My vampire lover comes again part 6+7

#My vampire lover comes again

#এসেছি ফিরে তোমারই ডার্ক প্রিন্স

#লেখিকা_তামান্না
#পার্ট_06

ইরিন বাসায় এসে তাড়াতাড়ি দরজা খুলে ভেতরে ঢুকে পড়ে। ঢুকে ফ্রেশ হয়ে খাবার খেয়ে বেডে শুইতেই তার চোখ লেগে যায়।

প্রায় মধ্যরাতের দিকে এক ছায়া তার রুমের জানালার সামনে এসে দাঁড়ায়। জানালার লকের দিকে তাকিয়ে নিজের চোখজোড়া বন্ধ করলো। নিজের ঠোঁটজোড়া নাড়িয়ে কি যেনো পড়লো। সাথে সাথে লকটা খুলে গেলো।

সে ভেতরে ডুকে জানালা বন্ধ করে দেয়। ইরিনের পাশে এসে তার মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে থাকে আর ঠোঁটজোড়া নাড়াতে থাকে।

হঠাৎ ঘুমের দেশে ইরিন স্বপ্নের জগতে বেরঙিন রুপময় দৃশ্য দেখছিলো। আচমকা সব অন্ধকারে মিলিয়ে যায়। সে দেখতে পাই তার সেই পুরোনো এতিমের ঘরটি । সে বেডের উপর বসে ড্রয়িং করছিলো।

তার আশেপাশে কেউ ছিলো না। শুধুই সে ছিলো আর তীব্র রোদের রশ্নি। ইরিন ঘেমে একাকার হয়েও কাগজে কিছু অজানা অচেনা দেখতে একদম আজব ধরনের ভয়ানক মানুষের প্রতিচ্ছবি ড্রয়িং করছিলো।

ইরিন ড্রয়িং করা স্টোপ করে চোখ খুলে আশেপাশে তাকিয়ে দেখে কেউ নেই। মুখ ঘুরিয়ে কাগজের দিকে তাকাতেই ভয়ে চুপসে যায়। সে কাঁপা কাঁপা হাতে কাগজগুলো উঠিয়ে দেখে কিছু মানুষ দেখতে অজ্রস বিশ্রি ধরনের। একজনের চোখগুলো লাল আরেকজনের বড় বড় দাত তো অন্যটার মুখে নাকই নেই সব দেখতে ভয়ানক।

অচেনা লোকটা নিজের হাত ততোই বুলিয়ে যাচ্ছে যতোই মেয়েটা নিজের রহস্যের গভীরে যাচ্ছে। তবে সে লক্ষ্য করলো তার হাতের শক্তি ফুরিয়ে যাচ্ছে সাথে তার আসল রুপ বেরিয়ে আসতেছে। কিন্তু কেনো তা সে বুঝতে পারছে না। এতে সে আশেপাশে তাকিয়ে দেখতে লাগলো আর মনে মনে বলে….

অচেনা—“এমন কি হাজির হলো যার কারণে আমার শক্তি কমে যাচ্ছে। কিছু একটা তো এখানে…পাশে তাকিয়ে দেখে ঘরের দরজার কোণায় কিছু রসুন বাটিতে রাখা তার নিচে মোম জ্বালানো।

সে বুঝতে পারলো রসুন জ্বলছে এরই গন্ধ তার শরীরের শক্তি কমিয়ে দিচ্ছে।

ইরিন খেয়াল করলো সব ছবিগুলো মধ্যে সে একজোড়া ছবি ড্রয়িং করলো যেটার মধ্যে দুইজন লোক একে অপরকে জড়িয়ে আছে। সে ঐ ছবিটা হাতে নিয়ে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখে একজন সুদর্শন পুরুষ এক মেয়েকে নিজের বুকের মাঝে আগলে রেখেছে যার কারণে মেয়েটার ফেস দেখা যাচ্ছে না।

ইরিন ছেলেটাকে ঘোরভাবে দেখবে তার আগেই….

অচেনা নিজের হাত সরিয়ে ঠোঁট নাড়িয়ে অদৃশ্য হয়ে পাড়ি দেই নিজের গন্তব্যের দিকে।

ইরিন হুট করে উঠে বসে পড়লো। সে নিজেকে দেখে অবাক হয়ে বেকুবের মতো বলে।

—“আমি ঘেমে গেলাম কোন দুঃখে? সে পাশে তাকিয়ে দেখে এসি অফ। বাহ বাহ আজকাল ভুলে যাওয়ার রোগেও দেখি আক্রান্ত হয়ে গেলাম। না জানি কোন দিন পাবনার পাগলীখানায় যায়। ওও না সরি পাবনায় কি করে যাবো থাকি তো লন্ডনে(কপালে বারি মেরে)

সে পানি খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ে।

________________

রেনা নিজের রুমে যাচ্ছিলো হঠাৎ সে সিরাতের রুম থেকে চিৎকার এর আওয়াজ শুনতে পাই। সে উৎজিত হয়ে তার ভাইয়ের রুমের দিকে এগিয়ে যায়।

সিরাত নিজেকে আয়নার মধ্যে অন্যরকম দেখতে পাই। তার হাতের নখ একবার বড় হয় তো আরেকবার ছোট। তার মুখের মধ্যে ঠোঁটের আলগা করে বড় দুই দাঁত বেরিয়ে আসছে। হঠাৎ দরজায় নক করার আওয়াজ পেয়ে সিরাত নিজের গায়ে কম্বল জড়িয়ে উচ্চ গলায় বলে।

—” কে কে দরজার বাইরে?

—“ভাইয়া আমি রেনা বলছি!( দরজার বাইরে দাঁড়িয়ে বলে)

সিরাত রেগে দরজার খুলে ফেলে। রেনা চোখজোড়া বড় বড় করে তার ভাইয়ের দিকে তাকায়। সিরাত রেনার এভাবে তাকানোর মানে টা হজম না হওয়ায় নিজের দিকে তাকিয়ে দেখে সে শার্ট-গেঞ্জি না পড়ে একটা লুঙ্গি পড়ে আছে সাথে গায়ের মধ্যে কম্বল জড়ানো।

রেনা সিরাতের নিউ লুক স্টাইল দেখে জোরে জোরে হাসতে থাকে আর বলে—“ভাই দেশে কবে গিয়েছিস? দেশের মানুষদের মতো লুঙ্গি পড়া স্টাট করে দিলি কবে থেকে? পেটে হাত রেখে হাসতে থাকে।

সিরাত রেগে রেনার কান ধরে মুচড়ে দেয়। রেনা তো ব্যথায় আম্মুউউউউউউউউউ ডাক দিতে থাকে।

সিরাত তাও না ছেড়ে বলে—“স্টুপিড গার্ল নিজের ভাইয়ের সাথে কেউ এভাবে কথা বলে হুমম? টেডি স্মাইল দিয়ে।

রেনা নিজের কান ছাড়ানোর চেষ্টা করে ঠোঁট বাঁকিয়ে বলে—“তুই ডাফফার স্টুপিড বেয়াদব ছেলে উহহ।

সিরাত আরো জোরে দেবে ভাবে কিন্তু সে দেখে তার নখ আবারো বড় হওয়ার চেষ্টা করতেছে এমন কি তার প্রচুর পরিমাণ পিপাসা ক্ষিদা লাগতে শুরু করে। সে রেনাকে ছেড়ে তার বাহুজোড়া ধরে বলে—“বোন আমার…আমার জন্যে খাবার নিয়ে আয় এখনই প্লিজ(হাঁপাতে হাঁপাতে)

রেনা সিরাতের অবস্থা দেখে আন্দাজ করে নিজের মাথা নাড়িয়ে কিচেনের দিকে যায়। সে প্লেটের মধ্যে কিছু খাবার ঢেলে সিরাতের রুমে এসে দরজায় নক করার আগেই সিরাত দরজা খুলে রেনার দিকে একনজর তাকালো। নিজের দাঁত কেলিয়ে ট্রেটা ছুঁ মেরে নিয়ে ভেতরে ডুকে দরজা লাগিয়ে দেয়।

রেনা নিজের রুমে এসে বেডের উপর বসে লেপটপ ওপেন করে সিরাত এর রুমের সিসিটিভি ফুটেজ অন করলো। সে দেখে সিরাত খাবারগুলো খুব বিশ্রি নোংরা করে তড়িঘড়ি করে খেয়ে যাচ্ছে। ফ্লোরে সব খাবারের কিছু কিছু টুকরা পড়ে রুমটা নোংরা হয়ে গেলো। সিরাত খেতে খেতেই হঠাৎ নিজের জ্ঞান হারিয়ে নেতিয়ে পড়ে বেডের উপর। ঘুমের গভীরে চলে গেলো।

রেনা দেখে এক শুকনো ঢোক গিলে বলে—“আইম রিয়েলি সরি ভাইয়া। তোমার খাবারে ঘুমের ওষুধ মিলিয়ে খেতে দিলাম। যেটাই হোক তুমি নিশ্চিতভাবে ঘুমিয়ে পড়েছো। এবার আমি আমার কাজ শুরু করতে পারবো (বাকাঁ হেসে)

রেনা উঠে আয়নার সামনে এসে নিজের ঠোঁটজোড়া নাড়িয়ে বলে—“আব্বু আম্মু কোথায় তোমরা? ভাইয়ের আসল রুপ বের হওয়ার দিন চলে আসতেছে। আর মাএ তিনদিন। তারপর ভাইয়া ভয়ানক পিশাচে পরিণত হবে। কিন্তু এরকম হওয়ার হাত থেকে বাঁচার উপায় শুধু তোমরাই দিতে পারবে।

রেনা বলা কথাগুলো তাদের বাবা-মা দুইজনই চোখ বন্ধ করে শুনতে পায়। রেনা নিজেকে একবার দেখে বেডে এসে শুয়ে পড়ে।

তফাজল আর ইয়াসমিন মিলে ভাবতে লাগে কি করবে?

তফাজল নিজের চোখ এর জল মুছে ইয়াসমিন এর দিকে তাকিয়ে বলে—“সিরাতকে মেরে…..

বাকিটুকু বলার আগেই মিসেস ইয়াসমিন বুঝতে পেরে ফুঁফিয়ে কান্না করে করে বলে—“না আমাদের ছেলের কিছু হবে না। সে পিশাচের রুপে পরিণত হবে না আমি জানি।(হাসার ট্রাই করে)

তাদের বাবা তফাজল নিজের মাথা দুই হাত দিয়ে চেপে ধরে। মিসেস ইয়াসমিন কান্না করছিলেন হঠাৎ উনার কি যেনো মনে পড়ে যায়। উনি নিজের চোখ মুখ মুছে বেড থেকে উঠে কাবার্ড খুলেন। কাপড় গুলো নেড়ে কি যেনো একটা খুঁজতে লাগে। তফাজল ইয়াসমিন এর তাড়াহুড়ো করতে দেখে উনার পাশে এসে জিগ্গেস করলো।

—“কি খুঁজতেছো? আমাকে বলো আমিও চেষ্টা করে দেখি!

ইয়াসমিন একবার তফাজলের দিকে তাকিয়ে বলে—“খাম।

তফাজল শুনে অবাক হওয়ার মতো করে বলে—“কিসের খাম? কার খাম?

—“সিরাত এর জন্মদাএীর খাম। উনি খামের মধ্যে এই ব্যাপারে কিছু না কিছু লিখেছিলো। কিন্তু আমি পড়তে পারি নি। ব্যস্ততার মাঝে এতোই ডুবে ছিলাম। যার কারণে খামটা পড়া হয়নি সেটাই খুঁজতেছি। আপনিও গিয়ে সিরাত রেনার রুম ছাড়া বাকি রুমগুলোতে খুঁজতে লাগেন।

তফাজল বাকি রুমগুলো খুঁজতে থাকে। মিসেস ইয়াসমিন এর চোখজোড়া আটকে যায় টেবিলের নিচে…
#My vampire lover comes again

#এসেছি ফিরে তোমারই ডার্ক প্রিন্স

#লেখিকা_তামান্না
#পার্ট_07

মিসেস ইয়াসমিন টেবিলের কোণায় চিঠিটা পেয়ে যান। যা সিরাতের আসল মায়ের লেখা চিঠি। তিনি উৎফুল্ল হয়ে চিঠিটা হাতে নিয়ে দরজার কাছে এসে আশেপাশে তফাজল কে খুঁজে ডাক দেন। তফাজল হোসেন মিসেস ইয়াসমিন এর ডাক শুনে রুমের মধ্যে চলে আসেন।

মিসেস ইয়াসমিন দরজা বন্ধ করে তফাজলকে নিয়ে বেডের উপর বসে। ধীরে ধীরে চিঠিটা খুলেন। চিঠিটা খুলে যা দেখেন তা দেখে উনারা শকড। চিঠিটার মধ্যে কিছুই লেখা নেই। মিসেস ইয়াসমিন এর চোখে পানি এসে টলমল করছে কারণ চিঠিটাই ছিলো একমাএ উপায় যার মাধ্যমে উনারা সিরাতের পিশাচ এ পরিণত হওয়া থেকে বাচাঁতে পারতো।

তিনি চিঠিটা কে কয়েকবার চেক করে এদিক ঘুরিয়ে অপরপাশ ঘুরিয়ে কিন্তু কোনো লাভ হলো না। তফাজল মিসেস ইয়াসমিন কে থামতে বলে চিঠিটা নিয়ে রেখে দেন বেডের পাশে ড্রয়ারের উপর। যা ছিলো জানালার কাছে চাদেঁর আলো চিঠিটার উপর পড়ছিলো। সেটা নিজেই চকচক করে নিভে গেলো। যা মিস্টার তফাজল আর মিসেস ইয়াসমিন এর নজরে পড়লো না।

মিস্টার তফাজল মিসেস ইয়াসমিনকে জড়িয়ে ধরেন আর বলেন…..

—“কিছু হবে না সব ঠিক হয়ে যাবে উপরওয়ালার উপর বিশ্বাস রাখো। নিজেই নিচুপে চোখ মুছে মিসেস ইয়াসমিন এর চোখ মুছে দেন।

মিসেস ইয়াসমিন আর কিছু না বলে মিস্টার তফাজল এর সাথে ঘুমের জগতে পাড়ি দেন।

In Morning to the office 🌺





সিরাত নিজের কেবিনে বসে আজকে মিটিং এর সব ফাইল চেক করছিলো সাথে আড়চোখে ঘড়ির দিকে তাকাচ্ছে।

সে প্রচুর রেগে নিজের মেনেজারকে ডাকার জন্যে টেবিলের উপর রাখা কলিং বাটোন চেপে উনাকে নিজের কেবিনে ডাকেন। মেনেজারের কেবিনে বসের কলিং বাজতেই সে তড়িঘড়ি নিজের কেবিন থেকে বের হয়ে সিরাত এর কেবিনে এসে নক দেয়। সিরাত উনাকে আসতে বলে জিগ্গেস করে….

—” Where is Ms Irin? শান্ত কণ্ঠে ফাইলের দিকে তাকিয়ে বললো।

মেনেজার এক ঢোক গিলে মনে মনে বলে—” এখন কি বলবো? ইরিন মেয়েটা এতোই লেইট করে কেনো? আজকে স্যার অবশ্যই আমাকে আস্ত রাখবে না। হাত মুচড়ামুচড়ি করে।

সিরাত এবার রেগে বলে—“Call her right now….টেবিলের উপর বারি মেরে।

মেনেজার ভয়ে নিজের মাথা নাড়িয়ে হ্যাঁ জানিয়ে কেবিন থেকে বের হয়ে ইরিনের ফোনে কল দেয়। কিন্তু তার ফোন অফ আসে। সে ট্রাই করতে থাকে।

সিরাত নিজের চেয়ারে বসে দুলতে থাকে। নিজের মাথার রাগ দমানোর চেষ্টা করছে। সে নিজেই নিজেকে বলে…..

—“আমার কি হয়ে যাই? নিজেকে কন্ট্রোল কেনো করতে পারি না! দিন দিন আমার মাঝে কিসের পরিবর্তন আসচ্ছে।

সে টেবিলের উপর থেকে পানির গ্লাসটা হাতে নিয়ে খেতে লাগে। ধীরে ধীরে তার মাথা ঠান্ডা হয়ে
আসে। সে কমর্ফোট ফিল করায় নিজেই উঠে মেনেজারের কাছে যান।

মেনেজার মাথা নিচু করে বলে—“স্যার ইরিনের নাম্বারে কল যাচ্ছে না।

সিরাত মেনেজারের কাধেঁ হাত রেখে বলে—” ইটস ওকে তুমি ট্রাই করলা সেটাই বেশি এখন যাও কাজ করো। ইরিন এর ব্যবস্থা তো আমি করবো। চোখজোড়া গরম করে রাগী সুরে বলল।

মেনেজার সিরাত এর যাওয়ার দিকে তাকিয়ে মিন মিন করে বলে—“স্যার এর রাগী কণ্ঠ ইরিন এর দিনকে রাত বানিয়ে দেবে। এখন এখান থেকে উধাও হলেই বাঁচি। এক ঢোক গিলে নিজের কপালের ঘাম মুছে ধীর পায়ে নিজের কেবিনে চলে যায়।

সিরাত নিজের কেবিনে গিয়ে জানালার কাছে এসে পর্দা গুলো সরানোর জন্যে নিজের হাত বাড়াতে থাকে। কিন্তু মাঝে থেমে যাই। কেনো না তার মন এই পর্দাগুলো সরাতে বার বার বাধা দেয়। সে এই পর্যন্ত কখনো রোদের আলো রশ্নি দেখে নি বললেই চলে। সে সোফায় বসে নিজের ফোন টিপতে থাকে।

_________________

ইরিন মাথায় হাত চেপে ধীরে ধীরে উঠে বসে সে নিজের চোখ খুলতেই অবাক সে ফ্লোরে শুয়ে আছে। সে নিজেকে চেক করে দেখে তার কাপড়চোপড় ঠিক আছে কিনা। দেখে সে এক দীর্ঘ নিশ্বাস ছাড়ে। কারণ সে ভেবেছিলো হয়তো কেউ তাকে কিডনাপ করে রেপ করে ফেললো। কিন্তু এমন কিছুই নয়।

সে উঠার চেষ্টা করে কিন্তু তাজব ব্যাপার উঠতে পারছে না। সে খেয়াল করলো তার উপর কোনো ধরনের দড়ি বা শক্ত কিছু নেই তাও সে উঠতে পারছে না।

—“কি হচ্ছে এসব আমি উঠতে পারছি না কেনো? এখানে কিছু নেই তাহলে? নিজের হাত নাড়িয়ে চেষ্টা করতে থাকে।

হঠাৎ অদ্ভুত এক আওয়াজ ইরিন এর কানে ভেসে আসতে লাগলো। সে সাউন্ডটা শুনে কিছুটা সংকোচ বোধ করতে লাগলো। সে সামনে আশেপাশে তাকিয়ে উচ্চ গলায় বলে….

—“কি….কি এখানে কেউ আছেন? প্লিজ হেল্প করুন আমি আটকা পড়ে গিয়েছি? Anyone please help.

কিন্তুু ইরিন অনুভব করলো তার পিছে কে যেনো তার চুলগুলো নিয়ে খেলা করছে। ইরিন ভয়ে ভয়ে নিজের ঘাড় ঘুরিয়ে পিছে তাকায়। কিন্তু কাউকে দেখতে না পেয়ে সামনে তাকাতেই….

—“ভোউউউউউউউউ

—“আম্মুউউউউউউউউউউ। ইরিন চিৎকার দিয়ে নিজের কান চেপে ধরে।

সামনের জন ইরিন এর অবস্থা দেখে মুখ টিপে হাসতে লাগে। সে ধীরে ধীরে শুনতে পেলো কে যেনো হাসচ্ছে। সে কৌতূহলী চোখ খুলে দেখে তার সামনে এক জলজেন্ত মানুষ বসে আছে।

—“কে…….কে তুমি? এভাবে হাসচ্ছো কেনো জোকস চলচ্ছে নাকি! ভয়ে ভয়ে কিছুটা সাহস জুটিয়ে বলে ইরিন।

—“আরে তুই এখনো গাধী থেকে গেলি রে ! কবে মানুষ হবি সেটা বল? আউলা ভাগের যাউলা মেয়ে।দাতঁ কেলিয়ে হাসতে লাগে মেয়েটি।

—“ওয়াইট ননসেন্স কি সব…..থেমে অবাক নয়নে মেয়েটার দিকে তাকালো।

মেয়েটা নিজের মাস্ক খুলে ফোজ দেওয়ার মতো করে নিজের ফেস ইরিনকে দেখাতে থাকে। ইরিন হাত দেখিয়ে থামতে বলে। সে কৌতূহলী বলে….

—“আমি কি তোমাকে চিনি বা তুমি কি আমাকে চিনো?(জানার ভঙ্গিতে )

মেয়েটা মুখ গোমড়া করে বলে ~ ইন্নালিল্লাহআআআআআআআ(কানে হাত চেপে) আমার দোস্ত আমাকে ভুলে গেলো। ইয়া আল্লাহ এই জীবনটা রেখে আর কি লাভ ! আউলা ভাগের যাউলা মেয়ে সব ভুলে গেছে। হুদায় এতো সারপ্রাইজ দিচ্ছিলাম(ফেসটা উদাস করে)

ইরিন মেয়েটার কোনো কথাই ঠিকভাবে বুঝতে পারছে না তবে তার চারটি শব্দ শুনে তার মনে পড়তে লাগে ছোট বেলায় তার বেস্টু এই কথা বলতো। সে জোরে সরে বলে…..

—“লামিয়াআআআআআআআ নাকি? (উৎফুল্ল হয়ে মেয়েটার দিকে তাকিয়ে)

মেয়েটা মুখ বাঁকিয়ে বলে—“এতোক্ষণ পর মনে আসলো। নামটা কি এতোবছর তোর শ্বশুরবাড়ি বেড়াতে গেছিলো?

ইরিন মুচকি হেসে লামিয়াকে জড়িয়ে ধরে। লামিয়াও এতোবছর পর তার বেস্টুকে জড়িয়ে নেয়। ইরিন সরে এসে বলে—“খুব মিস করছি রে তোরে। এতো বছর তোকে ছাড়া কিভাবে ছিলাম আমিই জানি। বাট বাই দ্যা ওয়ে তুই আমাকে এই কোথায় নিয়ে আনলি?

লামিয়া মুচকি হেসে বলে—“আমি তোরে কোথাও নিয়ে আসি নি। তুই তোর বাড়িতেই আছিস। আমি তো যাস্ট হ্যালুয়েশেনেশ্নো ক্রিয়েট করলাম। দেখ এখনই ঠিক হয়ে যাবে।

লামিয়া তুড়ি বাজাতেই গোডাউন টা ইরিন এর বাসায় পরিণত হয়ে গেলো। ইরিন চোখজোড়া বড় করে লামিয়ার দিকে তাকায়। সে দাতঁ কেলিয়ে বলে…

—“এতো অবাক হওয়ার কি তুই তো ছোটবেলা থেকেই আমার এই হ্যালুয়েশেনেশ্নো করাটা জানতি।সেটা এখন আরো বেড়ে গেলো আরকি। তখন ছোট ভাবে হতো এখন বড় বড় ভাবে করতে পারি।

ইরিন মুচকি হেসে পাশে মুখ ঘড়ির দিকে দেখতেই এক লাফে চিৎকার দিয়ে উঠে বলে—“বজ্জাত উগান্ডা আজকে আমাকে গিলে চাবিয়ে খাবে কুওি সব তোর জন্যে হলো!

লামিয়া অবাক হয়ে জিগ্গেস করে—“কোথায় তুই আমার সারপ্রাইজের সুনাম করবি আমি এখানে কিভাবে আসলাম এসব নিয়ে কথা বলবি তা না উল্টা গালি দিয়ে আমাকেই উড়ান ছুঁ করতেছিস(মুখ ফুলিয়ে দুই হাত বুকের উপর ভাজ করে)

ইরিন দুই হাত এক করে মাফ চাওয়ার মতো করে বলে —“দোস্ত এখন না। পরে এখন একজন বজ্জাত কালা কুমির আমাকে খাওয়ার জন্যে মনে হয় লোহা পাতিল যা আছে সব রেডি করতেছে। এখনই অফিসে যেতে হবে। আমি ফ্রেশ হতে যাই। আর তুই থাকবি নাকি যাবি গা?(তাড়াহুড়ো করে জানার ভঙ্গিতে )

লামিয়া চোখজোড়া ঘুরিয়ে বলে—“তুই যাহ বাল আমি আমার মতো উধাও হয়ে যাবো। তবে মনে রাখিস কিছুক্ষণ পর আবার দেখা হবে। দুষ্টুমি ফেস করে টেডি স্মাইল করলো।

ইরিন লামিয়ার কথার আগামাথা কিছুই বুঝলো না সে দেখলো লামিয়া উধাও হয়ে গেছে। সেও চার পাচঁ না ভেবে রেডি হতে যায়।

…………..চলবে…………..
…………..চলবে…………

[বিঃদ্র ~ ট্রিলার টু ট্রিলার গল্পের রহস্যের গভীরে যেতে থাকবে সাথে আগমন হবে ভয়ানক বিপদের। সিরাত ইরিন দুইজন এর জীবনের অনেক কাহিনির খোলাসা হতে টাইম প্লাস অচেনা দুইজনের আসল সম্পর্ক কার সাথে জড়িত তা জানতে পড়তে থাকুন। হেপ্পি রিডিং]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here