হৃদয়ের একাংশ তুই পর্ব -১১

#হৃদয়ের_একাংশ_তুই
#Part_11
#Writer_NOVA

আয়াজ হাতঘড়ির দিকে তাকিয়ে সামনের রাস্তার দিকে নজর দিলো। সময় এখন ১২ টা বেজে ২৭ মিনিট। বর্ষার সাথে দেখা হওয়ার এই একটাই উপায়। সেদিন বর্ষার সাথে এখানে প্রথম দেখা হয়েছিলো৷ তার মন বলছে আজও দেখা হবে। সাথে চাপা ভয় কাজ করছে। যাতে হৃদ স্পন্দন ঢিপঢিপ শব্দ হচ্ছে। যদি দেখা না হয়। রোদে মুখে লাল আভা ছড়িয়ে গেছে। শার্ট ভিজে জবজবে। সেদিকেও লক্ষ্য নেই আয়াজের। কয়দিন ধরে রাতে ঘুম হয় না। একটু চোখ লেগে এলে বর্ষার হাসি মুখটা ভেসে উঠে। কখনও বা খিলখিল হাসিতে চমকে ঘুম থেকে জেগে যায়। সারারাত এপাশ ওপাশ করেও দুচোখের পাতা এক করতে পারে না। রাস্তার কিনারে পরে থাকা একটা ছোট কাঠের টুকরো লাথি বসালো। সেটাকে ফুটবলের মতো ঠেলে অন্য পাশে নিয়ে গেলো। অলস সময় পার করতে যখন কোন কাজ না থাকে, তখন এসব কাজই সময় কাটাতে দারুণ লাগে। আয়াজেরও তেমন লাগছে। কাঠের টুকরোটা দিয়ে খেলতে খেলতে সামনের দিকে তাকাতেই মুখে খুশীর ঝলকানি দিলো। বর্ষা আসছে।

‘হেই মিস বুলবুলি।’

আয়াজ দৌড়ে বর্ষার সামনে এসে হাঁটুতে ভর দিয়ে হাঁপাতে লাগলো। সেদিনের মতো চমকে উঠলো বর্ষা। নিচ দিকে তাকিয়ে একমনে হেঁটে আসছিলো সে। আচমকা আয়াজ চলে আসায় সে চমকে গেছে। আয়াজ মুখ উঠিয়ে কপালে পরা অগোছালো চুলগুলো পেছন দিকে ঠেলে দিলো৷ উচ্ছ্বসিত কন্ঠে বললো,

‘অবশেষে তুমি এলে?’

বর্ষা কথার অর্থ বুঝতে না পেরে অদ্ভুত ভঙ্গিতে তাকালো। কপালে প্রশ্নসূচক চিহ্ন একে বললো,

‘জ্বি, কি বললেন আপনি? আমি ঠিক বুঝলাম না।’

আয়াজ জিহ্বা দিয়ে ঠোঁট ভিজিয়ে হাসির রেখা বজায় রেখে বললো,

‘কিছু না। তোমার জন্য অপেক্ষা করছিলাম।’

‘কেনো?’

‘এমনি।’

‘ওহ!’

বর্ষার এতো শান্তশিষ্ট ব্যবহার দেখে আয়াজ সুক্ষ্ণ নজরে ওর দিকে তাকালো। তাকিয়ে চাপা স্বরে আৎকে উঠলো। মেয়েটার চেহারা একি দশা! চোখ, মুখ শুকিয়ে গেছে। চোখের নিচের কালো দাগ জানান দিচ্ছে রাতে ঘুমায় না। চোখ দুটো ভেতর দিকে চলে গেছে। ক্লান্ত চোখের চাহনি। ঠোঁটে মলিন হাসি। যা জোর করে ফুটিয়ে রাখা হয়েছে। আচ্ছা মেয়েটার হয়েছে কি? এতো প্রাণচাঞ্চল্য মেয়েটার এই বেহাল অবস্থা কেন?

আয়াজকে এক ধ্যানে নিজের দিকে তাকিয়ে থাকতে দেখে বিব্রত পরিস্থিতিতে পরে গেলো বর্ষা। ছেলেটা কেমন ড্যাব ড্যাব করে তাকিয়ে আছে। এভাবে তাকিয়ে থাকে নাকি কেউ। একবার নিজের হিজাবের দিকে তাকিয়ে দেখলো সেটা ঠিক আছে কিনা। আরেকটু টেনেটুনে ঠিক করে গলা ঝেড়ে আয়াজের চোখের সামনে তুড়ি মেরে বললো,

‘হ্যালো, রাস্তা ছাড়ুন বাসায় যাবো।’

‘ওহ হ্যাঁ!’

ইতস্তত ভঙ্গিতে বললো আয়াজ। নজর সরিয়ে মাথা নিচু করে ফেললো লজ্জায়। ইশ, বর্ষা কি ভেবেছে? এরকম আহাম্মকের মতো তাকিয়ে থাকা ঠিক হয়নি। পরিস্থিতি সামাল দিতে আয়াজ বললো,

‘তুমি কি রাতে ঘুমাও না?’

‘তা দিয়ে আপনার কি কাজ?’

বর্ষার তেজি স্বরের উত্তর। আয়াজ মুচকি হেসে বললো,

‘আমার কথার উত্তর দাও। আমি বলছি।’

‘আমি উত্তর দিতে বাধ্য নই।’

আয়াজ আবারো হাসলো। বর্ষাকে পাশ কাটিয়ে পাশাপাশি দাড়িয়ে গেলো। তারপর হেলতে দুলতে চলতে চলতে বললো,

‘চলো বাকি কথা হাঁটতে হাঁটতে বলি।’

বর্ষা কথার পিঠে কিছু বললো না। চুপচাপ হাঁটতে লাগলো। আয়াজের শারীরিক গঠন ছিমছাম। বয়স কত হবে তা আন্দাজ করতে পারলো না বর্ষা। এই ২৪/২৫ হবে। বর্ষা ভাবলো। কালো টি-শার্টের ওপর ডিপ ব্লু কালার চেক শার্ট পরা। শার্টের বোতাম গুলো সব খোলা। কালো প্যান্ট, পায়ে সাদা কালো সংমিশ্রণ রং-এর কেডস। মাথার চুলগুলো একটু বেশি বড়। যা সাইড করে কপালে পরে আছে এলোমেলোভাবে।বর্ষার মনে হলো সামনের চুলগুলো মুঠ করে ঝুঁটি পাকানো যাবে। চোখ দুটো ছোট। তবে সেই চোখের ভাষা অস্পষ্ট। গম্ভীর নাকি প্রাণোচ্ছল তা বোঝা দায়।

চোখ সরিয়ে নিলো বর্ষা। মনে মনে তোওবা কাটলো। অচেনা, অজানা একটা ছেলের দিকে বেহায়ার মতো তাকিয়ে থাকার কারণে। আয়াজ দৃষ্টি সামনের দিকে তাকিয়ে বললো,

‘তোমার নামটা জানা হলো না।’

‘জেনে কি করবেন?’

‘বড্ড বেশি প্রশ্ন করো তুমি। কথার উত্তর দাও।’

বাচ্চাদের মতো ঠোঁট উল্টে বললো আয়াজ। বর্ষা মিটমিট করে হেসে উঠলো। বর্ষার উত্তরের আশা না করে আয়াজ নিজের হাত বাড়িয়ে দিয়ে বললো,

‘আমি আয়াজ খান।’

বর্ষা হাত মিলালো না। ক্ষীণস্বরে বললো,
‘সরি আমি অচেনা মানুষের সাথে হাত মিলাই না।’

‘ওহ, ওকে! নো প্রবলেম।নামটা?

বর্ষা ভেবেছিলো বলবে না। কি ভেবে আয়াজের চোখে চোখ মিলিয়ে বললো,

‘বর্ষা ইমরোজ।’

আয়াজ বিরবির করে বলে উঠলো,
‘নাইস নেম। বর্ষায়াজ!’

‘আমি আর এই বাড়িতে থাকবো না।’

মিনা বেগমের রুমের সামনে দাঁড়িয়ে চিৎকার করে উঠলো বর্ষা। খাটে বসে বউ, শাশুড়ী গল্প করছিলো। হঠাৎ বর্ষার চিৎকারে দুজন হকচকিয়ে দরজার দিকে তাকালো। মিনা বেগম মেয়েকে জিনিস করলেন,

‘কি হয়েছে?’

‘কি হয়নি তাই বলো?’

বর্ষা ধপধপ পায়ে রুমের ভেতর ঢুকে খাটের একপাশে বসলো। অনামিকা বললো,

‘বলবে তো কি হয়েছে ননদী।’

‘আর বলো না ভাবী। আজব এক দালানে বাস করি। উপরের তলার মানুষ রাত বারোটা বাজে পাটায় মসলা বাটে।’

মিনা বেগম, অনামিকা মুখ টিপে হেসে উঠলো। বর্ষা তা দেখে হুংকার দিয়ে উঠলো,

‘তোমরা হাসছো? এদিকে আমার সাধের ঘুমের বারোটা বেজে গেছে।’

অনামিকা হাসি লুকিয়ে বললো,
‘ভাড়া বাসায় এরকম একটু-আধটু হয়।’

বর্ষা চোখ কপালে তুলে চেচিয়ে উঠলো,
‘একে তুমি একটু-আধটু বলো? আরেক কাহিনি জানো?’

মিনা বেগম উৎসুক চোখে জিজ্ঞেস করলো,
‘কি?’

বর্ষা বড় করে শ্বাস টেনে বললো,
‘পাশের ফ্ল্যাটের রহমত চাচার সারাদিন তার বউয়ের সাথে ফাটাফাটি লেগে থাকে। এতো ফাটাফাটি বোধহয় তামিল একশন মুভিতেও নেই। পাশের দালানের লাগোয়া ফ্ল্যাটে এক বুড়ি থাকে। আল্লাহর চব্বিশটা ঘণ্টা খুকখুক করে কাশতেই থাকে। আমি যাস্ট বিরক্ত। এই বাসায় আমি কিছুতেই থাকবো না।’

বর্ষা থামতেই অনামিকা, মিনা বেগম ঘর কাঁপিয়ে উচ্চস্বরে হেসে উঠলো। এতখন বহু কষ্টে হাসি আটকে রেখেছিলেন। এখন সম্ভব নয়। হাসতে হাসতে অনামিকা হেলে পরছে। মিনা বেগম মুখ ঢেকে হেসে যাচ্ছে। বর্ষা কড়া গলায় কিছু বলতে গিয়ে থেমে গেলো। মা-ভাবীর হাসি দেখতে ভালো লাগছে। তবুও কপট রাগ দেখিয়ে বললো,

‘ধূর, কাদের কাছে বিচার দিতে এলাম। এরাও মজা নিচ্ছে। আমি থাকবোই না। দুচোখ যেদিকে যায় সেদিকে চলে যাবো।’

হনহনিয়ে নিজের রুমে চলে গেলো। এখন বৃষ্টিকে নিয়ে সুরভির ফ্ল্যাটে যাবে। তারপর সুরভিকে নিয়ে ছাদে চলে যাবে। আজ সারা বিকেল আড্ডা দিবে। অনেক দিন ধরে আড্ডা দেওয়া হয় না। মাঝে যা ঝড় গেলো। অনেক কষ্টে নিজেকে শক্ত করে উঠে দাঁড়িয়েছে। এবার সে ভাঙবে না।

হৃদয় প্রতিদিনের মতো আজও বর্ষার নাম্বারে ডায়াল করলো। সে ধরে নিয়েছিলো প্রতিদিনের মতো মোবাইল সুইচ অফ বলবে। কিন্তু তাকে অবাক করে দিয়ে রিং হলো। কিন্তু কল ধরলো না। আবার দিলো। যতবার কল দিলো ততবার কল কেটে গেলো। হৃদয় বুঝতে পারলো বর্ষা ইচ্ছে করে কল কেটে দিচ্ছে। রাগে কপালের রগ ফুলে উঠলো। হাতে থাকা মোবাইলটা মুষ্টিবদ্ধ করে সর্বশক্তি দিয়ে ধরলো। তারপর হুট করে সামনে দেয়ালে মোবাইলটা ছুঁড়ে মারলো। মোবাইল পাঁচ টুকরো হয়ে এদিক সেদিক ছড়িয়ে পরলো। হৃদয়ের রাগ কমেনি। চুলগুলো মুষ্টিমেয় করে জোরে চেচিয়ে উঠলো,

‘কাজটা তুই ঠিক করছিস না বর্ষা।’

হৃদয়ের কল দেখে বারবার কেটে দিচ্ছিলো বর্ষা। ক্লাশে কল রিসিভ করার সুযোগ নেই। স্যার গুরুত্বপূর্ণ একটা অধ্যায় নিয়ে আলোচনা করছে। তাছাড়া হৃদয়ের কল সে এমনিও রিসিভ করতো না। বুক ভরে দীর্ঘ শ্বাস ছাড়লো বর্ষা। সময় কোনদিকে চলছে সে জানে না ভাগ্যের কাছে নিজেকে সঁপে দিয়েছে। ভাগ্য যেদিকে নিবে সে সেদিকে যাবে। কোন বিরোধিতা করবে না।

একবার ভাবলো সম্পর্কটা আগেই ভালো ছিলো। যাতে শুধু বন্ধুত্ব ছিলো। ভালোবাসা এসে সব শেষ করে দিলো। একূলও গেলো, ওকূলও গেলো। এর জন্য বর্ষা মনেপ্রাণে রাফিকে দোষারোপ করে। কিন্তু আসলে কি রাফির দোষ? সম্পর্কটাকে আগের মতোই চলতে দিতো তাহলে অবশ্য বন্ধুত্ব টিকে থাকতো। লুকিয়ে না হয় দুজন দুজনকে ভালোবাসতো। চোখের কোণ পানিতে ভরে যাচ্ছে বর্ষার। নিজের বোকামির হিসাব কষছে সে।

বাকি সময় ক্লাশে মনোযোগ দিতে পারেনি বর্ষা।ঘন্টা পরতেই স্যারের পেছনে বেরিয়ে গেলো। আরো একটা ক্লাশ আছে।কিন্তু বর্ষা তা করবে না। কলেজে বর্ষার তেমন ক্লোজ কোন ফ্রেন্ড নেই। একটা মেয়ের সাথে ইদানীং চলে। নাম সোহানা। মেয়েটা ভীষণ চুপচাপ স্বভাবের। বর্ষার মতো ওর কোন ফ্রেন্ড নেই। হৃদয় থাকতে বর্ষার কোন ফ্রেন্ডের প্রয়োজন হয়নি। কিন্তু এখন তো নেই। তাই মেয়েটার সাথে ভাব জমিয়েছে।

‘এখন কোথায় যাবি বর্ষা? আমি একটু ক্যান্টিনে যাবো।’

সোহানা বললো। বর্ষা আনমনে হাঁটছে। সোহানার কথা তার কর্ণ গহ্বরে ঢুকেনি। সোহানা বর্ষার কাঁধে হাত রেখে ঝাঁকি দিয়ে বললো,

‘এই হারালি কোথায়?’

‘হ্যাঁ, ডাকছিলি সোহু?’

বর্ষা হকচকিয়ে গেলো। সোহানা মৃদুস্বরে ধমকে বললো,

‘আজকাল থাকিস কোথায়?’

‘কোথাও না। তুই কি বলছিলি তাই বল।’

‘ক্যান্টিনে যাবো।’

‘হুম চল।’

ক্যান্টিনে যাওয়ার পথে বর্ষার মোবাইল বেজে উঠলো। বর্ষা মোবাইল বের করতে করতে কল কেটে গেলো। এতে বর্ষার কোন ভাবান্তর হলো না। সোহানা জিজ্ঞেস করলো,

‘কে কল দিচ্ছে তোকে? ক্লাশেও দেখলাম বারবার কল কেটে দিচ্ছিস।’

‘আরে আননোন নাম্বার।’

তখন যে হৃদয় কল দিয়েছিলো তা এড়িয়ে গেলো বর্ষা। কিন্তু এখন সত্যি আননোন নাম্বার থেকে কল এসেছে। সোহানা বললো,

‘দেখ কে কল দিয়েছে। এতবার কল করছে। কোন দরকার হতে পারে।’

‘ধূর, যার দরকার হবে সে কল করবেই নে।’

বর্ষা কথা শেষ করার আগে আবার কল বেজে উঠলো। পূর্বের আননোন নাম্বার। বর্ষা রিসিভ করে কানে দিতেই অপরপাশ থেকে সালাম দিলো। বর্ষা সালামের উত্তর নিয়ে জিজ্ঞেস করলো,

‘কে বলছেন?’

‘আমি রাফি।’

রাফির নাম শুনে বর্ষার মেজাজ বিগড়ে গেলো। দাঁতে দাঁত চেপে জিজ্ঞেস করলো,

‘কেনো কল করেছেন?’

‘তোমার আর হৃদয়ের মধ্যে কি হয়েছে?’

‘কিছু না।’

‘নাহ কিছু তো হয়েছে। তোমাদের দুজনকে অনেকদিন একসাথে দেখি না। কখনো তো এমন হয়নি।’

বর্ষার ইচ্ছে করছিলো সবকিছু রাফিকে বলে ইচ্ছে মতো কতগুলো কড়া কথা বলে দিতে। কিন্তু হৃদয় ওর দুই হাত ধরে ওকে দিয়ে কথা আদায় করে নিয়েছে যে বর্ষা কখনো ওদের একে অপরের ভালোবাসার কথা রাফিকে বলবে না। এতে রাফি কষ্ট পাবে। বর্ষার তখন ইচ্ছে করছিলো হৃদয়ের গাল ফাটাতে। কিন্তু কথা দিয়ে রাগে গজগজ করতে করতে চলে এসেছে।

‘হ্যালো, বর্ষা। তুমি কি আমার কথা শুনতে পাচ্ছো?’

‘হুম বলুন।’

‘কি হয়েছে তোমাদের মধ্যে বলো না। হৃদয়কে কবের থেকে জিজ্ঞেস করছি। কিন্তু ও কিছু বলছে না।’

‘আমার বাবা ভাই ওর সাথে চলতে মানা করছে। তাই আমি ওর সাথে থাকি না।’

‘কেনো?’

‘তা আপনাকে বলতে ইচ্ছুক নই আমি।’

কথাটা বলে রাফির উত্তর দেওয়ার আগে মুখের ওপর কল কেটে দিলো। সাথে সাথে মোবাইল বন্ধ করে ফেললো। যাতে রাফি আর কল দিতে না পারে। তাকে এখন সব ছেড়ে নিজেকে ভালো রাখতে হবে। যে তাকে চায় না তার জন্য নিজেকে কষ্ট দেওয়া নিছক বোকামি ছাড়া অন্য কিছু নয়।

#চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here