Love Treatment পর্ব -২১+২২

#Love_Treatment
Part- 21
Writer- Tanzin Islam Ishika



এইভাবেই দিন যাচ্ছিল,,,, তান্নাজ নিজেকে শক্ত করে ফেলছে,,, সে যেইভাবে হক নিশমের সামনে দুর্বল হবে না,,, তান্নাজ চুপচাপ নিশমের সব কথা শুনে আর তার অত্যাচার সহ্য করে,,, আর তান্নাজ চাকরি ও ছাড়তে পারছে না কারন এই কোম্পানির সাথে তার ৫ বছরের কন্ট্রাক করা,,, যা তান্নাজ অনেক আগে থেকেই জানে,,,
আর এই কন্ট্রাকের ফায়দা উঠাচ্ছে নিশম,,, নিশম তান্নাজকে জ্বালিয়ে মারছে,,, তান্নাজকে সেই অফিসে নিয়ে আসে আর দিয়ে যায়,,, তান্নাজকে এই কাজ ওই কাজের বাহানায় নিজের কেবিনেই বসিয়ে রাখে,,,হঠাৎ করেই তান্নাজকে কিস করে দেয়,,, বা ওকে টেনে নিজের কোলে বসিয়ে দেয়,,, আবার ওকে দিয়েই নিজের সব কাজ করায়,,, নিজে একটা কাজ করতেও সে নারাজ,,, কিন্তু তান্নাজও কম কি,,, তান্নাজকে যদি কিস করে তাহলে সে ঠোঁটে কামর দিয়ে ঠোঁটের অবস্থা কাহিল করে দেয়,,, কোলে বসালে পা দিয়ে এমন বারি মারে যে বলার বাহিরে,,, কাজ করে কিন্তু উল্টো ঘুরে পুরো মুখ বেধে,,, কিন্তু যত যাই হক তান্নাজ নিশমের প্রতি দুর্বল হয় নি,,
এর মধ্যে তান্নাজ বাসায় ফোন করে বলে দিয়েছে সে বিয়ে করতে রাজি,,, তার আব্বুর নাকি তার পরিচিত এক ছেলেকে অনেক পছন্দ তাই তান্নাজ সেটা তে হে বলে দিয়েছে,,, সে এইটাও বলে দিয়েছে যত তারাতারি সম্ভব বিয়ে টা সেরে ফেলতে,,, তার বাবা ছেলের সাথে দেখা বলতে বললে সে মানা করে দেয়,, আর বলে তার বাবার পছন্দের উপর তান্নাজের বিশ্বাস আছে,,,, এইভাবে দেখতে দেখতে বিয়ের টাইম কাছে এসে পরে,,, কার্ড ছাপা হয়ে গিয়েছে,,, আর তান্নাজ তার বিয়ের কার্ড সর্বপ্রথম নিশমকে দিতে চায়,, তাই সে আজকে তার বিয়ের কার্ড নিয়ে যায় নিশমের কেবিনে,,,

তান্নাজঃ মে আই কাম ইন স্যার,

নিশমঃ ইয়েস ইয়েস কাম ইন জান,, তোমাকে আবার পারমিশিন নিতে হয় নাকি, তারাতারি আসো,,

তান্নাজঃ জি স্যার,,

নিশমঃ তা আজকে সূর্য কোন দিকে উঠসে শুনি,, আমার জান আজ নিজ থেকে আমার কেবিনে,

তান্নাজঃ স্যার আপনাকে কিছু দিতে আসছি,,, আর ছুটির জন্য আপ্লিকেশন দিতে আসছি,,,

নিশমঃ ছুটি কেন,,তা তুমি আমার সাথে আলাদা টাইম স্পেন্ড করতে চাচ্ছো,, দুষ্টু হাসি দিয়ে,,

তান্নাজঃজি না সার,,, আগামি সপ্তাহে আমার বিয়ে তার জন্য ছুটি চাচ্ছি,,, বুঝেন এই তো বউ মানুষ আগে না কি গেলি হয়,,,

নিশম বিয়ের কথা শুনে যেন আকাশ থেকে পরলো,,, সে নিজের কান কে বিশ্বাস করাত পারলো না যে তার ভালবাসার মানুষের বিয়ে,,, নিশম রেগে গিয়ে টেবিলে বারি দিয়ে বলে,,,

নিশমঃ হোয়াট দা হেল ইস দিস,, তুমি ভাল করেই জান আমি মজা একদম লাইক করি না,,, তাও তোমার সাহস কেমনে হয় এমন ফালতু মজা করার,,,

তান্নাজঃ আই এম সিরিয়াস সার,,, এই নেন আমার বিয়ের কার্ড,,,

নিশম তারতারি কার্ড টা হাতে নিয়ে দেখে সত্যি তান্নাজের বিয়ের কার্ড,, সে কার্ডটা দেখে অন্যদিকে ছুরে মারে,,, আর তান্নাজের সামনে গিয়ে ওর বাহুদর চেপে বলতে থাকে,,,

নিশমঃ তোর সাহস কিভাবে হয় অন্য কাউকে বিয়ে করার,, তুই শুধু আমার বুঝলি,,, অন্যের হওয়ার কথা মাথা থেকে ফেলে দে,,, এখন ফোন দিয়ে বল তুই এই বিয়ে করবি না বুঝলি,,,

তান্নাজঃ কেন বলবো হা,, কি হন আপনি আমার কিছুই না,,, সো এইসব ফালতু কথা অন্য কথাও গিয়ে বইল্লেন,,

নিশমঃ আমি তোর সব বুঝলি,, তুই শুধু আমার,,, তুই অন্য কাউরো হইতে পারস না,,, একবার তোকে হারাইসি আর না,,, এইবার দেখ তুই আমি কি করি,,,

তান্নাজঃ ভুলেও যদি উল্টো পাল্টো কিছু করেন তাহলে খবর আসে,,,

নিশমঃ তাই নাকি,,, আচ্ছা দেখা জাক,,

নিশম তান্নাজকে ছেড়ে গিয়ে কার্ড টা উঠিয়ে নিজের চেয়ারে গিয়ে বসে তারপর কার্ড টা অনেক মনযোগ সহ কারে পরে,,, তারপর একটা বাকা হাসি দিয়ে বলে,,,

নিশমঃ চিন্তা কর না,, আমি কিছুই করব না,, আর তোমার বিয়ে তে আমি আসব না এমন কি হয়,, আমি ও দেখি আমি ছাড়া তোমার বিয়ে কিভাবে হয়,,, আমি না গেলে যে তোমার বিয়ে হবে না,,,

তান্নাজঃ হুহ মানে,,,

নিশমঃ তা কিছু না,, বাই দা ওয়ে আপনার ছুটি এক্সেপ্ট করা হল,, ইউ মে কেন লিভ নাও,,,

তান্নাজ আগা মাথা কিছুই বুঝলো না,,, হঠাৎ নিশনের এমন বিভিয়ার চেঞ্জ হলো কিভাবে,,, আর কি সব এই বা বললো,,, তান্নাজের মনে এক অজানা ভয় বাস করতে থাকে,,, সে আর কিছু না ভেবে খুলনা চলে যায়,,, সবাই এইদিক ওই দিক দৌড়াচ্ছে,,, কেউ অইটা করছে তহ অন্যরা এইটা,,, বাড়ির একমাত্র মেয়ে বলে কথা,,, সব দিকে হৈ চৈ,,, শুধু তান্নাজেরই মন ভাল না,,, সে যত যাই বলুক যে সে নিশমকে ঘৃণা করে,,, কিন্তু এখন হৃদয়ের এক কোনে সেই আছে,,, কিন্তু কিছু করার নেই,, বাবা মার দিকে চেয়ে তাকে হ্যাপি থাকতেই হবে,,, এইভাবে এসে পরে বিয়ের দিন,, আজ তান্নাজকে অনেক বেশি সুন্দর লাগছে,,, লাল লেংগা,,, সাথে হেভি মেকাপ,, হাত ভরতি লাল চুড়ি,,, এক সাইডে খোপা করা,, আর ঘুমটা দেয়া,,, সাথে হেভি অরনামেন্টস,,, একদম পরীর মত লাগছে,,,
যে আজ তান্নাজকে দেখবে সেই ঘায়েল হয়ে যাবে,,, তান্নাজকে স্টেজে নিয়ে যাওয়া হয়,,, তান্নাজের মা বাবা এসে তার মেয়েকে দেখে কান্না চেপে রাখতে পারি নি,,, তান্নাজও তার মা বাবার সাথে কেদে দেয়,
তান্নাজ স্টেজে বসে আসে কিন্তু বর যাত্রি আসার নাম গন্ধ নেই,,, কিন্তু এর মাঝে নিশম তার ফেমিলি নিয়ে হাজির,,, নিশমের মুখে এক রহস্যময় হাসি,,, নিশম একটা ফুলের তোড়া নিয়ে তান্নাজ দিকে এগিয়ে যায়,,, আর ফুলের তোড়াটা তান্নাজ সামনে দিয়ে ওর কানে ফিস ফিসিয়ে বলে,,,

নিশমঃ ইউ আর লুকিং গোরজিয়াস মিসেস. খান,,,
তান্নাজ বড় বড় চোখ করে নিশমের দিকে তাকায়,,, নিশমের মুখে এখনও সেই হাসি,,, নিশম তা দেখে বলে,,,

নিশমঃ উফফফ জান এইভাবে তাকিও না,, তোমার এই লুকেই তহ আমি ঘায়েল হয়ে যাচ্ছি,, আবার তোমার এই চাহনি,,, আমাকে কি পাগল করার প্লেন করেছো,,,

তান্নাজঃ আপনি আসছেন তাই খুশি হলাম,, প্লিজ হেভ আ সিট,,, আর খাবার খেয়ে যাবেন কেমন,,,

নিশমঃ হুম তা তহ খাবই,, আফটার অল আমার জানের বিয়ের খাবার আমি কি করে না খাই,,, আজ তহ আমি হাতের কব্জি ডুবিয়ে খাব,,
এই বলে নিশম সরে যায়,,, তান্নাজ বুঝতাসে না নিশম এত চুপ চাপ কেন,,, নিশম গিয়ে নিজের সিটে বসল,, আর তান্নাজের দিকে তাকিয়ে রইলো,,, এইদিকে বর আসার নাম নাই,,, সবাই কানা ঘুষা করা শুরু করে দিয়েছে,,, আর এইদিকে তান্নাজের বাবার বিপি হাই হয়ে গেসে,,, তার বাবা বার বার বর যাত্রীদের নাম্বারে ফোন করছে কিন্তু কেউ ধরছে না,,, শেষ পর্যন্ত ফোন ধরলো,, আর জানতে পারলো যেমন বর নাকি তার প্রেমিকার সাথে পালিয়ে চলে গেছে,,, কথা টা সবার মাঝে ছড়িয়ে যায়,,, তান্নাজ এই সব শুনে স্তব্ধ হয়ে যায়,, কি করবে কিছু বুঝতে পারছে না,,, সবাই বলাবলি শুরু করেছে যে কে এখন তান্নাজকে বিয়ে করবে,,, বিয়ের আসরে জামাই নেই,এমন মেয়েকে কেউ বিয়ে করবেও কিনা এইসব নিয়ে কথা হচ্ছে,,, তখন নিশম গিয়ে তান্নাজেত বাবার সামনে এসে দারায় আর বলে,,,

নিশমঃ আংকেল আমি আপনার মেয়েকে বিয়ে করতে চাই,,,

তান্নাজের বাবাঃ কিন্তু বাবা তুমি কে,, আর কেনই বা আমার মেয়েকে বিয়ে করতে চাও,,

নিশমঃ তান্নাজ যে কোম্পানিতে চাকরি করে সেইটা আমারেই অফিস,,,মানে আমি ওর বস,, আমি এমনেতেও তান্নাজকে পছন্দ করি।কিন্তু ওর বিয়ে ঠিক হয়ে যাওয়ায় চুপ হয়ে থাকি এখন যখন বিয়ে হচ্ছে না তাই আমি এই বিয়ে করতে চাই যদি আপনার কোন আপত্তি না থাকে,,,

তান্নাজের বাবাঃ কিন্তু তোমার পরিবার কি মানবে,,,

নিশমঃ আমার পরিবার সবাই এখানেই আছে,,,
তারপর সে তার মাকে ইশারায় আসতে বলে,,,
নিশমের মা কাছে বলে,,,
নিশমের মাঃ জ্বী ভাই আমার কোন আপত্তি নেই,, এমন চাঁদেরটুকরো মেয়ে যদি আমার বাসার বউ হয় তাহলে আমার আর কিছুই দরকার নেই, আমি তহ আমার ছেলের জন্য এমন একটা মিষ্টি বউমা চাই।

নিশুঃ হা মা ঠিক বলেছো আমি এমনই একটা মিষ্টি ভাবি চাই,

তান্নাজের বাবাঃ আপনারা সবাই যখন রাজি তাহলে আমি আর কি বলতে পারি।

তখন তান্নাজ বলে উঠে আমি এই বিয়ে তে রাজি না।

নিশমঃ আংকেল আপনি যদি কিছু মনে না করেন তাহলে আমি তান্নাজের সাথে কিছু কথা বলতে চাই,

তান্নাজের বাবাঃ হা বাবা যাও ওই পাশের রুমে গিয়ে কথা বলে নাও,,,
তারপর নিশমের হাত ধরে পাশের রুমে নিয়ে যায়,,, তারপর গেট আটকিয়ে কিছু বলার আগেই তান্নাজ বলে উঠে,,

তান্নাজঃ এইসব তোমার কাজ তাই না,,, কি করেছ তুমি,,,

নিশমঃ বাহ জান,,, তুমি আমাকে এত ভাল বুঝ আগে তহ জানতাম না,,, হা তুমি ঠিকই ধরেছো,, আমি এই করেছি সব,,, ওই ছেলের সাহস কিভাবে হয় তোমাকে বিয়ে করার তাই আমি ওকে আমি ওর বাসা থেকেই কিডনেপ করে ফেলেছি,, আর সাথে একটা নোট রেখে আসছি যে সে পালিয়ে গেছে,ডেবিল স্মাইল দিয়ে,,

তান্নাজঃ ছি তুমি এতটা নিচে নামতে পারলে,, অবশ্য তোমার মত মানুষ করতেই কিবা পারে,,,

নিশমঃ এখন এত কথা না বলে নিজেকে প্রস্তুত করে নাও,,, কারন কিছুখন পরই তুমি মিসেস নিশম খান হতে চলেছো,,,

তান্নাজঃ আমি মরলেও তোমাকে বিয়ে করবো না,,,

নিশমঃ তুমি নিজের কথা না ভাব কিন্তু তোমার মা বাবার কথা তহ একবার ভাব,,,তুমি যদি আজ এই বিয়ে না করো তাহলে জান এর পরিনতি কি হবে,,, সমাজে তুমি কলংকিত হবে,,, তোমার বাবা মা মাথা উঁচু করে চলতে পারবে না,,, সব জায়গায় তাদেরকে এইসব কথা শুনতে হবে শুধু মাত্র তোমার জন্য,,, তার উপর তোমার বাবার বিপি হাই,,, কখন কি হয় বলা যায় না,,, যদি এইসব সহ্য না করতে পারে,,, তখন কি করবে তুমি,,, নিজের জিদের বসে নিজের বাবা মাকে কষ্ট দিবে,,, এখন তুমি কি করবে তা তুমিই ভাল বুঝ,,,
এই বলে নিশম চলে যায় আর তান্নাজ ধব করে মাটিতে বসে পরে,,, সে বুঝতেসে না সে কি করবে,,, সে যে এখন বড় অসহায়,,,

কিছুখন পর তান্নাজ বেরিয়ে আসে আর বলে সে এই বিয়ে তে রাজি,,, তখন নিশমের মুখে ছিল সেই বিশ্ব জয়ের হাসি,,, দেখতে দেখতে বিয়েটা হয়ে যায়,,, যখন বিদায়ের পালা তখন তান্নাজ তার বাবা মাকে ধরে ইচ্ছা মত কাদে,,, যেন তার কান্না বাধ এই মানছে না,,, তারপর নিশম তান্নাজকে ধরে গাড়িতে বসায়,, গাড়িতে বসিয়ে সবার থেকে বিদায় নিয়ে তারা চলে যায়,,,
।#Love_Treatment
Part- 22
Writer- Tanzin Islam Ishika


সবার থেকে বিদায় নিয়ে তারা চলে যায়,,,
তান্নাজ নিজের কান্না অফ করে নিজেকে শক্ত করার বৃথা চেষ্টা করছে,,, তখন নিশম তান্নাজের কোমড় জরিয়ে ধরে নিজের সাথে মিশিয়ে নেয়,,, আর তান্নাজের কানের সামনে এসে ফিসফিসিয়ে বলে,

নিশমঃ বি রেডি জান,, আজ কিন্তু আমাদের বাসর রাত,,, আমার তহ তোমাকে দেখে আর সইছে না,,, কখন যে তোমাকে নিজের কাছে পাব,, এইবার তোমাকে চিরকালের জন্য আপন করে ফেলব,, তারপর তুমি চাইলেও আমার থেকে দুরে যেতে পারবে না,,,

তান্নাজ নিজেকে এক জাটকায় ছারিয়ে বলে

তান্নাজঃ ভুলেও তুমি আমাকে ছুবেন না,, নাইলে খুন করে ফেলবো,,

নিশমঃ তুমি তোমার প্রেমে সেই কবেই আমাকে খুন করে ফেলছ আর কি খুন করবে,,, আর তোমাকে ছুয়ার পূর্ণ অধিকার আছে আমার,,, তুমি ইসলামের সরিয়াত অনুযায়ী আমার সদ্য বিয়ে করা বউ,,, তোমার উপর এখন আমার পূর্ণ অধিকার আছে,,, আমি যা চাই তাই করতে পারি তোমার সাথে,,, এখন কেউ আমাকে কোন বাধা দিবে না,,, সো এত কথা না বলে আজকের রাতের জন্য রেডি থেক,,,

তান্নাজ আর কিছু বলতে পারে না,, কারন নিশমের কথা ঠিক,,, সে তার স্বামী,, আমার উপর তার পূর্ণ অধিকার আছে,,, কিছুখনের মধ্যেই তারা বাসায় এসে,পরে,,, নিশমের মা তাকে বরন করে নেই তারপর তারা ভিতরে ঢুকে,,, তান্নাজকে নিশমের রুমে বসানো হয়,, খুব কম সময়ের মধ্যে রুমটা অনেক সুন্দর করে সাজানো হয়েছে,, সে খাটের এক কোনে বসে আছে,, কিছুখন পরেই নিশম আসে,,,
এর পরের ঘটনা সবাই জানে,,, যদি কাউ ভুলে গিয়ে থাকেন তাহলে একটু কষ্ট করে ফাস্ট পার্টটা পরে আসেন,,,,
অতীত শেষ এখন বর্তমানে ফিরে আসি,,,

বর্তমান,,,,
তান্নাজ এইসব ভাবতে ভাবতে যে কখন ঢাকায় এসে পৌছে গেছে সেই দিকে তার কোন খেয়াল এই নেই,,, নিশম এক পলকে তান্নাজের দিকে তাকিয়ে ছিল,,, নিশম যেন এক ঘোর কাজ করছে,,, অতঃপর নিজেকে সামলিয়ে তান্নাজকে ডাক দেয়,,,

নিশমঃ জান এত বিভরে হয়ে কার কথা ভাবছো শুনি,,, নিশ্চয়ই আমার কথা ভাবছো বুঝি,,,

নিশমের কথায় তান্নাজের ধ্যান ভাংগে,,, তারপর চারপাশে খেয়াল করে দেখে অনেক বড় একটা আপার্টমেন্টের সামনে গাড়ি এসে থেমেছে,,,
তান্নাজ নিজেকে সামলিয়ে বলে,,

তান্নাজঃ আমার তহ বয়ে গেসে যে তোমার কথা ভাবতে যাব,,, আমার আরও কাজ আছে এ ছাড়া,,।

নিশমঃ তাই বুঝি,,

তান্নাজঃ জি হা তাই,,৷ এখন কি গাড়িতেই বসে থাকবো নাকি,,

নিশমঃ না তা কেন হবে,, চল ভিতরে যাই,,

তারপর নিশম গাড়ি থেকে নেমে তাদের সব লাগেজ নামায়,, তারপর দারাওয়ান কে বলে যাতে সে এইগুলো উপরে পাঠিয়ে দেয়,,, এই বলে নিশম তান্নাজকে নিয়ে লিফটে উঠে,,, লিফটের ১৫ নম্বরে টিপ দেয়,,, তান্নাজ অবাক চোখে নিশমের দিকে তাকিয়ে থাকে,, নিশম তান্নাজের দৃষ্টি বুঝে বলে,,,

নিশমঃ আমার শহরের কৌলাহল এত ভাল লাগে না,, তাই এত উপরে বাসা নিয়েছি,,, আর আগে এই বাসায় আমার বাবা মানে তোমার শ্বশুরই থাকতো,,, আমি প্রায়ই আসতাম বলে এই উপরে বাসা নেয়া হয়েছে,,

তান্নাজ আর কিছু জিজ্ঞেস করলো না,,, কিছুখন পরই লিফট খুলে গেল,,, তান্নাজ আশে পাশে তাকিয়ে দেখে এইখানে শুধু তাদেরই ফ্লাটটা আছে,, এর বাদে কোন ফ্লাট নেই,,, তান্নাজ নিশমের দিকে তাকিয়ে বলে,,,

তান্নাজঃ এইখানে আর কোন ফ্লাট নেই কেন,,,

নিশমঃ বাবা এই ফ্লাট আমাদের সবার জন্য বড় করে বানাতে বলেছিলেন,,, কিন্তু আমার আর নিশুর পড়াশোনার জন্য এইখানে আসা হয়ে উঠে নি,, বাট মাঝে মাঝে আসতাম,, আর একদিক দিয়ে ভালই হয়েছে আমাদের কেউ ডিস্টার্ব করবে না,, দুষ্টু হাসি দিয়ে,,,

তান্নাজঃ যতসব,,,

নিশমঃ এইভাবে বল না জান বুকে লাগে তহ,,, বুকে হাত দিয়ে,,,

তান্নাজ কিছু না বলে ভেংচি কেটে অন্যদিকে মুখ করে দাড়িয়ে থাকে,,, নিশম দরজা খুলে দিতেই তান্নাজ হন হন করে ঢুকে যায়,,, তান্নাজ ভিতরে গিয়ে হা হয়ে তাকিয়ে থাকে,,, বাসাটা এত সুন্দর,,, সব কিছুই সুন্দর ভাবে গুচগাচ করা,,, একদম পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন,,, ফ্লাটে ৪ রুম,, মাঝে অনেক বড় ডাইনিং,,, পাশেই অনেক বড় বারান্দা,, তান্নাজ বারান্দায় যায়,, গিয়ে দেখে বিভিন্ন ধরনের ফুল,, তার মধ্যে দুইটা গাছে তার চোখ আটকে যায়,,, ব্লু রোজ গাছের উপর আর তার পাশেই সাথে ব্লেক রোজ গাছের উপর,,, তান্নাজের দুইটাই অনেক ফেভারিট,, তার বাসায়ও ব্লু রোজ আছে বাট ব্লেকটা অনেক রেয়ার তাই সে খুজে পায় নি,,, তান্নাজ সেই ফুল গুলো দেখতে ব্যস্ত,, এর মধ্যেই তাদের বেগ গুলো এসে পরে,, নিশম সেগুলো রুমে রেখে তান্নাজকে খুজতে থাকে,,, তার বারান্দায় গিয়ে দেখে সে ফুলগুলো নেড়ে চেড়ে দেখছে,,, নিশম নিজ হাতেই এই গাছ গুলো লাগিয়েছিল,,, নিশম আনমনে তান্নাজকে দেখছে,,, তারপর তান্নাজের পিছনে গিয়ে তাকে জরিয়ে ধরে,,, তান্নাজ ভয়ে কেপে উঠে,,, পিছনে ঘুরে তাকিয়ে দেখে নিশম,, তাই সে নিশমকে ছারিয়ে বলে,,

তান্নাজঃ আমি ফ্রেশ হয়ে আসি,,
এই বলে তান্নাজ চলে যেতে নিলে নিশম ওর হাত ধরে টান দেয়,,,

নিশমঃ কেন পালিয়ে বেড়াও আমার থেকে,,, আমার ভালবাসা কি তোমার চোখে পরে না,,, আমি যে আমার সেই আগের তান্নাজকে চাই,,, প্লিজ ফিরিয়ে দিবে তাকে,,, আমি না ওর ছাড়া থাকতে পারছি না,,,

নিশমের কথায় তান্নাজের বুকে মোচড় দিয়ে উঠে,, তান্নাজের মনে যেন উথলপাথল শুরু হয়ে গিয়েছে,,, সেও চায় নিশমকে আপন করতে কিন্তু সে যে তার দেওয়া আঘাত কিছুতেই ভুলতে পারছে না,,, বার বার সেই ভিডিও ও ছবিগুলো তার চোখের সামনে ভাসছে,,, সে চেয়েও মানতে পারছে না যে নিশম তাকে ভালবাসে,,, তান্নাজ নিজের হাত ছাড়িয়ে বলে,,,

তান্নাজঃ আর কত নাটক করবে,,, আর সহ্য হয় না তোমার এই ভালবাসার নাটক,,, আর তুমি নিজের হাতেই আগের তান্নাজকে মেরে ফেলছো,, সে এখন চাইলেও আগের মত হতে পারবে না,, যেই তান্নাজকে তুমি চিনতে সে এখন মৃত,,,
এই বলে তান্নাজ ওইখান থেকে চলে যায়,,, তার চোখে যে পানি চিকচিক করছে তা নিশমের চোখ এড়াই নি,,

নিশমঃ তুমি যাই বল জান তুমি যে আমায় ভালবাস তা আমি জানি,, আর তোমাকে আমি আগের মত করেই ছাড়বো,,, আমি জানি আমি ভুল করেছি,,তার শাস্তিও হারে হারে পেয়েছি,,, তোমাকে যদি এইসব আমি আগেই বলতাম তাহলে এইসব কিছুই হত না,, কি করব বল তোমাকে হারানোর ভয় যে জাকরে ধরেছিল আমায়,, তাই না চাওয়া সত্তেও সব গোপন করি,,, কিন্তু এখন তোমাকে আর কোন কষ্ট দিব না,, আই প্রমিস,,,

তারপর নিশম ও গিয়ে ফ্রেশ হয়ে আসে,, তারপর নিশম বাইরে থেকে খাবার অর্ডার করে,,, কিছুখনের মধ্যে তা আসলে তান্নাজ আর নিশম খেয়ে নেয়,,, তান্নাজ নিজের বেড রুমে গিয়ে অবাক,, দেয়ালে তার অনেক বড় একটা ছবি আর তার আশেপাশে আরও কিছু ছবি আছে,,, তান্নাজ অবাক চোখে দেখছে কারন সে জানে না এইটি সে কখন তুলেছে,,, এইগুলি সেই পিকনিকের ছবি,, যেগুলো নিশম তুলেছিল তান্নাজের অজানতে,,,
তান্নাজ এইটি দেখে এক ভালো লাগা কাজ করছে কিন্তু তা প্রকাশ করছে না,,, তান্নাজ চুপচাপ গিয়ে শুয়ে পরে আর নিশম তার কাজে বসে পরে,,, এইভাবে বিকেল পেরিয়ে সন্ধ্যা হয়ে যায়,,, তান্নাজ এতখুন ঘুমে ছিল ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে সে নিশমকে খুজতে থাকে কেন খুজতাসে সে নিজেও জানে না,,, ডাইনিং এ এসে দেখে নিশম কাজ করছে সে,, তাকে দেখে এক স্বস্তির নিশ্বাস নেয়,,আর কিছু না বলে রান্না ঘরে গিয়ে চা বানায়,, তারপর নিশমের সামনে গিয়ে ধরে,,,নিশম কাজে এতই বিভর ছিল যে সে খেয়াল করেনি,, তান্নাজ তাই একটু কেশে উঠে,, নিশম তা খেয়াল করে আর উপরে তাকিয়ে দেখে তান্নাজ হাতে চা নিয়ে দারিয়ে আছে,,, নিশম তা দেখে একটা মুচকি হাসি দিয়ে চা টা নেয় ল্যাপটপ পাশে রাখে,, তান্নাজ যেতে নিলে তান্নাজকে টান দিয়ে নিজের কোলে বসিয়ে দেয়,,, তারপর চায়ে চুমুক দিয়ে বলে

নিশমঃ জান তুমি কি ইচ্ছে করে চায়ে মিষ্টি দাও না নাকি,,, তোমার চা কোন সময় মিষ্টি হয় না কেন,,,

তান্নাজঃ এখন তোমার যে এত তেতো,, তা কি আর আমি জানি,, এখন এই তেতো মুখে চা মিষ্টি না হলে আমি করবো

নিশমঃ তুমি চাইলেই চা মিষ্টি হতে পারে,,,

তান্নাজঃ কিভাবে,,

নিশমঃ এখন চায়ে চুমুক দাও,,,

তান্নাজ কিছু বলতে যাবে তার আগে নিশম বলে,,,

নিশমঃ যা বলসি তাই কর,, কোন কথা না,, নাইলে তুমি যান আমি আর কি করতে পারি,
তান্নাজকে আরও শক্ত করে ধরে,,
তান্নাজ কিছু না বলে চায়ে চুমুক দেয় তারপর নিশম কে দেয়,,, নিশম চা খেয়ে বলে

নিশমঃ এই না হইসে মিষ্টি,, প্রতিবার আমাকে চা দেওয়ার আগে তুমি আমার সামনে চায়ে চুমুক দিবা বুঝছো,,,
তান্নাজ কিছু না বলে চুপ থাকে,, তা দেখে নিশম বলে,,,

নিশমঃ আর হা কালকে সকালে কিন্তু রেডি থেকো,,

তান্নাজঃ কেনো,,,

নিশমঃ অফিস যেতে হবে তহ,,

তান্নাজঃ মানে কি,,, তুমি নতুন বউকে বলছো অফিস যেতে,,,

নিশমঃ ওওও তাই তো তুমি নতুন বউ,, , তাহলে তহ আজে ফরজ কাজটা সেরে ফেলি কি বলো,, আগে আমাদের হানিমুনটাই করে ফেলা দরকার,, তাইলে তহ নতুন বউয়ের ভাব টা কাটবে,, তাই না,,

তান্নাজঃ কে বলসে আমি নতুন বউ,, আমার বিয়ের তহ ১ সপ্তাহ হয়ে গেসে এখন কি আর আমি নতুন বউ নাকি,,, আমি কালকে সকালে রেডি থাকব,,,
এই বলে তান্নাজ উঠে দৌড়,, আর নিশম মিটিমিটি হাসছে,,

নিশমঃ কি করব জান তোমাকে যে এক মূহুর্তের জন্য নিজের থেকে আলাদা করতে চাই না,, তাই তোমাকে আমার সাথে নিয়ে যাচ্ছি,, আর যেহেতু তুমি আমার পিএ,,, তুমি না চাওয়া সত্তেও আমার সাথে তোমাকে থাকতে হবে,,,
এই নিশমও তার কাজে মন দেয়,,


চলবে,,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here