তুমি বললে আজ ২ পর্ব -১৯

#তুমি_বললে_আজ_২
লেখনীতেঃ #রিধিমা_জান্নাত_রূপা
পর্বঃ ১৯

.
সন্ধ্যা রাতে একে একে জ্বলে উঠলো ল্যাম্পপোস্টের আলো গুলো। আধো অন্ধকার থেকে হলদেটে আলোতে আলোকিতো হয়ে উঠছে রাস্তার আনাচে কানাচে। রাস্তায় মানুষের আনাগোনা তাতেও যেন কমে গেল না, বরং বারতে থাকলো। ঘরমুখো মানুষেরা ঘরে ফেরার জন্য তোড়জোড় চালিয়ে যাচ্ছে। সমান তালে ছুটে চলে যানবাহন গুলো। বারান্দায় বসে দেখে চলেছি রাত নামার আগ মুহুর্তের শহরটা। যদিও আমার রুমের বারান্দাটা রাস্তার অপজিটে হওয়ায় পুরোপুরি ভাবে রাস্তাটা নজরে আসে না। বারান্দা থেকে শুধু শহরের এই ছোট বড় বিল্ডিংয়ের অবস্থানটাই খুব করে নজর কারে।

ফুপির বাসা থেকে বাসায় এসেছি দুপুরের পর। জ্বরটা কমার পর আরও দুই দিন ফুপি ও তাসফি ভাইয়ের জোরে থাকতে হয়েছে সেখানে। বাসা থেকে ফোন দিলেও এটা ওটা বলে বুঝিয়েছে। তাসফি ভাইয়া নিজেই নিয়ে এসেছেন বিকেলে, চলে যেতে চাইলেও আম্মু বড়মা মিলে যেতে দেয় নি ওনাকে।
বাসায় এসেই জানতে পেরেছি রিফাপুর বিয়ের ডেইট এক মাস এগিয়ে এসেছে। সাদিক ভাইয়ার ঢাকায় ট্রান্সফার হবে দু’ মাস পর, তাই বিভিন্ন ঝামেলায় ব্যস্ত থাকবে। বিয়ের ডেইট পেছাতে চাইলেও রিফাপুর ইয়ার ফাইনাল পরীক্ষার জন্য পেছাতে পারে নি। তাই, দু’ পরিবারের মতামতে এক মাস এগিয়ে নিয়ে আসাটাই ভালো মনে করেছেন। কথাটা শোনার পর মনটা একেবারে ফুরফুরে হয়ে উঠেছে। পাঁচ বছর পর পারিবারের কারো বিয়ে বলে কথা, মনটা তো ভালো হবেই। শেষ বিয়েটা রিমি আপুর ছিলো, পাঁচ বছর আগে। অনেকটাই ছোট ছিলাম তখন, ছোট বলে সবার সাথে ঠিক ভাবে মজাটাও করতে পারি নি। আর সেই দ্বায়িত্বটা পালন করেছিলেন মি. বজ্জাত তাসফি। কিন্তু এবার তো আর কোন বারণ করতে পারবেন না উনি, করলেও শুনবো না। অনেক কিছু প্ল্যান করে রেখেছি রিফাপুর বিয়ে তে। ওই বজ্জাত লোকটা বাগড়া না দিলেই হয়।

আকাশ কুসুম ভাবতে ভাবতে মোবাইলটা হাতে নিলাম। একটু আগেই রিফাপুর সাথে কথা বলেছি। ভীষণ খুশি আপু, হবে নাই বা কেন? তাদের এতদিনের ভালোবাসার পূর্ণতা পাবে বলে কথা।
মোবাইল হাতে নিয়ে অনলাইনে যেতেই বেশ কিছু নোটিফিকেশন এসে জমা পড়ে গেল। গত কয়েকদিনের জ্বরের কারণে অনলাইনে আসায় হয় নি। নোটিফিকেশন গুলো চেক করতে করতে হঠাৎ জয়ের মেসেজ দেখে বেশ অবাক হলাম। এই ছেলেটা আবার কি বলে? ইচ্ছে হলো না সিন করার। ওর জন্য এতকিছু হলো, প্রথম বার তাসফি ভাই আমার গায়ে হাত তুললো। আবার কি করতে মেসেজ করেছে? সিন করতে না চাইলেও কিছু একটা মনে করে সিন করলাম। ওকে বারণ করা উচিত যেন আর মেসেজ না দেয়, তাসফি ভাইয়ের চোখে পড়লে আবারও ঝামেলা করবেন।

‘আই অ্যাম সরি রামিয়াত। আজকের সিন ক্রিয়েটের জন্য আমি সত্যিই সরি। আর যাই হোক ওভাবে তোমার হাত ধরাটা উচিত হয় নি আমার। বন্ধুত্ব নষ্ট হবার ভয়ে নিজের মনের কথাটা এতদিনে বলতে চাই নি, কিন্তু আজকে সেই কথাটা বলেই আমাদের সম্পর্কটা নষ্ট করে দিলাম। তবে আমি চাইবো না এই সম্পর্ক ঠিক করতে, কারণ তোমার সামনে হয়তো আর দাঁড়াতেও পারবো না কখনো। পারলে আমাকে ক্ষমা করে দিও।’

‘তোমার নতুন জীবনের জন্য অনেক শুভকামনা। তাসফি ভাই সত্যিই তোমায় অনেক ভালোবাসেন, যেটা আমি হয়তো কখনোই পারতাম না। আজকে ওনার সাথে দেখা না হলে, হয়তো কখনোই তোমার কথাটা বিশ্বাস করতাম না, কিছুটা হলেও সন্দেহ থেকে যেত। ওনার পারসোনালিটি সত্যিই আলাদা, সব দিক থেকেই তোমার জন্য পারফেক্ট। আমার কথা জানার পর যে এভাবে আমাকে খুঁজে বের করবেন, সেটা দেখেই আমি অবাক হয়েছি। ওনার রাগ দেখেও অবাক হয়েছিলাম। রাগ করারই কথা, ভালোবাসার মানুষকে অন্য কারোর সাথে দেখলে রাগ হওয়াটা স্বাভাবিক। অবশ্য পরে ব্যাপারটা বোঝানোর পর উনি বুঝেছেন। তোমাকে নিয়ে সত্যিই অনেক পজিটিভ উনি। ভীষণ ভালোবাসে উনি তোমাকে, ওনার ভালোবাসা হারিয়ে যেতে দিও না কখনো। অনেক ভালো থাকবে ওনার সাথে, অনেক ভালো রাখবে তোমায়। ভালো থেকো রামিয়াত।’

চোখে মুখে হাজারো বিষ্ময় নিয়ে থম মে*রে বসে আছি আমি। প্রথম মেসেজটা দেখার পর অবাক না হলেও পরের টা দেখার পর যেন বিষ্ময় কাটছেই না আমার। মেসেজটার সময় সেদিন রাতের দেখাচ্ছে, তার মনে তাসফি ভাই জয়ের সাথে সেদিনই দেখা করেছেন? কিভাবেই বা খুঁজে পেল ওকে, আর কি-ই বা বলেছেন? উফ্! সবকিছু যেন এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে।

এবার ঠিকই বুঝতে পারছি, সেদিন রাতে কেন ওভাবে বারবার ক্ষমা চাচ্ছিলেন উনি। জ্বরের মাঝে ওনার আমার প্রতি যত্ন, কেয়ার দেখে সবকিছু যেন ভুলেই গিয়েছিলাম।
লোকটা আসলেই বজ্জাত। না জানি জয় কে কি কি বলেছেন? কতটুকুই বা বলেছেন? আমাদের বিয়ের কথাটা যে জয় কে বলেছি, সেটাও শুনেছেন কি না, আল্লাহ -ই ভালো জানেন। উফ্! কথাটা ভেবেই কেমন জানি লজ্জা লাগছে।

জয়ের মেসেজের উত্তরে আর কিছু বললাম না। না বলাটায় শ্রেয় মনে করলাম। দু’ একটা কথায় আরও যে কথা বারবে, সেটা খুব ভালো ভাবেই জানি।
আর বসে থাকতে ইচ্ছে হলো না বারান্দায়। উঠে রুমে আসতেই হঠাৎ কিছু একটা খেতে ইচ্ছে হলো। গত কয়েক দিনে ফুপি এই অভ্যাসটা খুব ভালো ভাবেই শিখিয়েছে আমাকে। প্রতিদিন এই সময়টা কিছু না কিছু বানিয়ে দিয়েছে খাবার জন্য।
মোবাইলটা বিছানায় রেখে বেরিয়ে আসলাম রুম ছেড়ে। পুরো বাসাটা কেমন জানি গুমোট পরিবেশে ছেয়ে গেছে। রিফাপু থাকলে তবুও অন্য রকম হয়ে উঠে বাসার পরিবেশ। সবগুলো কাজিন আসলে তো কোন কথায় নেই। এ’পাশে শুধু আমি আর তাসফি ভাইয়ের রুমে উনি আছে। এ ‘ পাশে এসে কেউ আলোটাও জ্বালায় নি। একদম অন্ধকারে ছেয়ে আছে। লাইটের সুইচটা রিমি আপুর রুমের দেওয়ালের সাথে। অন্ধকারে যতটুকু পারলাম এগিয়ে গিয়ে লাইট জ্বালানোর চেষ্টা করলাম। হঠাৎ কারোর সাথে ধাক্কা লাগতেই প্রচন্ড ভয় পেয়ে গেলাম। ভয়ে ‘আহ!’ করে চিৎকার দিয়ে পালানোর চেষ্টা করতেই খপ করে ধরে ফেললো আমাকে। সাথে সাথে ভারী কণ্ঠে বলে উঠলো,
“ভর সন্ধ্যায় এভাবে চিৎকার করছিস কেন? বেয়াদব!”

তাসফি ভাইয়ের গলা শুনে সাথে সাথে ওনার থেকে সরে আসার চেষ্টা করতে লাগলাম। এমনিতেই জয়ের মেসেজেটা দেখার পর আমার বলা কথাটা ভেবে লজ্জা লাগছে। ওনার সামনে কিভাবে থাকবো। আমাকে ছটফট করতে দেখে উনি আবারও ধমকে উঠলেন।

“পেঙ্গুইনের মতো এভাবে লাফালাফি করছিস কেন? লাফালাফি না করলে শান্তি পাস না? বেয়াদব!”

.
সময়টা যে কিভাবে চলে যায় সেটা বোঝা বড়ই কঠিন। মাস চলে গিয়ে পরের মাস কিভাবে এলো ঠিক ভাবে বোঝায় গেল না যেন। পুরো দমে রিফাপুর বিয়ের তোরজোর চলছে। ফুপিরাও এসেছে, কিন্তু বড় ফুপি এখনো আসেন নি, কাল বা পরশু চলে আসবেন। ভাইয়া আসতে না পারলেও রিমি আপু আজকেই আসবে হয়তো। বিয়ের বিভিন্ন কাজের কারণে সাহিল ভাইয়া, সাগর ভাইয়া এবং রাহাত কেও তাড়াতাড়ি আসতে বলেছেন তাসফি ভাইয়া। আর মাত্র এক সপ্তাহের মতো আছে বিয়ের, পাঁচদিন পর হলুদ।

সেদিনের জ্বরটা ছেড়ে যাবার পরও বাসায় এসে থেকে থেকে কিছুটা জ্বর এসেছিলো। আজকেও সকাল থেকে একটু আধটু জ্বর জ্বর অনুভব হতে লাগলো। তেমন একটা পাত্তা দিলাম না, রিফাপুর বিয়ের আনন্দে। সকালে ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে বাইরে আসতেই সবার চিৎকার চেচামেচির আওয়াজ ভেসে আসতে লাগলো। বুঝে গেলাম বজ্জাত বাহিনী চলে এসেছে বাসায়। ড্রয়িংরুমে যেতেই নজরে এলো সবাইকে। সোফায় বসে ট্রি টেবিলে এক গাদা কার্ড নিয়ে বসে আছেন বড় বাবাই, তার পাশে বসে আছেন তাসফি ভাইয়া ও সাহিল ভাইয়া। বাকিরাও মনোযোগ সহকারে বড় বাবার বুঝিয়ে দেওয়া কথা শুনে চলছে।
ডাইনিং টেবিলের কাছে যেতেই বড়মা খাবার জন্য তাড়া দিলেন। চেয়ারে বসতেই আম্মু এসে তাড়াহুড়োয় খাবার দিতে লাগলো প্লেটে। আম্মু তাড়াহুড়োয় কিছুটা বিরক্ত হয়ে বললাম, আমি নিজেই নিচ্ছি, তুমি যাও। প্রতিত্তোরে কিছু বললো না আম্মু। সামনের চেয়ারে রিফাপু বসে খেয়ে চলেছে আপন মনে। আমিও খেতে খেতে তাকিয়ে আছি আপুর দিকে। আমাকে তাকিয়ে থাকতে দেখতেই বলে উঠলো,
“কি হয়েছে? এভাবে তাকিয়ে আছিস কেন?”

“দেখছি তোমাকে, আর ভাবছি।”

“আমাকে এত দেখার কি আছে? আর কি এত ভাবছিস?”

“ভাবতেছি, এতদিন এতএত খেয়েও মোটা হও নি, কিন্তু এবার একটু খেয়েই মোটা হয়ে যাবা।”

“তো…. কি এমন খাবো যে, মোটা হয়ে যাবো?”

“কি আবার? কয়েক দিন পর তোমার বিয়ে, বিয়ের পর সাদিক ভাইয়ার আদর খেয়েই মোটা হয়ে যাবা।”

“ওও… আচ্ছা! কি….. কি বললি তুই রূপা?”

এবার খিলখিল করে হেঁসে উঠলাম আমি। রিফাপুর রিয়াকশন দেখে প্রচন্ড হাসি লাগছে এই মুহুর্তে। হাসতে হাসতেই খেতে লাগলাম। রিফাপু কিছুটা রেগে যাবার ভান ধরে বলে উঠলো,
“বড় বোন কে এসব বলতে লজ্জা লাগে না তো? এসব কি কথাবার্তা? হু!”

তবুও হাসতে লাগলাম আমি। হাসতে হাসতে বলে উঠলাম,
“তুমি আমার বড় বোন? যাও বিশ্বাস করলাম না তোমার কথা।”

“তুই আসলেই বেয়াদব হয়ে যাচ্ছিস রূপা, দাঁড়া তাসফি ভাইকে বলে তোর একটা ব্যাবস্থা করছি।”

বলেই একটু থামলো রিফাপু, সেকেন্ডের মতো সময় নিয়ে সন্দিহান গলায় বলে উঠলো,
“আচ্ছা রূপা সত্যি করে বল তো, তাসফি ভাইয়ের থেকে যে এতএত আদর খাস, তবুও মোটা হচ্ছিস না কেন বল তো?”

“তোমার ওই আদরের বজ্জাত ভাইটা কি আমাকে আদর করেছে কখনো, যে মোটা হবো? সারাদিন তো শুধু ধমকের উপরেই রাখে।”

“তাহলে তাসফি ভাইকে বলি, কি বলিস? ছোটখাটো আদরের ডোসটা বারিয়ে বড় বড় আদর দিকে, মোটাতাজা করার ব্যাবস্থা করতে বলি।”

নিমিষেই হাসিটা বন্ধ হয়ে গেল, খুকখুক করে কেশে উঠলাম আমি। খাবারটা গলায় আঁটকে গেল যেন। এবার রিফাপু উচ্চস্বরে হেঁসে উঠে পানির গ্লাসটা এগিয়ে দিলো আমার দিকে। সাথে সাথে পুরো গ্লাসের পানিটা শেষ করে রিফাপুর দিককে তাকালাম। কথাটা যে কিভাবে নিজের অজান্তেই বেরিয়ে এসেছে, বুঝতেই পারি নি।উফ্! রূপা তুই আসলেই একটা গাধী, কিচ্ছু নেই তোর মাথায়। মি. বজ্জাত তাসফির মতো যে রিফাপুও অসভ্য হয়ে গেছে, এটা জানা ছিলো না আমার। উফ! সবগুলো এক, এদের সাথে থেকে থেকে আমিও এদের মতো হয়ে যাচ্ছি।
তাড়াতাড়ি করে চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়ালাম, আর থাকা যাবে না। তা না হলে আবারও কিছু না কিছু শুনতে হবে। যেতে যেতে রিফাপুর দিকে তাকিয়ে আস্তে করে বলে উঠলাম,
“তোমার ওই বজ্জাত ভাইয়ের আদরের দরকার নাই আমার। হু!”

রিফাপুর দিকে না তাকালেও তার জোরে জোরে হাসির শব্দটা ঠিকই ভেসে আসলো আমার কানে।

.
বসার রুমে আসতেই দেখি সবাই মিলে গভীর আলোচনায় ব্যস্ত। সবার আলোচনার মাঝে গিয়ে দাঁড়ালাম, কিন্তু গভীর আলোচনার কারণে আমার দিকে কারোর নজর পড়লো না। ঠিক বুঝতে পারলাম না কি নিয়ে কথা হচ্ছে তাদের।
একটু পর রাহাতের নজর পড়লো আমার দিকে। আমাকে দেখে রাহাত একবার তাসফি ভাইয়ার দিকে তাকালো রাহাত। তারপর হঠাৎই বেশ জোরে করেই বলে উঠলো,
“রূপা…. রূপা যাক, বাসায় তো ওর কোন কাজ নেই।”

রাহাতের কথায় আমার দিকে তাকালো সবাই। আমি কিছু না বুঝে আহাম্মকের মতো তাকিয়ে আছি। বড় বাবাই বলে উঠলো,
“ও যাবে? তোরাই কেউ যা তাসফির সাথে।”

সাহিল ভাইয়াও একইভাবে আমার দিকে তাকিয়ে তাসফি ভাইয়ের দিকে তাকালো একবার। তারপর বড় বাবার দিকে তাকিয়ে বলে উঠলো,
“আমাদের তো এদিকে অনেক কাজ, এদিক টাও তো সামলাতে হবে। তাসফি ভাইয়ের সাথে ও গেলেই ভালো হবে, রিফার বোন হিসেবে।”

“কোথায় যাবো আমি? কোথায় যাবার কথা বলছো তোমরা?”

“আর বলিস না মা, রিফার শ্বশুর বাড়িতে এই কার্ড আর এএই জিনিসগুলো দিতে হবে। তাসফি একা একা যাবে, কেমন দেখায় না। যতই ওর বন্ধুর বাড়ি হোক, এখন তো আত্মীয়তা করতে যাচ্ছি।”

চিন্তিত হয়ে কথাটা বলেই থামলেন বড় বাবা। আমি অবাক হয়ে তাকিয়ে আছি সবার দিকে। এতগুলো মানুষ থাকতে আমাকেই কেন যেতে হবে ওনার সাথে। না যাবার জন্য বলে উঠলাম।
“আমাকে টানছো কেন সবাই? এই রাহাত, তুই তো যেতে পারিস ওনার সাথে।”

“না না…. আমি পারবো না, আমার এদিকে অনেক কাজ আছে।”

“আমিও পারবো না, আমার এতগুলো কার্ড দেওয়ার দ্বায়িত্ব আছে।”

সাথে সাথে সাহিল ভাইয়াও বলে উঠলো। সাগর ভাইয়া কিছু না বলায়, ভাইয়ার দিকে তাকিয়ে বলে উঠলাম,
“ছাগল ভাইয়া…. ছাগল ভাইয়া গেলেই তো হয়, ওনার সাথে….”

“তুই আবারও আমাকে ছাগল বললি? তাসফি ভাই কি সাধে তোকে বেয়াদব বলে? আমার কি আর কাজ নাই, তোর মতো বসে আছি নাকি আমি?”

আমার কথাটা শেষ না হতেই ধমকে উঠলো সাগর ভাইয়া। এদের সবার কথায় বুঝে গেলাম কেউ যেতে রাজি নয়, তার উপর যেতে আসতে দুই দুইয়ে চার ঘন্টার পথ জার্নি। এদিকেও অনেক কাজ বাকি। বড় বাবাইও চুপ করে বসে আছেন। সবাইকে থামিয়ে দিয়ে তাসফি ভাই বলে উঠলেন,
“ওরা তো ঠিকই বলেছে, তোর তো আর বাসায় কোন কাজ নেই, বসে বসে মোবাইল টেপা ছাড়া। বাসায় বসে না থেকে, একটু তো কাজ কর।”

আমি না যাবার জন্য বারণ করলেও বড় বাবা যাবার কথা বললেন। এটাও বললেন, তাছাড়া আর উপায়ও নেই। তাসফি ভাই কিছুটা জোরে ধমক দিয়ে রেডি হতে বলতেই আর না বলার সাহস পেলাম না। বাসায় না বসে থেকে একটু ঘোরাঘুরিও হবে বাইরে গেলে, সেটা ভেবেই রেডি হবার জন্য রুমে চলে আসলাম।

.
.
চলবে……

প্রতিদিনের চেয়ে অধিক রিয়াক্ট ও কমেন্ট পেলে পরবর্তী পর্ব আরও বড় করে দিবো। রি-চেকই দেওয়া হয় নি, ভুলত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।🖤

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here