গহনা দিয়ে সাজানো হয়েছিলো!ইরাপুর গায়ে হলুদের অনুষ্ঠানেও দেশের নামকরা ব্যান্ডের দলকে হায়ার করে আনা হলে তারা সারারাত চমৎকার সব গান গেয়ে পুরো অনুষ্ঠান মাতিয়ে রেখেছিলো।
আবার বিয়ের দিন ইরাপুকে দামী ডায়মন্ডের সেট পরানো হয়েছিলো সাথে হোয়াইট গোল্ডের আরেক প্রস্ত গহনা চড়ানো হয়েছিলো।
ছোট ছোট গোল্ড আর রুবি পাথরের কারুকাজ করা পার্পেল কালারের লেহাঙ্গাটির মূল্যই ছিলো প্রায় দেড় লক্ষ টাকা।দেশের সেরা বিউটিশিয়ান সাদেকা খানকে দিয়ে ইরাপুকে সাজানো হয়েছিলো!ইরাপুকে সেদিন চেনাই যাচ্ছিলো না!
যেন সে বোম্বের কোনো স্যুটিং স্পট থেকে পথ ভুল করে মীরাদের বাড়ী এসে পড়েছে!
সেদিনই মীরা ঠিক করে রেখেছে ও সাদেকা খানের কাছে সাজবে।তার কাছে সাজতে হলে অবশ্য এক মাস আগে থেকে এপয়েন্টমেন্ট দিয়ে রাখতে হয়!তবু মীরা অল্প সময়ের মধ্যেই তার এপয়েন্টমেন্ট পেয়ে গেছে।
মীরার এরকম আরো অনেক অনেক শখ ছিলো নিজের বিয়ে নিয়ে।মনের মত করে সাজবে।ওকে নিয়ে সবাই মাতামাতি করবে!তারপর অচিন দেশের এক রাজপুত্রের হাত ধরে পঙ্খীরাজে করে উড়ে যাবে আরেক দেশে আর সে হবে সেই রাজ্যের মহারানী।দাসদাসী চাকর নওকারের অভাব থাকবেনা!তাকে ঘিরে চলবে যাবতীয় মাঙ্গোলিক আয়োজন!
কিন্তু বিয়ের মাত্র দুসপ্তাহের মধ্যেই মীরা জেনে গেছে তার চিন্তা আর বাস্তবের মধ্যে রয়েছে এক সরু ফাটল যা চট করে সবার চোখে পড়েনা।মীরারও চোখে পড়েনি!এই অল্প কদিনেই মীরা বুঝে ফেলেছে বিয়েটা আর সবার জন্যে উৎসব হলেও দুটো মানুষের জন্য এটা সারা জীবনের ব্যপার।
কত স্বপ্ন ছিলো মীরার নিজের বাসর নিয়ে!তার নায়ক হিন্দী সিরিয়াল কিংবা সিনেমার মতো করে তাকে নিয়ে আনন্দে বিভোর হবে।তার সামনে হাঁটু গেড়ে তাকে প্রেম নিবেদন করবে।তার হাতে আংটি পড়িয়ে দিয়ে তাতে চুমু খাবে!মীরার বাসর ঘরটি ফুল আর জ্বলন্ত মোমবাতি দিয়ে সাজানো হবে।সাজানো হয়েও ছিলো।
পুরো ঘর জুড়ে ফুলের মৃদৃমন্দ সুবাস।বড় বড় জারে ভাসমান পিদিম আর নয়ওয়াটের নীল বাল্বের আবছা আলোয় মীরার ঘরটা যেন স্বপ্নপুরীর মতোই লাগছিলো।
“এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এখানে ক্লিক করুন


মীরার স্বপ্নগুলো তখনো ওর কানের কাছে ভ্রমরের গুঞ্জন তুলে ওড়াউড়ি করছিলো!ছন্দপতন ঘটেছিলো মাঝরাতেরও অনেক পরে।সেকথা মনে করলে মীরার বুকটা ভেঙ্গে দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে আসে!
এ বাড়ীতে পা দেবার পর থেকেই মীরার মনে হচ্ছিলো এবাড়ীর সবাই খুব আমুদে প্রকৃতির লোক।আর যাকে সে তার রাজপুত্র ভেবে বসে আছে সেই স্বামীপ্রবরটি তো আরো অনেক বেশী প্রানোচ্ছল।মীরার স্বামীরা তিনভাই!বড়ভাই ফ্রান্সে সেটেলড্! এ বিয়েতে তিনি আসতে পারেননি।মেজভাই সাহিল আর মীরার স্বামী নেহাল দুজনেই অস্ট্রেলিয়া সেটেলড।মীরার মেজ জা তার স্বামীর স্কুল জীবনের বন্ধু ছিলো সেই সূত্রেই এ বাড়ীতে আসা যাওয়া করতে গিয়ে নেহালের বড়ভাই অর্থাৎ মীরার মেজভাসুর সাহিলের সাথে তার আফেয়ার হয়ে যায় এবং পরে তাদের বিয়ে হয়।
এসব কথা মীরার মেজজা সীমু নিজেই মীরাকে বলেছে।আরো জানিয়েছে নেহাল আর সে খুব ফ্রি,তাদের সম্পর্ক নাকি খুবই বন্ধুত্বপূর্ণ! কিন্তু এ বাড়ীতে পা দেবার রাত থেকেই মনে হলো মীরার মেজজা সীমা আর তার স্বামী নেহালের সম্পর্কটা কেবলই বন্ধুত্বের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়।এটা অনেকটা প্লেটোনিক লাভের মতো।
এটি হলো ধরাছোঁয়া বাইরে এমন একটা ভালোবাসার মতো, যা দুজন মানুষকে পারস্পরিকভাবে কোনো সম্পর্কে বেঁধে না ফেললেও লোকচক্ষুর সামনেই এই প্রেমের খেলা বন্ধুত্বের নাম দিয়ে চলতে থাকে।
সীমু আর নেহালের সম্পর্কটা অনেকটা সেরকম।সম্পর্কে ভাবী দেবর হলেও তাদের দুষ্টুমী,আহ্লাদ আর খুনসুটি অন্য কিছুই মিন করে।
পরে অবশ্য মীরার এ ভুলটিও ভেঙ্গে যায়।আকৈশোর যে স্বপ্নপুরুষের স্বপ্ন বাসর বুকের ভেতর এতোদিন লালন করে এসেছে তা মীরার বাস্তব বাসরের শেষ প্রহরেই ভেঙ্গে চুরমার হয়ে যায়।
সে রাতে নেহাল মীরার সাথে তেমন কোনো বাক্যালাপে কালক্ষেপন করেনি বরং রাত বেশী হয়ে গিয়েছে এই অযুহাতে দ্রুত লাইট নিভিয়ে শুয়ে পড়েছে।বাধ্য হয়ে মীরাকেও সঙ্গ দিতে হয়েছে।কিন্তু মীরার চোখে ঘুম একদম ছিলোনা।যান্ত্রিকভাবেই নেহাল তাকে কাছে টেনে নেয় এবং মীরার ভেবে রাখা সুন্দর স্বপ্নগুলি তার কামোন্মাদনার চাহিদার নিচে চাপা পড়ে যায়।
মীরার স্বপ্নগুলো দীর্ঘশ্বাস হয়ে বুকের পাঁজর ভেদ করে বেরিয়ে আসে!
স্বপ্নভঙ্গের শেষ প্রহরে মীরা চুপ করে নেতিয়ে পড়ে থাকতে গিয়ে চোখটা লেগে আসে!
মিনিট বিশেক পড়েই আবার ঘুমটা ছুটে যায়!পাশ ফিরতে গিয়ে দেখে নেহাল নেই!মীরা উঠে বসে পরনের পোষাক ঠিকঠাক করে বাইরে বেরিয়ে আসে।দেশে এলে নেহালের পাশের রুমটাতেই মীরার মেজজা উঠে সবসময়!সেই রুমেই সীমুর চাপা হাসির শব্দ।উঁকি না দিতে চাইলেও মন মানে না।পায়ে পায়ে কখন সীমুর ঘরের দরজায় চলে এসেছে মীরা জানেনা।সীমুই আগে মীরাকে দেখে ফেলে, তারপর চোখের ইশারায় নেহালকে বলে যে, দেখো তোমার খোঁজে তোমার বউ চলে এসেছে।
নেহাল মুখ ফিরিয়ে তাকিয়ে হাসে!
নেহালের মাঝে কোনো অপরাধবোধ সেদিন মীরা দেখেনি বরং সে এটাকে ঘনিষ্ট বন্ধুত্বের নাম দিয়ে চালিয়ে দেবার অপচেষ্টাও করেছে।
মীরা কোনো শব্দ করেনি চুপ করে নিজের রুমে ফিরে এসে শুয়ে পড়েছে।
একটু আগে ওর শরীরে নেহালের স্পর্শগুলো যেন জ্বালা করছিলো।
একজন মানুষ একই সাথে কেমন করে দুজনের সাথে প্রতারনা করতে পারে? যা নেহাল করছে তার সাথে আর সীমু করছে সাহিলের সাথে!!
এর পর থেকে মীরা জেদ করে আর নেহালের ডাকে সাড়া দেয়নি।কিন্তু নেহাল বাঁকা হেসে বলেছে-“এতো ব্যাকডেটেড হলে বসে থাকো,আমার এতো সময় নেই তোমার মানভাঙ্গানোর!এটা মেনে নিয়েই চলতে হবে তোমাকে!বিকজ উই আর জাস্ট ফ্রেন্ড!আমাকে নিয়ে তোমার এতো
ইনসিকিওরড হবার কোনো কারন দেখিনা। আমি বাচ্চা ছেলে নই।নিজের ভালোমন্দ বুঝি।
মীরা কোনো উত্তর করেনি কারন নেহালের সাথে কথা বলার আর রুচি হয়নি ওর।মা’কে জানাতে চেয়েছিলো কিন্তু ইরাপুর সমস্যা শোনার পরে মা’কে আর নতুন করে কষ্ট দিতে মন চায়নি মীরার।তবে ঘনিষ্ট বান্ধবী নেহাকে সব বলেছে।ও কোনো সমাধান দিতে পারেনি কেবল নেহালের সমালোচনা করা ছাড়া!তাছাড়া কি সমাধান দিতে পারবে সে?
★★★
রাজ আজ বাড়ী চলে যাবে।
ওকে ডিসচার্জ করা হয়েছে।তাই পৌষী সকাল সকালই সব ব্যাগ প্যাক করে একদম গুছিয়ে ফেলেছে।
ডাক্তার রাজের সাথে হ্যান্ডশেক করার পর হাত ধরে ঝাঁকালেন-“সো….ইয়াং ম্যান।গো টু হোম এন্ড টেক আ ডিপ ব্রেথ কজ হসটপিটাল ইজ নট সো সুইটেবল ফর এনিবডি!”
রাজ মনে মনে বলেছে-“তুমি কি জানো…হাসপাতালটা আমার জন্যে কত সুইটেবল ছিলো!”
কিন্তু প্রত্যুত্তরে রাজ কেবল হাসলো!তারপর চোরাচোখে পৌষীর দিকে তাকালো।
সে বোরকা পড়ে বেরোবার জন্য তৈরী।নিকাবের আড়ালে ওর মুখোভাব বোঝা গেলোনা তবে রাজ জানে সে লজ্জায় রাঙা হয়েছে!এই মেয়েটা এতো লজ্জা পায় কেন কে জানে!তবে ওর লাজরাঙা মুখ দেখতে রাজের দারুন লাগে।
এদিকে আমজাদ পৌষীকে ফোনে জানিয়েছেন একটু পরেই তিনি গাড়ী নিয়ে আসছেন।রাজকে নিয়ে পৌষী যেন তৈরী থাকে।পৌষীও সেভাবেই তৈরী হয়ে আছে!কিন্তু রাজের মনটা একটু ভারভার।বেচারা গতরাতে একটুও ঘুমায়নি!রাজ্যের গল্প করেছে পৌষীর সাথে।নিজের স্কুল জীবন থেকে শুরু করে অদ্যাবধি সকল কথাই বলেছে পৌষীকে।পৌষীও নিজের স্কুল জীবনের কথা, পর্দা করার আগের সময়ের বিভিন্ন সমস্যাগুলোর কথা শেয়ার করেছে।কিভাবে পর্দা করা শুরু করলো এখন তার কতটা সুফল পাচ্ছে সবই বলেছে।পৌষীর কোলে মাথা রেখে রাজ সকল কথা মন দিয়ে শুনেছে।শুনতে গিয়ে দুবার রেগে উঠেছে পৌষীর সেসব সময়ের প্রেমিক পুরুষদের উপর।
অসংখ্যবার আফসোস করেছে কেন পৌষীর সাথে আগে দেখা হলোনা।
শেষরাতে ফজরের নামাজ সেরে ওরা ঘুমিয়েছে।তবে পৌষী পাশের বেডটাতে শুয়েছে।রাজও জোর করেনি!বরং সে ও চায় পৌষীর সাথে তার সংসার জীবন তার নিজের বাড়ীতে মধুচন্দ্রিমার রাতেই শুরু হবে!
আমজাদ চৌধুরী জানালেন পৌষীকে ধানমন্ডির বাড়ীতে নামিয়ে দিয়ে তারপর লেকসার্কাসে নিজেদের বাড়ীতে ফিরবেন তারা!
গাড়ীতে আমজাদ চৌধুরী ড্রাইভারের পাশে সামনে বসে পেছনে রাজ ও পৌষীকে একত্রে বসার সুযোগ করে দিলেন।রাজ সেই সুযোগে সারাটা পথ পৌষীর হাত শক্ত করে ধরে রেখেছিলো এমনকি যখন পৌষীর গন্তব্য এসে গেছে তখনো সে হাতের বাধন আলগা করছিলো না।
পৌষী রীতিমত টানাহ্যাঁচড়া করে হাত ছাড়িয়ে দ্রুত আমজাদ চৌধুরীর পেছন পেছন বাড়ীর ভেতর ঢুকে পড়েছিলো!তারপর রাজ ধীরে সুস্থে নামলো!
সেও নীড়ে ঢুকল!
ফুপি ওদের আসার সংবাদ পৌষীর মুখে আগেই শুনেছিলেন তাই তিনি রাজের পছন্দের পিঠা তৈরী করে রেখে ছিলেন!আমজাদ চৌধুরী রাজকে বললেন –
-“তুই প্রতিদিন অফিস থেকে ফেরার পথে একবার এসে তোর ফুপির খবরা খবর নিয়ে যাবি বুঝেছিস?”
রাজ মাথা নাড়লো -“জ্বী…!”
সাহেদা হাসলেন-“দাঁড়ীটা কি রেখেই দিবি এবার?”
রাজ হাত বুলিয়ে বলল-“কেন ভালো দেখাচ্ছেনা?”
পৌষী মৃদু স্বরে বলে উঠলো-“না রাখলেই বরং খারাপ দেখাবে! ”
রাজ ওর দিকে তাকিয়ে রইল!
পৌষী অস্বস্তিভরে উঠে ভেতরে চলে গেলো!এই রাজটা বড় ফাজিল।
মা বড়মামার সামনেই বারবার তাকিয়ে থাকছিলো।পৌষী বাধ্য হয়েই সরে এসেছে।
বাড়ী ফেরার পরপরই ফিন ফোন দিলো রাজ ফিরেছে কিনা জানার জন্য।তারপর জানালো সে এখন ঢাকার বাইরে আছে সামনের সপ্তাহে ফিরবে!
ফিরলে রাজের সাথে দেখা করতে আসবে।আরো জানালো সিঁথির বিয়ে হয়ে গেছে তারই এক কাজিনের সাথে।
শুনে রাজ খুব খুশি হলো।
এদিকে রাজের ফেরার পর রানী ছেলের পছন্দের খাবার দাবার তৈরী করে ছেলের সামনে দিলেন। কিন্তু ডাইনিং টেবিলে রাজকে অন্যমনস্ক দেখে কিছুটা অবাক হলেন!
-“,কি রে খাচ্ছিস না যে?মজা হয়নি?তুই শখ করিস বলে আমি নিজে রেঁধেছি , বাবুর্চিকে দেইনি রাঁধতে।”
-“না মজাই হয়েছে কিন্তু খেতে পারছিনা!ভাল্লাগছেনা!”বলে রাজ এড়িয়ে গেলো।আসলে সে গতরাতে পৌষীর হাতে মাখা ভাত খেয়েছে।সেই মুহূর্তটার কথা বারবার মনে পড়ে যাচ্ছে ওর।খাওয়া শেষে ইচ্ছে করে পৌষীর আঙ্গুলগুলো চেটেপুটে খেয়েছে।ওর প্রতিটি আঙ্গুল মুখে নেবার সময় পৌষী কেঁপে কেঁপে উঠেছে!
আহা!এই ক্ষণগুলো আবার কবে ফিরবে রাজ জানে না!মা কি পৌষীকে ফিরিয়ে আনবেন কোনোদিন?”
-“তোর বাবা উকিলের সঙ্গে কথা বলেছে বুঝলি?”রানীর কথায় রাজের ধ্যান ভাঙ্গলো!সে মায়ের দিকে তাকালো!
-“কি বললো সে?”
-“দুদিনের মধ্যে পেপারস রেডী করে ফেলবে সে! ইরা ডিভোর্স পেপারে সই করে দিলেই সে নোটিশ সিটি কর্পোরেশনে পাঠিয়ে দেবে তারপর তিনমাস পরে এটা কার্যকর হয়ে যাবে!”
-“হমমম!ইরা কোথায়?”
-“আছে নিজের ঘরে!সারাদিন মুখ কালো করে নিজের ঘরে পড়ে থাকে!”
-“ওর সাথে কথা বলেছো? ও কি ডিভোর্স দিতে রাজী না তোমার ইচ্ছেকেই ও সমর্থন জানাচ্ছে?”
-“তুই আমাকে কি ভাবিস বলতো?আমি কেন ওর ইচ্ছের বিরুদ্ধে যাবো?তাছাড়া ওর একদম ইচ্ছে নেই সে বাড়ীতে ফিরে যাবার!”
-“আচ্ছা,আমি খেয়ে ওর সাথে কথা বলবো!”
রাজ উঠে বেসিনে হাত ধুয়ে ফেললো!রানীর মনটা কিছুটা খারাপ হয়ে গেলো।তার ছেলেমেয়েরা তার উপর আস্থা রাখতে পারছেনা।বিশেষ করে রাজ।
পৌষী চলে যাবার পর থেকেই রাজ তার থেকে দুরে সরে গেছে!এটা বোঝেন রানী!তিনি পৌষীদের খুঁজে বের করতে চান কিন্তু সাহস করে রাজের বাবাকে কথাটা বলতে পারছেন না।
উপরন্ত মেয়েদের এসব সমস্যা তাকে ভারাক্রান্ত করে রেখেছে।তবু তিনি ঠিক করে রেখেছেন রাজের বাবার সাথে পৌষীর ব্যপারে কথা বলবেন!তবে কেন যেন মনে হচ্ছে ও ফিরে এলে তার সংসার আবার সুখের মুখ দেখবে।মেয়েটা বড় বরকতময় এটা সে চলে যাবার পর তিনি টের পেয়েছেন!
চলবে……

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here