শুধু তুই ৩ পর্ব -১৯+২০

#শুধু তুই ৩
#পর্বঃ১৯
#Tanisha Sultana

“আমি কোথাও যাবো না। ডিভোর্স ও দেবো না আপনাকে বলে দিলাম।
বেশ কড়া গলায় বলে নিধি। আদি ভ্রু কুচকে তাকায় নিধির দিকে। এতোখন যে রেগে আগুন হয়ে ছিলো নিধির একটা কথায় রাগ অবাকে পরিনিত হয়।
নিধির হাত দুরো একটু আলগা করে দেয়। নিধি এখনও আদির চোখের দিকে তাকিয়ে আছে।
” আমার সতীনের সংসার করতে কোনো অসুবিধা নেই। আপনি ভাবছেন আমি অশান্তি করবো? ঝগড়া করবো। ঝামেলা করবো তাই আমাকে ডিভোর্স দিয়ে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে নতুন বড় আনবেন। বিশ্বাস করুন আমি একদম ঝগড়া করবো না। আপনাকে নিয়ে ঝামেলা করবো না। আপনি সব সময় আপনার দ্বিতীয় বউয়ের কাছেই থাইকেন। বাসার সব কাজ আমি করবো। প্রমিজ
বাচ্চাদের মতো মুখ করে অসহায়ের মতো বলে।
আদি নিধির ওপর থেকে নেমে যায়। সোজা হয়ে বসে। নিধির কথা শুনে স্তব্ধ হয়ে গেছে। এই মেয়েটা এই সব চিন্তা মাথায় আনলো কি করে?
নিধির চোখের কোনো পানি টলমল করছে যে কোনো সময় টুপ করে গড়িয়ে পড়বে।
নিধিও উঠে বসে। আদির থেকে কিছুটা দুরত্ব রেখে বসে। আদির দিকে এক পলক তাকায়। আদি এক মনে সামনের বেসিং এর দিকে তাকিয়ে আছে।
“আমার বাবা মা খুব কষ্ট পাবে। আমাকে বুঝতে না দিলেও আমি বুঝতে পারি আমার বাবা অনেক কষ্ট করে। সারাক্ষণ আমাকে নিয়ে চিন্তা করে। ভাবে ওনার টাকা নেই বলে আমাকে ভালো ঘরে বিয়ে দিতে পারবে না। আপনার পরিবার থেকে সমন্ধ আসার পরে কতো খুশি হয়েছিলো আমার বাবা সেটা আপনি জানেন না। বিয়ে ভেঙে গেলে আমার বদনাম হবে। বাবা মা কষ্ট পাবে। প্লিজ এমনটা করবেন না।
ভাঙা গলায় বলে নিধি।
চোখ দিয়ে পানি গড়াচ্ছে। আদির বুকের ভেতর ধক করে ওঠে।
আদি নিধির সামনে হাঁটু মুরে বসে। নিধির দুই গালে হাত দেয়।
” হেই কাঁদছো কেনো? কান্না থামাও
চোখের পানি মুছিয়ে দিয়ে বলে। নিধি নাক টেনে চোখের পানি আটকানোর চেষ্টা করে।
“আমি তোমাকে এসব বলতে চাই নি। আমাদের এইখানে তিন মাস থাকতে হবে। তো ভাবছিলাম এখানকার একটা কোচিং সেন্টারে তোমাকে ভর্তি করাতে চাই।
আদি শান্ত গলায় বলে।
নিধি চোখ মুছে নেয়। মুখটা এখনো গম্ভীর করে আছে।
” আমি তোমাকে মানতে পারছি না এটার কারণ তোমার বয়সটা। তাই বলে তোমাকে ডিভোর্স দেবো বা অন্য কাউকে বিয়ে করবো এটা ভাবি নি কখনো।
আবার নিধির পাশে এসে বসে বলে।
“তুমি যেমন আছো এখানে তেমন ভাবেই থাকবা। এতোসব তোমাকে ভাবতে হবে না। জাস্ট মন দিয়ে পড়ালেখা করো। ওকে
নিধির বাম গালে হাত দিয়ে বলে আদি। নিধি নিচের দিকে তাকিয়ে আছে।
“খেয়েছো?
নিধি উওর দেয় না।
” জিজ্ঞেস করেছি কিছু। ঝাঁঝালো গলায় বলে আদি।
নিধি নরেচরে বসে।
“আমাকে নিয়ে ভাবতে হবে না।
নিধি অভিমানীর সুরে বলে।
” ভাবতে হবে না? সিরিয়াসলি? ভাবতে হবে না। তারপর না খেয়ে অসুস্থ হয়ে যাবে দেন আমাকে সেবা করতে হবে। ড্রামাটা বেশ ভালোই করতে পারো তুমি।
মাথায় হাত দিয়ে ছটফট করে বলে আদি।
নিধি চুপ করে আছে। কথা বলছে না। আদির মুখের দিকে তাকিয়ে আছে। এই মানুষটা কি কখনো কাউকে ভালোবাসে নি? সে কি জানে না ভালোবাসার অনুভুতি কেমন হয়? সে কি জানে না একটু মিষ্টি করে কথা বলতে হয়?
নিধি ভাবে।
“মঙ্গল গ্রহে পায়ে হেঁটে যাওয়ার মতো কোনো কিছু আবিষ্কার করছো না কি?
আদির কথায় নিধি ভাবনার জগৎ থেকে বের হয়।
” যখনই ভাবি তোমার সাথে ঠান্ডা মাথায় কথা বলবো। তখনই তুমি মাথাটা গরম করে দাও। কেনো বলোতো? ড্রামা না করলে কি তোমার চলে না?
“ড্রামা করি আমি? তো থাকেন না আমার থেমে দুরে
চেঁচিয়ে বলে নিধি।
” মুখে মুখে তর্ক করছো? সাহস তো কম না? চোখ রাঙিয়ে বলে আদি।
নিধির চোখে আবার পানি চলে আসে।
“আমাকে না রাগালে তোমার চলে না?
এক দৌড়ে রুম থেকে চলে যায়।
” এটা কি হলো? এই তো ইমোশনাল কথা বললো। আবার রেগে গেলো কেনো?
আদি ভাবতে থাকে।

রুমের দরজা বন্ধ করে বই পড়ছে নিধি। চোখ ভিজে আসছে। কিন্তু কান্না পাওয়ার তো কোনো কারণ নেই। আদি তো বকে নি। ডিভোর্সের কথাও বলে নি। তাহলে?
“আমি না সত্যিই ড্রামা করি। না হলে কেনো কাঁদছে? স্টুপিট একটা
নিধি নিজেকে নিজেই বকে।
ভালো করে চোখ মুছে মনোযোগ পুরোটা বইয়ের দিকে দেয়।
টম নিধির দরজার কাছে বসে লেজ নারাচ্ছে। আদি ফ্রেশ হয়ে ফ্রিজ থেকে খাবার বের করে গরম করে নেয়। টেবিলে খাবার সাজিয়ে নিধির রুমের কাছে যায়।
” এই গাঁধি খেয়ে যাও। খাবার রেডি করেছি।
দরজায় টোকা দিয়ে বলে আদি।
নিধি শুনেও না শোনার ভাব ধরে জোরে জোরে বই পড়ে।
“সামনে আসলে কিন্তু ঠাটিয়ে চর মারবো তোমাকে। তারাতাড়ি দরজা খুলো।
রেগে বলে আদি।
নিধি আরও জোরে বই পড়ে।
” ইডিয়েট
আদি রাগে ফুসতে ফুসতে খেতে বসে। খেলে খাবে না খেলে নাই।
আদি কোনোরকম কয়েকবার খাবার মুখে দেয়। খাওয়া শেষল টমের সামনে খাবার রাখে।
“খেয়ে নে
টম একবার নিধির রুমের দিকে তাকায়। দুইবার ঘেউ ঘেউ করে ডাকে। তবুও নিধি সারা দেয় না।

আদির অফিসে জুঁই জয়েন করেছে। বস আদি আর জুঁইকে এক টিমে কাজ করতে বলেছে। আদির মাথা গরম হয়ে আছে। সে জুঁইয়ের সাথে কাজ করতে চায় না। এখন চাকরিটাও ছাড়তে পারছে না। এতোভালো চাকরি ছেড়ে দিলে করবে কি? আবার জুঁইয়ের সাথে মিলে কাজ করতেও ভালো লাগছে না।
আদি সারা রুম পায়চারি করছে। কোনো উপায় বের করতে পারছে না।
আবার নিধি খেলো না তাতেও কেমন লাগছে।
” পাগল হয়ে যাবো আমি
আদি মাথায় হাত চেপে বসে পড়ে।

নিধি বেলকনিতে যায়। পড়তে পড়তে বিরক্ত হয়ে গেছে। বেলকনিতে যেতেই দেখতে পায় গেটের কাছে একটা সুন্দর মাঠ সেখানে কিছু পিচ্চি ছেলে ফুটবল খেলছে। মুহুর্তেই নিধির মুড ভালো হয়ে যায়। খুব করে ইচ্ছে করছে ওদের সাথে খেলতে। গুড়িগুড়ি বৃষ্টি পড়ছে। নিজের ইচ্ছেকে দমিয়ে না রেখে নিধি ড্রেসটা পাল্টে দরজা খুলে। সাথে সাথে টম দাঁড়িয়ে লেজ নারায়।
“খেলতে যাচ্ছি। চল
নিধি খুশি হয়ে বলে।
মপইন দরজার কাছে এসে চুপিচুপি দরজা খুলে। দরজা না আটকেই নিধি আর টম দৌড়ে চলে যায়।

বাচ্চাদের দুই তিনবার খেলার জন্য বলতেই বাচ্চারা নিধিকে খেলতে নেয়।
গুড়ি গুড়ি বৃষ্টিতে মাঠের ঘাস গুলো ভিজে গেছে। খালি পায়ে তারওপর দৌড়ে বল খেলছে। দারুণ লাগছে নিধির। টম এক পাশে দাঁড়িয়ে আছে।

আদি পানি খাওয়ার জন্য রুম থেকে বের হয়ে গেছে মেইন দরজা খোলা।
” এটা কে খুললো?
নিধির রুমের দিকে তাকিয়ে দেখে নিইর রুমও খোলা। চোয়াল শক্ত করে আদি। বুঝে যায় নিধি বাড়ির বাইরে গেছে। আদিও বের হয়।
উঠোনে আসতেই দেখতে পায় নিধি বাচ্চাদের সাথে লাফিয়ে লাফিয়ে ফুটবল খেলছে।
“দুনিয়ায় যত পাগল আছে সব কেনো আমার ঘাড়ে এসেই পড়ে?
আদি বিরবির করে বলে।
নিধিকে কয়েকবার ওই ওই বলে ডাকে নিধি শুনে না। পরে বাধ্য হয়ে এগিয়ে যায়। মাঠের মধ্যে দাঁড়াতেই নিধি বলটাকে লাথি মারে আর বলটা আদির মুখে এসে লাগে।
নিধি আদিকে দেখে চমকে যায়। বাচ্চারাও দৌড়ানো বন্ধ করে দাঁড়িয়ে যায়। বলের কাঁদা আদির মুখে লেগে গেছে। নিধি ভয়ে কাচুমাচু হয়ে যায়। আদি কটমট চোখে নিধির দিকে তাকায়।
” আজ আর মার্ডার হওয়া থেকে নিধিকে কেউ বাঁচাতে পারবে না।
নিধি বিরবির করে বলে।
আদি রাগে গজগজ করতে করতে নিধির দিকে এগোয়। নিধি বাচ্চাগুলোর পেছনে লুকায়।
আদি বাচ্চা গুলোকে সরিয়ে নিধির কাছে গিয়ে কান ধরে।
“আমি কিছু করি নি
বলে নিধি কান্না শুরু করে দেয়।
” আজ তোমার নেকামো তোমাকে বাঁচাতে পারবে না।
#শুধু তুই ৩
#পর্বঃ২০
#Tanisha Sultana

কান ধরে টানতে টানতে নিধিকে রুমে নিয়ে আসে আদি। কান লাল হয়ে গেছে। ভীষণ ব্যাথা করছে তবুও আদিকে বলার সাহস পাচ্ছে না।
রুমে এসে নিধির কান ছেড়ে দেয়। ছাড়া পেতেই নিধি কানে হাত বুলিয়ে কটমট চোখে আদির দিকে তাকায়।
“পবলেম কি তোমার? সব সময় বাঁদরের মতো লাফাও কেনো?
চেঁচিয়ে বলে আদি। নিধি দুইকানে হাত দিয়ে চোখ মুখ খিঁচে বন্ধ করে।
নিধিকে উওর দিতে না দেখে আদি আরও হ্মেপে যায়। নিধির দুই কাঁধে হাত দেয়। নিধি চট করে চোখ খুলে
” আমাকে ইগনোর করো? যখন কথা বলা দরকার কখন চুপ করে থাকো আর যখন কথা বলার প্রয়োজন নেই তখন বকবক করো৷ পবলেম কি? ঠাটিয়ে থাপ্পড় মারতে ইচ্ছে হচ্ছে তোমাকে।
কাঁধে হাত দিয়ে ঝাঁকিয়ে বলে আদি।
নিধি কাচুমাচু হয়ে দাঁড়ায়। গুড়িগুড়ি বৃষ্টিতে ভিজে গেছে নিধি। চুল বেয়ে টপটপ করে মুখে পানি পড়ছে। চোখের পাপড়ি গুলো ভিজে গেছে। মুখে বিন্দু বিন্দু পানি জমে আছে। সব থেকে আকর্ষণীয় হলো ঠোঁটের গুড়ি গুড়ি পানি। জামাকাপড় শরীরের সাথে লেপ্টে আছে।
আদির চোখটা নিষিদ্ধ জায়গায় পড়ে যায়। কয়েক সেকেন্ডের জন্য মাথাটা ফাঁকা ফাঁকা লাগে। চট করে চোখ বন্ধ করে নিধির থেকে দুই পা পিছিয়ে যায়। চোখ খুলে অন্য দিকে তাকিয়ে ঘনোঘনো চোখের পলক ফেলে। জোরে জোরে শ্বাস নেয়।
নিধি ভ্রু কুচকে আদির দিকে তাকিয়ে আছে। হঠাৎ কি হলো বুঝতে পারছে না। ওনার কি শরীর খারাপ? হলে হোক তাতে নিধির কি?
নিধি এক পা এক পা করে দরজার দিকে যাচ্ছে নিঃশব্দে।
“স্টপ
নিধি পা বাড়াতেই আদি বলে ওঠে। নিধি দাঁড়িয়ে যায়। আবার ভয়ে কাচুমাচু হয়ে যায়। এই বুঝি আবার কান ধরবে। দুুই হাত দিয়ে দুটো কান ঢেকে ফেলে নিধি। এখন কিছুতেই কানে হাত দিতে দেবে না। কান ছিঁড়ে গেলে সমাজে মুখ দেখাতে পারবে না।
আদি নিধির মুখের দিকে তাকায়। মনে মনে দৃঢ় সিদ্ধান্ত নেয় চোখটা নিধির মুখেই সীমাবদ্ধ রাখবে।
” তোমাকে আমি যেতে বলেছি?
বুকে হাত গুঁজে নিধির দিকে ঘুরে দাঁড়িয়ে বলে আদি।
“আআপনার কথা আমি শুনবো কেনো?
বেশ সাহস সঞ্চয় করে থেমে থেমে বলে নিধি। আদি ভ্রু কুচকে ফেলে। নিধি হাত কচলাচ্ছে। এই বুঝি ঠাস করে গালে থাপ্পড় পড়লো। কিন্তু আদি এখনও কিছু করছে না দেখে নিধির সাহস বেরে যায়। একপলক আদির মুখের দিকে তাকায়। বেশ ঠান্ডাই আছে। তা দেখে নিধি আঙুল তুলে বলে
” আমার বেপারে আপনাকে ভাবতে হবে না। আমার যা ইচ্ছে আমি তাই করবো। এটা আমার পারসোনাল বিষয়। আপনার বেপারে তো আমি নাক গলায় না। তাহলে আপনি কেনো গলান?আপনি আপনার মতো থাকবেন আমি আমার মতো। বুঝলেন?
নিধি খুব রাগ দেখিয়ে বলে।
আদি এবার কপালে দুটো ভাজ ফেলে।
“ভেবে বলেছো তো কথা গুলো?
বেশ ঠান্ডা গলায় বলে আদি।
নিধি আগের মতোই তেজ দেখিয়ে বলে।
” এখানে ভাবা ভাবির কি আছে?
“ওকে আমিও তোমার বেপারে ভাববো না আর তুমিও আমার বেপারে ভাবনা না। এজ ইউ আর ইউস
কপাল চুলকে বলে আদি।
নিধি এবার ভরকে যায়। সরু চোখের তাকায় আদির দিকে। আদির মনের মধ্যে কি চলছে বোঝার চেষ্টা করছে।
” এই বাড়িটা কার? এখানে কে এনেছে তোমায়? সারাদিন গাণ্ডেপিণ্ডে গিলছো সেগুলো কার টাকায়? অবশ্যই আমার। সিরিয়াসলি আমি ভাবতে পারছি না। আমার খেয়ে আমার পরে আমাকে বলছো আমি কে?
বের হও আমার বাড়ি থেকে।
তুরি বাজিয়ে বলে আদি।
নিধি চমকে ওঠে। কোথায় যাবে। কিন্তু এভাবে দমে গেলে তো চলবে না।
“এএখানে আপনি ভাড়া থাকেন। এটা আমার বাড়ি মানে কি? ভালোই তো চাপা মারেন। এক মিনিট আপনি কি অফিসেও বলে বেড়ান না কি? আমার এতোগুলা বাড়ি আছে। আমি এতো এতো বড়লোক। এইসব বলে মেয়েদের ইমপ্রেস করান? জানি জানি
নিধির কথায় আদি চোখ মুখ শক্ত করে ফেলে। নিধি সেটা দেখে একটা ঢোক গিলে। কথা ঘোরানোর চেষ্টা করে বলে
” ননা মানে আআমি আআপনার টাকায় খাবো না। বববলে দিলাম হহুম। আমি জব করবো। কারো খোটার টাকায়,খায় না আমি। আর বেশি চাপাও মারি না😏
থেমে থেমে বলে নিধি।
আদি কিছু বলে না। আদির থেকে উওর না পেয়ে নিধি আবার বলে
“দুই দিন খেয়েছি বলে খোটা দিলেন তো। বড় হয়ে নি সব ধণ শোধ করে দেবো। হুম? নিধিরা নিধি কখনো কারো কাছে ঋণী থাকে না। কি এমন খায় আমি? তাতেই এতো কথা।
আঙুল তুলে তেঁতে উঠে বলে নিধি।
আদি এদিক ওদিক তাকিয়ে ফট করে নিশ্বাস নেয়। থ্রি কোয়াটার প্যান্টের পকেটে হাত ঢুকায়। তারপর নিধির দিকে এগিয়ে যায়।
” এএএগোচ্ছেন কেনো? ভরকে গিয়ে পেছতে পেছতে বলে নিধি।
আদি উওর না দিয়ে এগোতেই থাকে।
নিধি পিছতে পিছতে দেয়ালের কাছে গিয়ে পিঠ ঠেকে যায়। আদি এক হাত পকেটে রেখে আরেক হাত দেয়ালে নিধি মাথার পাশে রেখে নিধির দিকে একটু ঝুঁকে
“কি বলছিলে এতোখন? দাঁতে দাঁত চেপে বলে আদি। আদির নিশ্বাস গুলো নিধির মুখে আছড়ে পড়ছে। নিধির কথা গুলো গলার কাছেই আটকে আছে। মুখ দিয়ে কথা বের হচ্ছে না। চোখ দুটো খিঁচে বন্ধ করে ফেলে।
“কথা বলতে পারলেই হলো এটা ভাবো তুমি? তোমার কথা বলা আজ বের করছি?
দাঁতে দাঁত চেপে বলে আদি। আর একটু নিধির দিকে ঝুঁকে হাতটা নিধির কোমরে দেয়। কেঁপে ওঠে নিধি৷ হাত পা আগে থেকেই কাঁপছিলো এখন আরও বেশি কাঁপছে। যে কোনো মুহুর্তে কাঁপতে কাঁপতে শহীদ হয়ে যাবে এমন অবস্থা।
নিধির নাক ছুঁই ছুঁই আদির ঠোঁট। নিধির ঠোঁট গুলো কাঁপছে ঠক ঠক শব্দ করে।
” আআর কখনো কককিছু বববলললবো না।
নিধি কেঁদে দিয়ে তুতলিয়ে বলে।
আদি বাঁকা হেসে নিধির মাথায় চাটি মেরে সরে দাঁড়ায়। নিধি বুকে হাত দিয়ে জোরে শ্বাস নেয়।
“আউট
আদি বিছানায় বসে বলে।
নিধি এক দৌড়ে দরজা ওবদি গিয়ে থেমে যায়। আদির দিকে ঘুরে বলে
” আরিব বাস আপনি দেখি স্টুপিট ইডিয়েট আর ননসেন্স ছাড়া আরও একটি ইংরেজি ওয়ার্ড পারেন। ‘আউট’
আর শুনুন আমি যখন বড়লোক হয়ে যাবো তখন আপনাকেও বলবো ‘আউট’
“তেমাকে তো
আদি দাঁড়াতেই নিধি ভেংচি কেটে এক দৌড় দেয়।
” ইডিয়েট একটা
আদি এক হাত কোমরে আরেক হাত দিয়ে কপাল হাতিয়ে বলে।

চেঞ্জ করে নাপা খেয়ে নেয় নিধি। অনেকখন ভেজা ছিলো জ্বর আসছে শিওর। তাই অসুস্থ হওয়ার আগেই ঔষুধ খেয়ে নিলো। চুল গুলো ঝাঁড়তে ঝাঁড়তে বেলকনিতে দাঁড়িয়ে ফোনে বাবা মার কাছে কথা বলে নেয় নিধি।
এবার আদির বাবার কাছে ফোন দেয়। কিছুদিন আগে উনি বলেছিলেন অফিসে কাজ করার জন্য। এখন নিধি অফারটা এক্সেপ্ট করবে। আদি আজ খোটা দিলো? ভাবা যায়? খাবে না আর আদির টাকায়। আর এতোদিন যা যা খেয়েছে একসময় ফ্রী হলে হিসেব করে দেখবে কতো টাকা হয়েছে। সেই টাকাও দিয়ে দেবে আদিকে। নিধিরা নিধিকে কথা শোনানো।

শশুড় মশাই খুব খুশি হয়। আদির অফিসে জুঁই এসেছে এটা ভেবে উনি বেশ চিন্তিত হয়ে পড়েছিলেন এবার নিধি সেখানে থাকে উনি বেশ নিশ্চিত হবেন। বাবার অফিসের এমডি আদি। কখনো কাউকে বাবার পরিচয়ে নিজেকে পরিচিত করতে সে পছন্দ করে না।

টম এসে নিধির পাশে লেজ নারাচ্ছে আর ঘেউ ঘেউ করছে। হয়ত কিছু বলার চেষ্টা করছে।
“এই টম শোননা
নিধির ফ্লোরে বসে টমকেও বসায়।
টম নিধির মুখের দিকে তাকায়।
“একদিন আমি আর তুই মিলে আচ্ছা মতো ধোলাই দেবো আদু ভাইকে বুঝলি। বেটা খবিশ খালি বকে। তোর মালিক বলে তুই আবার বলে দিস না।
টম ঘেউ ঘেউ করে ওঠে।
” চুপ কর না। তোর ওই খবিশ মালিক সুরসুর চলে আসবে তো।
বিরক্ত হয়ে বলে নিধি।
টম চুপ করে নিধির সাথে চেপে বসে। নিধি মুচকি হেসে টমের নরম নরম শরীরে হাত বুলাই।
“তোকে না আমার বেশ লাগে। কি মিষ্টি তুই। আর তোর মালিক তেঁতো। একটু মিষ্টি হতে বলিস কেমন? আমার মন্টুসোনা
টমের মাথার কাছে মুখটা নিয়ে বলে।

চলবে
এর থেকে বড় হবে না। সরি❤️❤️
চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here