বৈবাহিক চুক্তি পর্ব ১০

#রোদে_ভেজা_মেঘ
#লিখাঃ Liza Bhuiyan
#বৈবাহিক_চুক্তি (সিজন ২)
#পর্বঃ ১০

কয়েকজন গার্ড ডক্টরকে রীতিমত টেনে হসপিটালের কেবিনে ঢুকালো, রোয়েন সেখানে ইনায়ার হাত ধরে বসে ছিলো। ডক্টরকে চোখে পড়তেই উঠে দাঁড়িয়ে তার কলার চেপে ধরলো

“আপনি বলেছেন ও আউট অফ ডেঞ্জার তাহলে এখনো সেন্স ফিরছে না কেন? গত এক ঘন্টা ধরে আমি বসে আছি কিন্তু এখনো ও উঠছে না কেন?লিসেন ডক্টর! যদি ওর কিছু হয় তাহলে আপনার নাম ও নিশানা দুনিয়া থেকে মিটিয়ে দিবো। নাও এক্ষনি ওর সেন্স ফিরিয়ে আনুন ”

রোয়েন চিৎকারে পুরো রুম জুড়ে নিরবতা কাজ করছে, রুমে উপস্থিত সবাই যেনো নিশ্বাস নিতেও ভয় পাচ্ছে। ডক্টর অলরেডি এসি থাকা সত্তেও ঘেমে একাকার, কপালের ঘাম মুছতে মুছতে ইনায়ার দিকে এগিয়ে গেলো। প্রচণ্ড ভয়ের কারনে ইনায়া জ্ঞান হারিয়েছে কিন্তু অনেক্ষন না খেয়ে থাকায় প্রেশার ফল করেছে তাই সেন্স ফিরতে লেট হচ্ছে আরো প্রায় একঘণ্টা এর মতো লাগবে হুশ ফিরতে কিন্তু এটা রোয়েনকে বলতে পারবে না তা ভালোই বুঝতে পারছে।

রোয়েন লিউস দ্যা মাফিয়া কিং তাকে কে না চিনে? এখানে অনেক বছর ধরে থাকার সুবাদে এই নিউজ সম্পর্কে ভালোই অবগত সে কিন্তু এইখানে আর চাকরি করা সম্ভব নয়। যদি সত্যিই নাম নিশানা মিটিয়ে দেয়! তাই এখন যা করতে হবে তাতে ইনায়ার অস্বস্তি হতে পারে কিন্তু কিছু করার নেই

“আপনি একটু বাহিরে যান আমি হুশ ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছি ”

“কেনো বাইরে কেন যেতে হবে। যা করার আমার সামনেই করেন ” ধমক দিয়ে বললো ডাক্তারকে রোয়েন

ডাক্তার পড়লো মহা বিপদে, নাহ রোয়েনের সামনে তো করাই যাবে তাহলে এখনি খুন হয়ে যাবে। তাই ভয়ে ভয়ে বললো

“যদি চান উনি ভালো হোক তাহলে বাইরে যেতে হবে ”

“কেন কি করবেন ওর সাথে, ভালোয় ভালোয় বলছি ঠিক করেন নয়তো…”

“স্যার আমার মনে হয় মেডামের হেলথ এখন বেশি ইম্পর্টেন্ট তাই ডাক্তার যা বলছে তা শুনাই বেটার অপশন ”

মাথানিচু করে বললো একজন গার্ড, নিজের জীবন বাজি রেখে বলেছে তা বুঝাই যাচ্ছে, রোয়েনের মনে হলো ইনায়ার সেন্সে ফিরা এখন বেশি দরকার তাই ডাক্তারকে আরেকদফা শাশিয়ে রুম থেকে বেরিয়ে এলো।

অনেক্ষন ধরে চেষ্টা করেও যখন জ্ঞান ফিরাতে পারছেনা তখন ডক্টর মাইকের চেহারায় চিন্তার রেখা ফুটে উঠলো। আর বেশিক্ষণ হয়তো রোয়েন বাইরে থাকবে না, প্রাণনাশ আজ বোধহয় নিশ্চিত। ভয়ে যেন আত্মা কেপে উঠলো ওর,ভয়ে ভয়ে রোয়েনকে ভেতরে আসতে বললো কিছু একটা ভেবে

বেশ কিছুক্ষণ ধরে ইনায়া অস্বস্তিতে পড়েছে, চোখ জুড়ে ঘুমেরা বিরাজ করছে কিন্তু সুড়সুড়িতে ঠিকমতো ঘুমোতে পারছে না আর না পারছে চোখ খুলতে। হঠাৎ সেই অনুভুতি শেষ হতেই কিছুটা স্বস্তি পেলো তবে বেশিক্ষণ টিকলো না তা। হঠাৎ করে মনে হচ্ছে অক্সিজেনের কমতি পড়ছে তাই কিছুটা জোরে শ্বাস নেয়ার প্রচেষ্টায় চোখ খুললো আর নিজের অধরে কেউ একজনের অধরের আভাস পেলো। ঘোলাটে চোখ যখন কিছুটা স্পষ্ট হয়ে উঠলো তখনি দেখতে পেলো ব্যাক্তিটি আর কেউ নয় স্বয়ং রোয়েন। দুর্বল হাতে ধাক্কা দিতেই রোয়েন টের পেয়ে দূরে সরে গেলো, আর ও ব্ল্যাংক এক্সপ্রেশনে তাকিয়ে আছে। ইট ওয়াজ হার ফার্স কিস!

ইনায়ার জ্ঞান ফিরাতে ডাক্তার যেনো মহা খুশি, ইটস লাইক আ ক্রিস্টমাস ডে টু হিম। ও ইনায়াকে সুড়সুড়ি দিয়ে উঠাতে গিয়ে ব্যার্থ হওয়ার পর রোয়েনকে ডেকে সি পি আর দিতে বললো কিন্তু এই মাফিয়া যে কিস আর সি পি আর এর পার্থক্য বুঝে না তা ও বুঝতে পারেনি। খুন করা ছাড়া আর কিছু পারে কিনা কে জানে। যাইহোক মেয়েটি সুস্থ হয়ে গিয়েছে এতেই মহা খুশি,ইনায়াকে কিছু খাওয়াতে বলেই কেটে পড়লো সেখান থেকে!

“তুমি বসো আমি কিছু নিয়ে আসছি ”

বলেই বেরিয়ে পড়লো ওখান থেকে, সারা শরীর যেন গরম হয়ে আছে। গালগুলো যে কিছুটা লাল হয়ে আছে তা যেন আয়না না দেখেই বুঝতে পারছে। তবে কিছু একটার জন্য খুব খুশি লাগছে তাই ঠোটের কোনে মুচকি হাসি ঝুলেই আছে। চুলগুলো পিছনে নিয়ে শিশ বাজাতে শুরু করলো আর হিন্দি গান শুনছে,,

“সাঁসো মে তেরি সাঁসে মিলি তো
মুঝে সাঁস আয়ি, মুঝে সাঁস আয়ি
তু হামে ছুয়ি জিসম কি খুশবু
তু যো পাস আয়ি তু যো পাস আয়ি”

#চলবে

(ছোট করে দেয়ার জন্য স্যরি। ভেবেছিলাম দিবো না কিন্তু পরে ভাবলাম দেই কিন্তু দেরি হয়ে গিয়েছে)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here