সুপ্ত অনুভুতি পর্ব ১+২

পাত্র পক্ষের সামনে সেজেগুজে গিয়েছিলাম বলে আদিল ভাইয়া আমার রুমে এসে আমার পিটে একের পর এক ঘা দিয়েই যাচ্ছেন৷ ভাইয়াকে চিৎকার করে বলছি মার থামানোর জন্য কিন্তু আমার চিৎকার ভাইয়ার কান অব্দি পৌছাচ্ছে না৷ সে তো মারায় ব্যস্ত৷ শেষে আমাকে মেরে ক্লান্ত হয়ে ভাইয়া চলে গেলেন আর আমিও কাঁদতে কাঁদতে ঘুমিয়ে পড়লাম৷

🏙️🌃🏙️🌃
মধ্যরাতে টের পেলাম কেউ আমার পাশে বসে ফুপিয়ে ফুপিয়ে কাঁদছে৷ আর খুব গভীর ভাবে দেখে যাচ্ছে৷ তার মুখ সম্ভবত আমার মুখের উপরেই আছে যার কারনে তার চোখের জল এসে আমার মুখে পড়ছে৷ আমি কিছুটা নড়ে উঠলাম৷ বেশ কিছুক্ষন পর চোখ খুললাম আমি৷ খুলে দেখলাম আমার রুমে কেউ নেই৷ পোষাকও ঠিকঠাক আছে৷ আর মুখে পানি ঠিকই আছে৷ আমি সারা রুমে আবারও চোখ বুলালাম কিন্তু কেউ নেই দরজা পর্যন্ত ভিতর থেকে লক করা৷
আশ্চর্য কেউ তো এসেছিলো নাহলে আমার মুখে পানি এলো কই থেকে৷ ব্যালকনির কথা মনে আসতেই আমি দৌড়ে ব্যালকনির কাছে চলে এলাম দেখলাম ব্যালকনির দরজা খুলা তারমানে কেউ সত্যি সত্যি এসেছিলো৷ কিন্তু কে??আর কেনই বা আসছে৷ আমি পিছন ফিরে আসতেই দরজার সাথে খেলাম এক ধাক্কা৷ ধাক্কা খেয়ে আমার মনে হয়েছিলো আমি অজ্ঞান হয়ে যাবো৷ যন্ত্রনা সহ্য করতে না পেড়ে আমি ফ্লোরেই বসে পড়লাম আর মনে করতে থাকলাম আজ ঘটে যাওয়া আমার সাথে খারাপ মুহুর্তগুলি৷

ফ্ল্যাশব্যাক☘️☘️🌿

পাত্র পক্ষ আজ আমায় দেখতে এসেছে৷ বাড়িতে আয়োজন চলছে৷ মা, চাচীমনি,দাদু সবাই রান্নার কাজে সকাল থেকেই ব্যাস্ত হয়ে পড়েছে যেন আজই আমার বিয়ে দিয়ে দিবে ওরা৷ আমাকে বাড়ি থেকে বিদায় করার জন্য এদের এতো তাড়া৷ পাত্র সম্পর্কে আমার বাবার বন্ধুর ছেলে৷ ছোট বেলা থেকেই নাকি আমাদের বিয়ে ঠিক হয়ে আছে৷ উনারা আমেরিকায় থাকেন তাদের কোনো মেয়ে না থাকায় উনারা আমাকে যত তারাতাড়ি সম্ভব বউ করে উনাদের কাছে নিয়ে যেতে চান৷ পাত্রেরও নাকি আমাকে খুব ভালো লেগেছে৷ কিন্তু আমার বিয়ে করার কোনো মুড নেই এখন৷ বাবাও আমার কথায় রাজী হতেন কিন্তু উনার বন্ধুর দিকে তাকিয়ে রাজী হননি আর বিয়ের জন্য তাড়া দিচ্ছেন৷ আমার কাজিনরা আমাকে নিয়ে ঠাট্টা করা অলরেডি শুরু করে দিয়েছে৷ খাটের এক কোনে অভাগীর মতো বসে আছি আমি৷ আমাকে কিন্তু এই মুহুর্তে কাঙালীর মায়ের চেয়ে কম অভাগী লাগছেনা৷আদনান ভাইয়া,আদিব ভাইয়া,আহিল ভাইয়া,অদ্রিতা আপু,আয়েশা আপু, সামান্তা আর আমার বেষ্ট ফ্রেন্ড রিংকি৷ সবাই আমাকে এটা ওটা এনে দিচ্ছে৷ হাসানোর চেষ্টা করছে৷ কিন্তু আমি হাসছিনা৷ বিয়ের জন্য এক্সট্রা প্রিপারড্ নিতে হয় কিন্তু আমি মাত্র কালই শুনলাম৷ আমাকে অদ্রিতা আপু আর আয়েশা আপু মিলেই সাজাচ্ছে৷ সাজানো হয়ে গেলে আমার সব কাজিনরা আমায় নিয়ে নিচে গেলো৷ পাত্র পক্ষের সামনে বসানো হলো৷উনারা আমায় আংটি পড়াবার মুহুর্তেই রিফাত(পাত্র) না বলে উঠলো৷ পাত্রের বাবা মাহমুদ আংকেল জিজ্ঞেস করলেন কী হয়েছে???

“বাবা আমি আরুহিকে বিয়ে করতে পারবোনা৷
.
এ তুমি কী বলছো রিফাত৷ ওকে বিয়ে কেনো করবেনা তুমি?কী নেই ওর মধ্যে৷
.
বাবা ওর মধ্যে সবই আছে৷ কিন্তু আমি ওকে বিয়ে করতে পারবোনা৷
.
কিন্তু কেন৷ তুমিতো বলেছিলে যে আরুহিকে তোমার পছন্দ হয়েছে তাহলে আজ কেনো না করছো তুমি৷
.
হ্যা ওকে আমার ভালো লাগে৷ কিন্তু আমি আরেক জনকে ভালোবাসি৷ এ কথাটা আমি তোমাদের আগেই বলতে পারতাম কিন্তু তখন বললে হয়তো তোমরা আমার কথা শুনতেনা তাই আমি আংকেল আর আন্টির সামনে বললাম যেন উনারা তোমাদের বুঝাতে পারেন৷ আর সত্যি বলতে আরুহিরও বয়ফ্রেন্ড আছে তাইনা আরুহি৷
.
না আমার মেয়ের কোনো বয়ফ্রেন্ড নেই৷ ছোট বেলা থেকে বিয়ে ঠিক ছিলো বলে আমার মেয়ে কোনো ছেলেদের দিকেও সেভাবে তাকায়নি৷ আর তোমাকেই বা কী দোষ দিবো তোমরা এখন যে বয়স পার করছো এটা আবেগপ্রবণের বয়স৷ তোমার আমার মেয়েকে বিয়ে করতে হবেনা৷ আমি চাইনা আমার মেয়ে কারও বিচ্ছেদের কারণ হউক৷ আর এটা আরও আগে বললে ভালো হতো৷ যাইহোক বিয়ে করে বউকে সাথে করে নিয়ে এসো৷ (বাবা)
.
মাহমুদ আংকেল বাবার দিকে ছলছল চোখে তাকিয়ে আছেন৷ উনার চোখে সুস্পষ্ট অনুশোচনা দেখা যাচ্ছে৷

বাবা আংকেলের দিকে তাকিয়ে বললেন,,আর হে আমাদের বন্ধুত্বটা যেরকম আছে ঠিক সেইরকমই থাকবে৷ বাবার কথা শুনে মাহমুদ আংকেল বাবাকে হাগ করলেন৷ তারপর সবার কাছে ক্ষমা চেয়ে নিয়ে চলে গেলেন৷

🌿🌿🌿🌿
রাত ১১টা বেজে ১০ মিনিট৷রুমে একা একা বসে আছি৷ আদিল ভাইয়ার কথা ভিষন মনে পড়ছে৷ ভাইয়া আমায় বলেছিলো আমি যাতে পাত্র পক্ষের সামনে না যাই৷ তা না হলে নাকি ভাইয়া আমার অবস্থা খারাপ করে ছাড়বে৷ জীবনের প্রথম ভাইয়াকে আমার সাথে এরকম কথ বলতে দেখেছি৷ ভাইয়া আমাকে এই কথা কেন বলেছিলো সেটাও বুঝতে পারছিনা৷ আমার ভাবনার মাঝেই আমার হাতে হেঁচকা টান পরলো৷ আমি হকচকিয়ে গেলাম৷ আদিল ভাইয়া রক্ত চক্ষু নিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে আছে৷ সিল্কি চুলগুলো উসকোখুসকো হয়ে আছে৷ ফর্সা মুখও লাল হয়ে আছে৷ ভাইয়া আমায় টেনে দাঁড় করিয়ে দাঁতে দাঁত চেপে বললেন,,,তোকে কতবার বলেছিলাম ওদের সামনে যাবিনা৷ শুনিসনি তো আমার কথা৷ এবার দেখ কী হাল করি তোর আমি৷ কথাটা বলে আদিল ভাইয়া উনার বেল্ট খুলে একের পর এক ঘা আমায় দিয়েই যাচ্ছেন৷ আমার শরীরর মরিচের মতো জ্বলছে৷ জীবনেও এরকম ঘা একটাও খাইনি৷ আর আজ এক সাথে এতোগুলো৷ আমি চিৎকার করে ভাইয়াকে বলছি যেন ভাইয়া মারা বন্ধ করে কিন্তু ভাইয়া আমার কথা শুনছেনা নিজের ইচ্ছে মতো মেরেই যাচ্ছে৷ আমি শেষে ভাইয়াকে আটকাতে না পেরে হাল ছেড়ে দিলাম৷ ভাইয়া আমাকে ইচ্ছেমতো মেরে হাপিয়ে বললেন,,,,সি আমার কথা যদি দ্বিতীয় বার অমান্য করিস তাহলে এর চাইতেও আরও কঠিন শাস্তি তোকে পেতে হবে গট ইট৷ কথাটা বলে ভাইয়া আমার রুম থেকে হনহনিয়ে চলে গেলেন৷ আমি খুব কষ্টে দরজার দিকে এগিয়ে গিয়ে দরজা বন্ধ করে শুয়ে পরলাম৷ চোখের পানি বাঁধ মানছেনা৷ এভাবে টর্চার করলো কেন ভাইয়া আমাকে৷ ভালো করে বুঝাতে ওতো পাড়তো৷ আমি কী তার বউ নাকি যে সে যা বলবে আমি তাই করবো৷ আমিও আরুহি আমি কারও কথা শুনবোনা৷

ফ্ল্যাশব্যাক এন্ড🍀☘️🌿

ভাইয়ার এরকম অমানুষিক নির্যাতনের কথা মনে আসতে আবারও আমার চোখ থেকে পানি গড়িয়ে পরছে৷ পিটে হাত দিয়ে দেখলাম তরল কিছুর মতে হাতে লাগছে৷ ঘ্রাণ শুঁকে বুঝতে পারলাম এটা মলম৷ কিন্তু এটা কে লাগালো৷ আদিল ভাইয়া তো জীবনেও লাগাবেনা তাহলে কে??
#সুপ্ত_অনুভূতি🍂♥️
#পর্ব_২
#Writer_Nusrat_Jahan_Sara

সকালে ঘুম থেকে উঠে অনুভব করলাম পিঠে ব্যাথা খুব কম করছে৷ মলমটা তাহলে কাজ করেছে৷ কিন্তু একটা কথা আমার মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে যে আমি চিৎকার করলাম বাট কেউ শুনলো না কেনো৷ কিছুক্ষণ ভাবার পর হঠাৎই মাথায় এলো আমাদের বাসায় সবার রুম সাউন্ড প্রুফ৷ যার কারনে আমার চিৎকার কারও কানে যায়নি৷ আর আদিল ভাইয়াও এই সুযোগটাই নিয়েছে৷ ডাকাত এসে যদি মেরে ফেলে তখন চিৎকার করলেও তো কেউ শুনবেনা৷ না বাবা রিস্ক নেওয়া যাবেনা৷ আজ তো শুধু ভাইয়া মেরেছে অন্যদিন যদি অন্য কিছু করে, সাবধানের মার নেই৷ আমি আজই বাবাকে বলবো যাতে রুম আর সাউন্ড প্রুফ না রাখে৷ আর একা একা ঘুমাবো না সামান্তা,আয়েশা আপু বা অদ্রিতা আপুকে সাথে নিয়ে ঘুমাবো৷ আপাতত এখন ব্রেকফাস্ট করতে হবে৷ তারপর আদিল ভাইয়ার সাথে বুঝাপড়া করতে হবে৷ কী পেয়েছিলো আমাকে যে এভাবে গরুর মতো মারবে৷ আমি উঠে ফ্রেশ হয়ে নিচে গেলাম৷ সবাই তখন ব্রেকফাস্ট করায় ব্যস্ত৷ বাবা আমাকে ডেকে কাছে নিলেন৷ আমি বাবার পাশে গিয়ে ফাঁকা চেয়ারটায় বসে পরলাম৷ বাবা আমাকে কিছুক্ষণ দেখে বললেন,,

“আরুহি তোমার চোখ মুখের এই অবস্হা কেনো?? তুমি কী রাতে রিফাতের ব্যপার নিয়ে কান্না করছিলে?? দেখো মা যা হবার তা হয়ে গেছে৷ তোমার জন্য আমি ওর চাইতেও বেটার কেউ আনবো৷
.
না বাবা তেমন কিছু না৷ আমি তো এখন বিয়ে করতে চাইনি তাই কষ্টের চাইতে বেশি খুশিই হয়েছি৷ বাবা আমি একটা কথা বলতে চাই তোমাকে৷ আসলে আমার মনে হয় আমাদের রুম সাউন্ড প্রুফ না রাখাই বেটার৷ আমাদের যে বিশাল ব্যালকনি কেউ এসে যদি খুনও করে ফেলে তখন চিৎকার করলে ওতো তোমরা কেউ শুনবেনা৷ আর কি দরকার এরকম রুমকে সাউন্ড প্রুফ করে রাখার৷ আমি জাস্ট আমার সমস্যাটা বললাম এখন বাকিটা তোমাদের হাতে৷
.
এতদিন তো তোমার সমস্যা হয়নি তাহলে আজ তোমার সমস্যা হচ্ছে যে৷
.
এতদিন আমি বিষয়টা নিয়ে ভাবিনি তাই৷ আর আগে ভাবলে হয়তো আরও ভালো হতো৷ কথাটা বলে আদিল ভাইয়ার দিকে তাকিয়ে দেখলাম ভাইয়া খাবারের চামচ প্লেটে রেখে আমার দিকে ব্রু কুচকে তাকিয়ে আছে৷ আমি একটু মেকি হাসি দিয়ে বললাম,,,

“আদিল ভাইয়া ইদানিং এখন আমার দিকে বিরক্তি নিয়ে তাকিয়ে থাকো কেনো বলতো৷ আমি ব্যাপারটা কিছুদিন ধরেই খেয়াল করেছি৷ মানে এখন কী আমাকে তোমার কাছে বিরক্তিকর মনে হয় নাকি৷
.
তুই একটু বেশিই কথা বলিস রুহি৷ কখন আমি তোর দিকে বিরক্তি নিয়ে তাকিয়েছি৷ এখন তোর যদি এটা মনে হয় তাহলে আমার কিছু করার নেই৷
.
এই তোরা খাবি কখন? ঝগড়া পরেও করা যাবে এখন খেয়ে নিন ম্যাম এন্ড স্যার৷ (আদনান)
.
আমি আর কিছু না বলে শুধু একটা ব্রেড নিয়ে চিবোতে থাকলাম৷ বাবা আমার খাওয়া দেখে বললেন,,

“একি আরুহি তোমার মা আর চাচীমনি মিলে এতো রান্না করেছে আর তুমি শুধু ব্রেড খাচ্ছো যে৷???
.
এমনি এগুলা পরে খাবো৷
আমি শুধু ব্রেড খাচ্ছি কারণ আদিল ভাইয়ার খাওয়া প্রায় শেষ হয়ে গিয়েছে৷ ভাইয়ার সাথে কাল রাতের বিষয় নিয়ে কথা বলা দরকার৷ এখন যদি আমি অন্য খাবারে মন দেই তাহলে ভাইয়া এতক্ষণে ভার্সিটিতে চলে যাবে৷

আদিল ভাইয়ার খাওয়া শেষ হওয়ার সাথে সাথেই আমি টেবিল ছেড়ে উঠে পরলাম৷ তারপর ভাইয়ার রুমে ভাইয়ার আসার আগেই চলে আসলাম৷ ভাইয়া আমাকে উনার রুমে দেখে ব্রু কুচকালেন তারপর বললেন,,,

“তুই আমার রুমে কী করিস??
.
সিরিয়াসলি তুমি বুঝতে পারছোনা আমি কেনো এসেছি? কাল তুমি আমার সাথে এরকম বিহেভ কেনো করেছিলে৷ কোন সাহসে আমার গায়ে হাত তুলেছিলে৷ তুমি জানোনা আমার দুই ভাই আদনান আর আদিব তারা আমার গায়ে কোনদিন ফুলের টোকাও দেয়নি আর তুমি কী না আমাকে বেল্ট দিয়ে মেরেছো৷ আমি এতোদিন তোমাকে আদনান আর আদিব ভাইয়ার মতোই নিজের ভাই ভেবে এসেছি আর তুমি নাকি তার এমন প্রতিদান দিলে বেল্ট দিয়ে পিটিয়ে৷ আমি তোমাকে ভাই ভেবে আসলেও তুমি আমায় কোনদিন তোমার বোন সামান্তা আর অদ্রিতার আপুর মতো ভেবে আসোনি৷ পারতে নিজের বোনদের এভাবে পেটাতে৷ ওদেরকে পিটানোর সময় না তোমার হাত কাঁপতো কিন্তু আমাকে মারার সময় তোমার হাত একটুও কাঁপেনি৷ কী দোষ ছিলো আমার শুধু তোমার কথা অমান্য করে পাত্র পক্ষের সামনে গিয়েছিলাম বলে৷ ওরাতো বিয়ে ভেঙে দিয়েছে তারপরও কেনো তুমি আমায় মেরেছিলে বলো৷আমি জানি আমি কোন ভুল করিনি তারপরও যদিও কোন ভুল করেই থাকি তাহলে একটা চড় মারতে তা না করে তুমি সোজা আমায় ছিঃ,,৷ তোমার উপরে নারী নির্যাতনের কেস চুকবো আমি৷
.
আদিল ভাইয়া আমার দুই কাঁধে হাত রেখে বললেন,,

আমি জানিনা রুহি আমার কেনো তখন রাগ উঠে গিয়েছিলো৷ রিফাত তোর দিকে এমন দৃষ্টিতে তাকিয়েছিলো যেটা দেখে আমার একদম সহ্য হয়নি৷ আর তোকে না করেছিলাম কারণ আমি খুঁজ নিয়ে দেখেছিলাম রিফাতের ক্যারেক্টার একদম ভালো নয়৷ আমার এক বন্ধু থাকে আমেরিকায় সে রিফাতকে খুব ভালো করেই চিনে৷ আর তার কাছ থেকেই শুনেছিলাম সব৷ আর তোকে মানা করেছিলাম যাতে ওর সামনে না যাস যদি ও তোকে বিয়ে করে নিতো তাহলে তোর লাইফ পুরো হেল হয়ে যেতো৷ ও মেয়েদের মধ্যে আসক্ত ঘরে বউ রেখেই বাইরে ফষ্টিনষ্টি করতে যেতো৷ বাঙালী নারী সব সহ্য করলেও নিজের স্বামীকে অন্য মেয়ের সাথে কিছুতেই সহ্য করতে পারেনা৷ তুই কী করে সহ্য করতি তোর স্বামীকে অন্য মেয়ের সাথে দেখে৷ তখন আমার কথা শুনিসনি তাই রাগ উঠে গিয়েছিলো৷ তুই তো জানিসই আমি রাগলে সব কিছু আমার হাতের বাইরে চলে যায়৷ নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারিনা৷ শত হউক তোকে এরকম বেল্ট দিয়ে মারা আমার উচিৎ হয়নি৷ ক্ষমা করে দিস আমায়৷
.
আমি ভাইয়ার দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে বললাম “সব না-হয় বুঝলাম কিন্তু কাল রাতে আমার রুমে কে এসেছিলো আর আমার পিটেই বা কে মলম লাগিয়েছিলো৷

ভাইয়া আমার কাধঁ ছেড়ে পকেটে দুই হাতগুজে একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বললেন,,

“আমিই গিয়েছিলাম৷ যখন বুঝতে পারলাম তোর সাথে খুন অন্যায় করে ফেলেছি তখন আমার ভিষন অনুশোচনা হচ্ছিলো৷ তোর হয়তো খুব ব্যাথা করছে সেটা ভেবেই আমি মলম নিয়ে গিয়েছিলাম৷ এবারের মতো আমায় মাফ করে দে আই সোয়ার আর কখনো তোর গায়ে হাত তুলব না আমি৷ আর না তোর কোনো ম্যাটারে ইন্টারফেয়ার করবো৷
.
তার মানে তুমি আমার পিটে হাত দিয়েছো৷
.
তুই যেভাবে বিষয়টা নিচ্ছিস সেরকম কিছুইনা৷ তুই উপুর হয়ে ঘুমাচ্ছিলিস আর টি-শার্ট পড়ে থাকায় আমি খুব সহজেই তোর পিটে মলম লাগাতে পেরেছিলাম৷ ওই যে সিনেমাতে দেখিসনা চোখ বন্ধ করে যেমন করে কাজ করে ঠিক সেরকমই কিছুটা৷
.
তাহলে ঠিক আছে কথাটা বলে আমি চলে এলাম ভাইয়ার রুম থেকে৷যাইহোক আমার গায়ে হাত তুলেছে এতো সহজে মাফ করবোনা আমি হুহ!!

চলবে♥️

[

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here