১৬ বছর বয়স পর্ব ৩৫+৩৬

গল্পর নাম : #১৬_বছর_বয়স
#পর্ব_৩৫ : #পেইন্টিং
লেখিকা : #Lucky

আমি চোখ বড়সড় করে তাকিয়ে বিছানা থেকে নামতে চাইলাম। কিন্তু শাওন আমার দুই হাত নিয়ে আমাকে বিছানার সাথে চেপে ধরল।
আমি ভয়ে রীতিমতো হাপাচ্ছি। উনি সাথে সাথে আমার গলায় মুখ ডুবিয়ে দিয়ে কিস করলেন। আমি চমকে বলে উঠলাম, কি করছেন আপনি!
সারা শরীর শিউরে উঠল আমার। আর আমি চোখ বন্ধ করে ফেললাম। আমি চেষ্টা করেও আমার হাতদুটো ছাড়াতে পারলাম না। এদিকে শরীর ভয়ে কাপছে আমার।
শাওন গলা থেকে মুখ সরিয়ে আমার কানে কানে বলল, “খেলা মানে বোঝো? এগুলোর থেকেও মারাত্মক কিছুও করতে পারি।”
আমি চোখ খুললাম আর ভয়ে ভয়ে ওনার দিকে তাকালাম।
উনি শান্ত চোখে তাকিয়ে বললেন, “কিন্তু আমি তোমাকে জোর করতেই চাই না। কখনো করবও না। কারণ আমি এসব শিখি নি। তার চেয়েও বড় বিষয় হলো আমি রেস্পেক্ট করি তোমাকে। তোমার সাথে খেলার ইচ্ছে হলে অনেক আগেই এগুলো করে তোমাকে ছেড়ে দিতাম।”
আমি চোখ সরিয়ে নিলাম।
“আর বাকি রইল ডিভোর্স! জীবনেও পাবা না। আমার কাছে থাকতে তুমি বাধ্য। তোমার ভালো লাগুক আর না লাগুক। You are doomed to be mine.” রেগে বলে উঠল শাওন।
আমি অবাক হয়ে ওনার চোখের দিকে তাকালাম। উনি আমাকে ছেড়ে দিয়ে রুম থেকে বের হয়ে গেলেন।
আমি ওভাবেই শুয়ে স্তম্ভিত হয়ে রইলাম। আমি কি তাহলে ওনাকে ভুল বুঝলাম! আমি উঠে বসলাম আর দরজার দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে রইলাম।
তারপর রুম থেকে বের হয়ে ওনার রুমে চলে গেলাম। কিন্তু উনি কোথাও নেই। কোথায় গেলেন উনি! আমি ওনার রুম থেকে বের হয়ে ছাদে গেলাম। সেখানেও উনি নেই।
উফ এখন এত রাতে কোথায় খুজবো ওনাকে আমি! সারা বাড়ি খুজে ওনাকে পাওয়া গেল না। আমি ক্লান্ত হয়ে শাওনের রুমে এলাম।
তারপর মন মরা হয়ে বিছানায় বসলাম। এখন সত্যিই অনেক খারাপ লাগছে। কোথায় চলে গেলেন উনি!
আমি মনমরা হয়ে বসে রইলাম। বসে থাকতে থাকতে ঘুমিয়েও গেলাম।
ভোরের দিকে চোখ খোলার সাথে সাথে প্রথমেই এদিক ওদিক দেখে নিলাম। শাওন কোথাও নেই। ফোন করব? সেটা করলেই ভালো হয়।
আমি জলদি নিচে নেমে নিজের রুমে গেলাম। তারপর নিজের ফোনটা নিয়ে শাওনকে ফোন করলাম।
ফোন ঢুকছেই না। এখন! আমার মোটেও ভালো লাগছে না। কোথায় খুজবো এখন আমি ওনাকে! কোথায় চলে গেছেন উনি?
আমি সকাল অব্দি অপেক্ষা করলাম। ব্রেকফাস্ট এর টেবিলে এক এক করে সবাই হাজির হলো শুধু শাওনই নেই।
আমি মন মরা হয়ে একটা চেয়ারে বসলাম। আজ আমার শাশুড়ীও ত শাওনকে খুজছে না। আজীব! এমনি ত ছেলে ছেলে করে মরে যান। আমি শান্তিতে বসতেও পারছি না, মনের মধ্যে খচখচ করছে।
“কি রে কি হয়েছে তোর?” বলল পিশামনি।
আমি চমকে উঠলাম। আর না সূচক মাথা নেড়ে বললাম, কিছুই ত না।
“ত এমন শুকিয়ে আছিস কেন? খা বেশি বেশি খা।” বললেম পিশামনি।
কিন্তু আমার গলা দিয়ে ত কিছুই নামছে না।
অনেক কষ্ট করে কিছু খেয়ে উঠে গেলাম। সকাল গড়িয়ে দুপুর হলো শাওনকে পেলাম না। কাকে জিজ্ঞেস করব ওনার কথা।
আমি আজ সারাদিন ডাইনিং আর ড্রয়িং রুমেই ঘুরঘুর করলাম।
কিন্তু ওনাকে ফিরতে দেখলাম না।
উনি কি চলে গেল! আমার জন্য ত প্রচুর রেগে গেছিলেন গত রাতে।
আমি সারাদিনে অনেকবার ফোন করলাম কিন্তু শাওনের ফোনে কল গেলই না। গরিলাটা কি আমাকে ব্লক করে দিয়েছে?

রাতে আমি শাশুড়ীকে প্রশ্ন করেই ফেললাম যে উনি কোথায়!
শাশুড়ী ভ্রুকুচকে তাকিয়ে বলল, বউ হয়ে নিজের স্বামীর কোনো খবরই রাখো না। সকাল থেকে সে নেই কিন্তু তুমি দিব্যি শান্তিতে আছ! কেমন মেয়ে তুমি?
আমি চুপচাপ মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে রইলাম।
“অদ্ভুত। আমারই ভুল ছিল। মনে করেছিলাম ওই সুইটি মেয়েটার জন্য হয়তো আমার ছেলে বিপথে চলে যাবে তাই বিয়ে দিলে ভাল। কিন্তু তাতে করে ত উলটো হলো। তোমার সাথে বিয়ে দিয়ে কি লাভটা হলো বুঝলামই না।” অনেক ক্ষোভের সাথে বলতে লাগলেন শাশুড়ী।
উনি ঠিকই বলেছেন আমি নিজেই ত ওনাকে কষ্ট দিয়ে ফেলছি।
উনি বিরক্ত হয়ে আরো বললেন,”এখন কি আমার তোমাকে শিখিয়ে দিতে হবে কিভাবে তুমি শাওনের সাথে রোমান্স করবা?”
আমি চোখ বড়সড় করে তাকালাম।
নিপা রান্নাঘরের দিকে আসছিল। এগুলো শুনে হেসে দিয়ে বলল, “রিল্যাক্স কাকিমনি। আমি আছি ত।”
তারপর আমার দিকে এগিয়ে এসে বলল, আসো তোমাকে শিখাচ্ছি।
আমি জড়সড় হয়ে বললাম, মানে?
নিপা আমার হাত ধরে টেনে নিয়ে যেতে যেতে বলল, আসো ত। এত কিসের প্রশ্ন করাকরি। ভাল জিনিস শিখাবো তোমাকে।
আমি অনেক চমকে গেলাম। হঠাৎ সবাই এসব নিয়ে পরেছে কেন! এদিকে উনি কোথায় সেটাও ত বললেন না শাওনের মা। এখন কিভাবে জানবো আমি?
নিপা সেদিন লজ্জাশরমের মাথা খেয়ে কি কি সব বলতে লাগল সেটা কল্পনার বাহিরে। আমি জীবনেও এসব কিছু করতে পারব না। মরে গেলেও না।
“উনি কোথায়?” আমি প্রশ্ন করলাম নিপাকে।
নিপা ভ্রু উঁচু করে বলল, কেনো ট্রাই করতে চাচ্ছ এখনি!
আমি চোখ বড়সড় করে চমকে বলে উঠলাম,”না,ছি।”
“কিসের ছি?” ভ্রুকুচকে বলল নিপা।
“যাই হোক উনি কোথায়!” ব্যস্ত হয়ে বললাম আমি।
নিপা একটু চিন্তা করে বলল, জানিনা আমি।
বলেই হেসে দিলো।
আমি শুকনো মুখ করে ওর দিকে তাকিয়ে রইলাম।

এখন অপেক্ষা ছাড়া উপায় নেই। কিন্তু আমার ত আর ভালো লাগছেনা। আর কত অপেক্ষা করব আমি। রাতে খাবার টেবিলেও শাওনকে দেখলাম না। উনি কি চলে গেছেন ঢাকা?
আমি কিছু না খেয়েই খাবার নাড়াচাড়া করে উঠে গেলাম।
একটা পুরো দিন হয়ে গেল আমি ওনাকে না দেখতে পেলাম, না জানতে পারলাম উনি কোথায়! আমি আবার শাওনকে ফোন দিলাম। এখনো বন্ধ।
হঠাৎ মনে হলো বাসার টেলিফোন দিয়ে ফোন দিলে হয়ত যাবে।
আমি বের হয়ে টেলিফোন দিয়ে কল করলাম। তাও বন্ধ বলে। এখন সত্যিই অনেক টেনশন হচ্ছে। আর একটু সময়ের জন্যও যদি আমাকে এভাবে থাকতে হয় তাহলে আমি মরেই যাব। আমি ওখানে বসেই কাদতে শুরু করে দিলাম।
“শাওন ফিরে গেছে।” পিছন থেকে বলল শাওনের মা।
আমি হকচকিয়ে গেলাম আর চোখের জল মুছে নিলাম।
“বেশি কষ্ট হলে কালই চলে যাও। কিন্তু এত রাতে যাওয়া চলবে না।” শক্ত মুখ করে বলে উনি চলে গেলেন।
উনি আমাকে না নিয়ে ঢাকা কিভাবে চলে গেলেন! অসভ্য গরিলা একটা। কাল গিয়ে যদি ওনার ঘাড় না মটকাই আমি।
কোনো রকম রাত কাটিয়ে পরের দিন আমি ভোর হবার সাথে সাথে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হয়ে গেলাম।
ঢাকা ফিরেই প্রথমেই ওনার অফিসে গেলাম। কিন্তু উনি নেই। পরে আমি বাড়িতে চলে এলাম। কিন্তু উনি বাড়িতেও নেই।
এখন কোথায় খুজবো আমি! এটা কেমন শাস্তি দিচ্ছেন উনি আমাকে! আমি ত আর সহ্যই করতে পারছি না।
আমি এগিয়ে গিয়ে সোফায় বসে কাদতে লাগলাম। আর চোখ মুছতে লাগলাম। একবার একটু আমি ওনাকে দেখতে পেলেই হবে। আমি আর কিছুই চাই না এখন। কিছুক্ষণ বাদে জোরেই কাদতে লাগলাম।

হঠাৎই শাওন বাসায় ঢুকল। আমি সাথে সাথে ঘাড় ঘুরিয়ে তাকালাম।
শাওন ভ্রুকুচকে তাকিয়ে বলল, তুমি এখানে কেন!
আমি ওনাকে দেখে যেন সস্তি পেলাম। আর দৌড়ে গিয়ে ওনাকে জড়িয়ে ধরলাম।
আর কাদতে কাদতে বললাম, আপনি আমাকে ছেড়ে চলে এসেছেন কেন! কেনো এসেছেন! আমি মনে করেছি আপনাকে আমি আর দেখতে পাব না। আপনি আমার ফোনও ধরেন নি। আমি কতটা ভয় পেয়ে গেছিলাম জানেন আপনি!
বলেই আমি জোরে জোরে কাদতে লাগলাম।
“কান্না থামাও।” শাওন শান্ত গলায় বলল।
আমি কান্না থামালাম না।
শাওন আমাকে ছাড়িয়ে নিয়ে আমার দিকে তাকালো। আমি এখনো কেদেই যাচ্ছি। শাওন দুইহাত দিয়ে আমার চোখের জল মুছে দিল। তারপর আমার দিকে তাকিয়ে রইল। আমি চোখ সরিয়ে নিলাম আর কান্না থামালাম।
এখন অনেক লজ্জা লাগছে।
“আমি কাছে আসলেও সমস্যা, দূরে গেলেও সমস্যা! কি চাচ্ছ তুমি?” শাওন সিরিয়াস হয়ে বলল।
আমি কি বলব বুঝতে না পেরে এদিক ওদিক তাকাতে লাগলাম। শাওন আমাকে পাশ কাটিয়ে নিজের রুমে চলে গেল।
উনি কি রেগে আছেন! এখন কি করব! আমি ঠোঁট কামড়ে চিন্তা করতে লাগলাম।
আমি ভয়ে ভয়ে ওনার রুমে ঢুকলাম। উনি ড্রেসিং টেবিলের সামনে ঘড়ি খুলছিলেন। আমার দিকে একবার তাকিয়ে আবার চোখ সরিয়ে নিজের কাজে ব্যস্ত হয়ে গেলেন।
আমি সত্যিই বুঝতে পারছি না কি করব। এদিকে হার্টও জোরে জোরে বিট করছে।
উনি শার্টের হাতা ভাজ করতে করতে আমার দিকে এগিয়ে আসতে লাগলেন।
আমি চোখ সরিয়ে অন্যদিকে তাকালাম। উনি আমাকে পাশ কাটিয়ে বের হয়ে গেলেন।
অর্থাৎ উনি এখনো অনেক রেগে আছেন। কি করব এখন আমি।
আমি পিছনে ঘুরে তাকালাম। উনি ইতিমধ্যে কিচেনে চলে গেছেন। আমি একটা বড় নিঃশ্বাস বের করে দিয়ে কিচেনে চলে এলাম।
উনি আমার দিকে তাকালেনও না। নিজের মত কাজ করতে থাকলেন।
আমি এগিয়ে গিয়ে পিছন থেকে শাওনকে জড়িয়ে ধরলাম। শাওন হালকা ঘাড় ঘুরিয়ে আমার দিকে তাকালো।
“আমার ভুল হয়ে গেছে, আমি আর বলব না। আপনি প্লিজ এখন আমার সাথে এমন করা বন্ধ করেন। আমি…” এটুকু বলেই আমি থেমে গেলাম।
শাওন আমার হাত ছাড়িয়ে নিয়ে কিচেন থেকে বের হয়ে গেল।
আবার চোখ দিয়ে পানি গড়িয়ে পরতে লাগল। এত রাগ কিসের ওনার! আমি ত সরি বললামই। আমি কতটা কষ্ট পাচ্ছি সেটা কি উনি বোঝেন না!
আমি ওনার রুমে গিয়ে ঢুকলাম। উনি ফোনে কথা বলছিলেন কারো সাথে। আমি এগিয়ে গিয়ে ওনার এক বাহু ধরে টান দিয়ে আমার দিকে ঘুরালাম।
শাওন ভ্রুকুচকে তাকালো।
আর ফোনের লোকটাকে বলল,”ok I’ll call you back in two minutes.”
তারপর কল কেটে আমাকে শক্ত গলায় বলল, “কেন এসেছ এখানে?”
ওনার এই প্রশ্ন শুনে আমি থমকে গেলাম। তারপর আর কিছু না বলে বের হয়ে চলে এলাম। সোফা থেকে নিজের পার্স নিয়ে চোখের জল মুছে নিলাম।
তারপর একটা নিঃশ্বাস ফেলে ফিরে যাওয়ার জন্য মনস্থির করে নিলাম।
এগিয়ে গিয়ে দরজার লক ঘুরিয়ে খোলার সাথে সাথে শাওন পিছন থেকে এসে দরজাটা ঠেলে বন্ধ করে দিল। আমি অবাক হয়ে ঘুরে তাকালাম।
উনি এতই রেগে আছেন যে ওনার নিঃশ্বাসের শব্দতেই তা প্রকাশ পাচ্ছে।
“কোথায় যাচ্ছ? যেতে বলেছি আমি তোমাকে?” অনেক জোরে বলে উঠল শাওন।
আমি ভয় পেলেও নিজেকে সামলে নিয়ে বলে উঠলাম, কেন! আপনার তাতে কি! যান আপনি আপনার কাজ করেন। আমি আর কোনো দিনো আপনার কাছে আসব না। যেদিকে ইচ্ছা আমি চলে যাব।
বলতে বলতে চোখে জল চলে এলো। আমি চোখ নামিয়ে বললাম, দরজা ছাড়ুন।
বলেই আমি দরজার দিকে ঘুরলাম। সাথে সাথে শাওন আমার হাত ধরে টেনে ওর দিকে ঘুরালো। আমি ক্ষোভের সাথে তাকিয়ে বললাম, “কি চাচ্ছেন আপনি! যেতে দিন আমাকে।”
আমার কথা শেষ হতে না হতেই শাওন আমার ঘাড়ের পিছনে এক হাত রেখে আমাকে কাছে টেনে নিয়ে ঠোঁটে কিস করতে লাগল। আমি স্তম্ভিত হয়ে গেলাম আর চোখ বন্ধ করে নিলাম।

কয়েক মিনিট হয়ে গেল কিন্তু উনি ত থামছেনই না। আমি ত আর একটু হলেই দম বন্ধ হয়ে মরে যাবো।
আমি ওনাকে ঠেলে সরিয়ে দিয়ে হাপাতে লাগলাম। কিন্তু উনি আবার আমাকে এক হাত ধরে টান দিয়ে কাছে নিয়ে এসে ঠোঁটে ঠোঁট মিলিয়ে গভীরভাবে কিস করতে লাগলেন।
উফ উনি কি আমাকে মেরে ফেলতে চান এভাবে! আমি আবার ওনাকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিলাম। আর অন্যদিকে মুখ ঘুরিয়ে জোরে জোরে শ্বাস নিতে লাগলাম। আমার হার্টবিট দশহাজার গুন বেড়ে গেছে। এদিকে দমও পুরো শেষ করে দিয়েছিলেন প্রায় উনি।
“কিসও করতে জানো না, ইডিয়ট।” ভ্রুকুচকে তাকিয়ে বলল শাওন।
আমি ওনার দিকে আর তাকালাম না। উনি আবার আমার কাছে এগিয়ে আসতেই আমি নিজের ঠোঁট হাত দিয়ে ঢেকে চমকে বলে উঠলাম, “আর না। আমাকে কি মেরে ফেলতে চান!”
“গাধা” ভ্রুকুচকে তাকিয়ে বলল শাওন।
আমি ওনার দিকে তাকিয়ে সাথে সাথে অন্যদিকে তাকালাম। অনেক লজ্জা লাগছে এখন। শাওন এগিয়ে এসে আমার হাত ধরে টেনে আমাকে কাছে নিয়ে কোমড় জড়িয়ে ধরল। আমি চোখ বড়সড় করে ওনার দিকে তাকালাম।
উনি আমার কানের কাছে মুখ নিয়ে এসে বললেন, Did you miss me that much?
আমি একটা ঢোক গিলে বললাম, আমি ত…
শাওন মুখ সরিয়ে এনে আবার আমার চোখের দিকে তাকালো। আমি সাথে সাথে চোখ সরিয়ে নিলাম আর বললাম, “ছাড়ুন আমাকে। এভাবে কেন ধরে রেখেছেন!”
উনি কিছুই না বলে আমার দিকে তাকিয়ে রইলেন। আমার হার্টবিট অনেক বেড়ে যেতে লাগল। এখন ভয়ও লাগছে হালকা হালকা।
শাওন মুচকি হেসে বলল, Why are you so nervous!
আমি ওনাকে ঠেলে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে বললাম, আপনি…এ… এত কাছে…
কথা শেষ হবার আগেই শাওন আমার গালে কিস করে দিলো। আমি চোখ বড়সড় করে ওনার দিকে তাকালাম।
উনি এবার আমার অন্য গালেও কিস করে দিলেন। আমি চমকে ওনার বাহুর কাছের শার্ট খামচে ধরলাম আর চোখ বন্ধ করে ফেললাম।
“বলো কেন এসেছো!” শাওন বলল।
আমি আস্তে আস্তে চোখ খুললাম। কিন্তু ওনার চোখের দিকে তাকালাম না।
সত্যিই আমার আসাই উচিৎ হয় নি। উনি এখন আমাকে ইচ্ছে করে জ্বালাচ্ছেন!
আমি এবার রেগে চোখ পাকিয়ে বলে উঠলাম, “আপনি আমাকে ছেড়ে চলে এসেছেন কেন!”
“তুমিই ত বলেছ একা ছেড়ে দিতে। তাই ছেড়ে দিয়ে চলে এসেছি।” ভ্রুকুচকে বলল শাওন।
ওনার এই কথা শোনার সাথে সাথে আমার চোখ দিয়ে পানি পরতে লাগল।
শাওন স্তম্ভিত হয়ে বলল, “ওকে রিল্যাক্স, মজা করছি।”
আমি কাদতে কাদতে বললাম, “আপনি খুবই খারাপ। আমাকে শুধু কষ্ট দেন।”
শাওন সাথে সাথে আমাকে জড়িয়ে ধরল আর শান্ত গলায় বলল, অফিসে একটা ঝামেলা হয়ে গেছে।অন্যদিকে রবিনের এক্সিডেন্ট হয়ে গেছে এজন্য আমাকে আসতে হয়েছিল। বাট আমি আজই ফেরত যেতাম। তাছাড়া আমি ত আগেই বলেছি আমি তোমাকে ছাড়বো না।
আমি এটা শোনার সাথে সাথে শান্ত হয়ে গেলাম। এখন অনেক ভালো লাগছে। মুখে এখন একটা হাসিও চলে এসেছে।
হঠাৎই শাওনের ফোন বেজে উঠল। আমি ওনাকে ছেড়ে সরে দাড়ালাম আর মাথা নিচু করে রইলাম।
শাওন আমার দিকে তাকিয়ে নিঃশব্দে হেসে ফোন তুলল।
যা বুঝলাম তা হলো ওনাকে এখনি আবার বের হতে হবে।
শাওন ফোন রেখে আমার দিকে তাকিয়ে বলল, “আমাকে যেতে হবে।”

আমি ভ্রুকুচকে ওনার দিকে তাকিয়ে বললাম, “আপনি না বললেন ফিরে যাবেন আজ। তাহলে এখন কেনো যেতে হবে।”
শাওন আমার দিকে এগিয়ে আসতে আসতে বলল, “তো, তুমি চাচ্ছ এখন আমি তোমার সাথে থাকি!”
আমি হকচকিয়ে গেলাম আর পিছিয়ে যেতে যেতে বললাম, “না..আমি..।”
“তুমি?!” শাওন বলল।
আমি ঢোক গিলে বললাম, “য…যান আপনি…আপনার না কাজ আছে?”
বলতে বলতে দরজার পিঠ ঠেকে গেল। আমি চোখ বড়সড় করে তাকালাম।
শাওন কিছু না বলে শুধু নিঃশব্দে হেসে সরে রুমে চলে গেল।
আমি হাফ ছেড়ে বাচলাম।


উনি চলে যাবার পর এখন আবার ভালো লাগছে না। এদিকে আমি জামাকাপড় কিছুই আনিনি। স্নোবেলকেও রেখে এসেছি। এখন কি করব আমি? আমি চুপচাপ টিভির সামনের সোফায় এসে বসলাম। হঠাৎই চোখ গিয়ে পরলো সেই পেইন্টিং রুমটায়। রুমটার দরজাটা খোলা।
এই রুমটায় অনেক দিন যাওয়া হয়নি। আমি হাসিমুখে উঠে এগিয়ে গেলাম।
আর রুমটায় ঢোকার সাথে সাথে থমকে গেলাম। কারন সামনের ক্যানভাসে অনেক সুন্দর করে আমার ছবি আকা। সেইদিনের ছবি যেদিন উনি আমার মাথায় পদ্মফুলের মুকুটটা পরিয়েছিলেন কিন্তু সেটা চোখে এসে পরেছিল। এটা কখন আঁকলেন উনি! দেখে ত মনে হচ্ছে আজ বা গতকালের মধ্যেই আকা।
আমি কিছুসময় হা হয়ে তাকিয়ে রইলাম। তারপর চোখ সরিয়ে আশেপাশে তাকাতেই টেবিলে একটা বড় স্কেচবুক দেখলাম।
আমি এগিয়ে গিয়ে সেটা হাতে নিলাম। আমি এই আর একবার চমকে গেলাম। এটাতেও সব আমার ছবি। প্রতিটার নিচে তারিখ দেওয়া আছে।
ছবি গুলো এক এক করে দেখতে লাগলাম।
প্রথম পৃষ্ঠায় আমার চেয়ারে ঘুমিয়ে থাকা একটা ছবি। এটা ওনার অফিসে বসে যেদিন ঘুমিয়েছিলাম সেটা।
পরের ছবিটা বাসের মধ্যেকার, সাজেক যাওয়ার সময়কার। যখন আমি জালানা দিয়ে বাহিরে তাকিয়ে ছিলাম।
তারপরের ছবিটা আমার ঘুমন্ত অবস্থার, রিসোর্টের বিছানায়। অর্থাৎ উনি যেদিন প্রথম আমার পাশে ঘুমিয়েছিলেন।
এভাবে একে একে আকা সব ছবিই আমার, পুকুরে গোসল করার ছবি, ওনার শার্ট পরা ছবিসহ আরো কতোগুলি। এগুলো দেখে আমি হতভম্ব হয়ে গেলাম। উনি কবে থেকে পছন্দ করেন আমাকে!
আমাকে কোনোদিনো কেন বুঝতে দেন নি!
আমি তাড়াতাড়ি নিজের পার্স নিয়ে ঘর থেকে বের হলাম।
আমি এখনি সব শুনতে চাই। সবটা শুনতে চাই।
আমি মেইন রাস্তায় এসে দাড়ালাম আর এদিক ওদিক তাকিয়ে সিএনজি খুজতে লাগলাম।
কিন্তু হঠাৎই ডান দিকে আমার দৃষ্টি আটকে গেল। আমি ভ্রুকুচকে তাকালাম।
সুইটি একটু দূরে ওর গাড়িতে বসে আমার দিকে ক্ষোভের সাথে তাকিয়ে আছে।
আমি ওর দিকে তাকিয়ে রইলাম। হঠাৎই ও আমার দিকে গাড়ি জোরে স্টার্ট দিলো।
আমি থমকে গেলাম আর স্থিরভাবে দাঁড়িয়ে রইলাম।
‘ও কি আমাকে মেরে ফেলতে চাচ্ছে!’
গল্পর নাম : #১৬_বছর_বয়স
#পর্ব_৩৬ : #সব_প্রশ্নের_উওর
লেখিকা : #Lucky

আমি থমকে গেলাম আর স্থিরভাবে দাঁড়িয়ে রইলাম।
‘ও কি আমাকে মেরে ফেলতে চাচ্ছে!’
আমি চোখমুখ শক্ত করে বন্ধ করে নিলাম।
কিন্তু সুইটি আমার একদম সামনে এসে ব্রেক কষে থেমে গেল। আমি একটু সময় নিয়ে আস্তে আস্তে চোখ খুললাম।
গেটের দারোয়ান দৌড়ে আমার কাছে এগিয়ে আসলো। সাথে আশেপাশের কয়েকজনও এগিয়ে আসল।
আমি চোখ মুখ শক্ত করে সুইটির দিকে তাকালাম। সুইটি রেগে বের হয়ে এলো গাড়ি থেকে।
কয়েকজন বলে উঠল, দেখে চালাতে পারেন না? মানুষ মেরে ফেলবেন নাকি!
দারোয়ান আমার কাছে এগিয়ে এসে বলল, আপনি ঠিক আছেন ম্যাডাম!
আমি সুইটির দিকে স্থির দৃষ্টিতে তাকিয়ে বললাম, হ্যা, ঠিক আছি। ধন্যবাদ।
সবাই একে একে সরে চলে গেল।
সুইটি রেগে বলে উঠল, ভেবোনা আজ তোমাকে মারি নি বলে অন্য কখনো মারবো না।
আমি উপহাসের হাসি দিয়ে বললাম, আমাকে মারলেও কি আদৌ শাওনকে পাবেন! উনি ত এখন আর আপনাকে ভালোবাসেই না।
সুইটি রেগে জ্বলে উঠলো। আর বলল, “ভুলেও ভেবো না শাওনকে তুমি পাবা।”
আমি এবার রেগে বলে উঠলাম, উনি আমার হয়েই গেছেন। আমি জীবনেও ওনাকে ছাড়বো না। তাই এসব ফালতু কথা বলা বন্ধ করেন।
সুইটি ঠোঁটের কোনে একটা হাসি এনে বলল, এত সহজে তুমি কিভাবে শাওনকে পাবা! আমি সেটা হতে দিবই না, never.
আমি অবাক চোখে তাকিয়ে রইলাম। মেয়েটা দেখতে সুন্দর হলেও মনের দিক থেকে এত জঘন্য!

“শাওন আমার না হলে তোমারও হবেনা। তাই ওর ভালো চাও ত ওর লাইফ থেকে চলে যাও।” শয়তানি এক হাসি দিল সুইটি।
আমার ভিতরটা কেমন করে উঠল। ও কি শাওনের কোনো ক্ষতি করে দেবে!
সুইটি আর দাড়ালো না। গিয়ে গাড়িতে উঠে গাড়ি নিয়ে চলে গেল। আমি সত্যিই অনেক চিন্তায় পরে গেলাম। আমার জন্য ওনার ক্ষতি হয়ে গেলে!
আমি আবার ঘরে এসে ঢুকলাম। সত্যিই অনেক ভয় লাগছে। আমি ওনার থেকে দূরে যেতেই পারবো না, আর আমার জন্য ওনার ক্ষতি হলে আমি সহ্যই করতে পারব না। এখন কি করব আমি?
আমি সোফার উপর বসে স্থির দৃষ্টিতে সামনে তাকিয়ে রইলাম।

সন্ধ্যার সময় দরজা খোলার আওয়াজ পেলাম। সাথে সাথে একটা হাসি মুখে চলে এল। আমি শাওনের রুমেই ছিলাম। জলদি রুম থেকে বের হয়ে এলাম। আমি বেডরুমের দরজা পর্যন্ত আসতে না আসতেই শাওন আমার দুই বাহু ধরে নিয়ে ব্যস্ত হয়ে বলল, কোথায় লেগেছে তোমার!
বলেই আমার দিকে ভাল মত দেখতে লাগল। উনি রীতিমতো হাপাচ্ছেন। আর অনেক টেনশনেও পরে গেছেন আমার জন্য হয়ত।
আমি ওনার দিকে ম্লান চোখে তাকিয়ে রইলাম। আর চিন্তা করতে লাগলাম যে সুইটি কি সত্যিই ওনার ক্ষতি করে দেবে?
উনি ফট করে আমাকে জড়িয়ে ধরলেন। বেশ শক্ত করেই ধরলেন। ওনার নিঃশ্বাস আমার ঘাড়ে পরতে লাগলো। বুঝতে পারলাম যে উনি অনেক ঘাবড়ে গেছেন। অনেকক্ষণ ওভাবেই জড়িয়ে ধরে রাখলেন। আমি হালকা হেসে ওনার পিঠে হাত দিয়ে বললাম, ঠিক আছি আমি। ছাড়ুন এখন।
শাওন আমাকে ছেড়ে আমার দুই বাহু ধরে টেনে নিজের কাছে এনে রেগে বলে উঠল, বের হতে গিয়েছো কেনো? কি লাগবে আমাকে বললেই ত হত?
আমি ওনাকে হাসানোর জন্য ঠোঁট উলটে বললাম, “আপনাকে লাগতো এজন্য বের হয়েছিলাম।”
কিন্তু কোনো কাজ হলো না। উনি রেগে ভ্রুকুচকে তাকিয়ে আছেন।
আমি হা হয়ে বলে উঠলাম, “বাহ, এখন আমার বাহিরে যাওয়া আপনি আবার বন্ধ করে দিতে চান? খারাপ আপনি।”
“আমি খারাপ হই আর না হই তোমার বের হওয়া বন্ধ আর এটাই ফাইনাল।” রেগে বলল শাওন।
আমি হতবুদ্ধি হয়ে থেকে গেলাম।
শাওন আবার আমাকে ভালো ভাবে পর্যবেক্ষণ করতে লাগল।
“সত্যিই লাগে নি, রাইট?” শাওন বলল।
আমার সুইটির বলা কথাগুলো মনে পরে গেল। আর আবার ভয় হতে লাগল।
“আমার লাগলেও সমস্যা নেই শুধু যেন আপনার কখনো কিছু না হয়।” আমি কেদে দিলাম।
“হোয়াট! আমার কি হবে! আর তুমি কাদছ কিসের জন্য?” শাওন ভ্রুকুচকে তাকিয়ে বলল।
আমি শাওনকে জড়িয়ে ধরলাম আর ভয়ে চুপসে গেলাম।
“কিছু হয়েছে! এমন কেনো করছ তুমি?” শাওন গম্ভীর গলায় বলল।
“আপনি কিভাবে জানলেন যে আমার এক্সিডেন্ট হতে যাচ্ছিলো?” আমি বললাম।
“গার্ডস বলল। সুইটি ছিল তাই না?” শক্ত গলায় বলল শাওন।
আমি কিছু না বলে চুপ করে রইলাম।
“কি কি বলেছে তোমাকে ও!” শাওন বলল।
আমি সাথে সাথে মুখ তুলে শাওনের দিকে তাকালাম।
“বলো!” শাওন ভ্রুকুচকে বলল।
“আপনার কোনো ক্ষতি করবে না ত ও, তাইনা?” আমি ছলছলে চোখে তাকিয়ে ভীত গলায় বললাম।
শাওন গম্ভীর চোখে তাকিয়ে বলল, “না, আমি সবসময় তোমার কাছেই থাকবো।”
শাওন আমার চোখের জল মুছে দিয়ে কপালে গভীর ভাবে কিস করল।
আমি আবার শাওনকে জড়িয়ে ধরলাম।
অনেক ক্ষণ ওভাবেই রইলাম।
“বাই দ্যা ওয়ে, তোমার ল্যাগেজ কই?” শাওন প্রশ্ন করলো।
আমি ওনাকে ছেড়ে ওনার দিকে তাকালাম। তারপর ঠোঁট উলটে বললাম, “ভুলে নিয়ে আসি নি।”
“এখন?” শাওন ভ্রুকুচকে বলল।


নিরুপায় হয়ে শাওনের একটা শার্ট আর ট্রাউজার নিয়ে আমাকে ফ্রেস হয়ে ঢুকতে হলো। কিন্তু এখন হয়ে গেল আরেক ঝামেলা। পিরিয়ড শুরু হয়ে গেছে। কি করব এখন! নিজের চুল ছিড়তে ইচ্ছে করছে এখন।
আমি শার্টটা পরে বাথরুমের দরজা একটু খুলে উঁকি দিলাম। উনি ফোনে কিছু করছিলেন। আমি দরজার বাহিরে হাত নিয়ে দরজার টোকা দিলাম।
শাওন ঘাড় ঘুরিয়ে তাকালো। আমার ত বলতেও লজ্জা লাগছে। আমি চোখ সরিয়ে ফ্লোরের দিকে তাকালাম।
শাওন প্রশ্নসূচক চোখে তাকিয়ে বলল, কি?
“আ…আমার…” আমি অনেক দ্বিধায় পরে গেলাম।
“হ্যা, তোমার কি?” শাওন ভ্রুকুচকে বলল।
আমি চোখ মুখ বন্ধ করে বলে উঠলাম, “ওইটা হয়েছে।”
“মানে! ওইটা কোনটা?” শাওন না বুঝতে পেরে বলল।
আমি এদিক ওদিক তাকাতে লাগলাম।
“পিরিয়ড?” শাওন এবার বুঝতে পেরে বলে উঠল।
আমি মাথা নিচু করে মাথা নাড়লাম।
“গাধা, ত এত লজ্জা পাচ্ছ কিসের জন্য?” শাওন গম্ভীর গলায় বলে উঠল।
আমি মাথা নিচু করেই রইলাম।
“আমি আনছি থামো।” বলল শাওন।
আমি সাথে সাথে বলে উঠলাম, সাথে প্লিজ আন্ডারওয়্যারও নিয়ে আসবেন।
বলেই সজোরে দরজা আটকে দিলাম। আর লজ্জায় দুইহাত দিয়ে মুখ ঢেকে নিলাম। এখন সত্যিই মরে যেতে ইচ্ছে করছে।

বিশ পঁচিশ মিনিটের মাথায় উনি বাথরুমের দরজায় নক করলেন। আমি অল্প দরজা খুলে শুধু একটু উঁকি দিলাম।
উনি সিরিয়াস হয়ে তাকিয়ে একটা ব্যাগ এগিয়ে দিলেন।
আমি ব্যাগটা জলদি করে নিয়েই দরজা বন্ধ করে দিলাম।

এখন ত বাথরুম থেকে বের হতে লজ্জা লাগছে। আমি অনেক দ্বিধার সাথে দরজা খুলে বের হলাম। শাওন আমার দিকেই তাকিয়ে আছে। আমি বুঝতে পেরেও ওর চোখের দিকে তাকালাম না।
আগে শুধু ওনার শার্ট পরেছি। কিন্তু আজ শার্টের সাথে ট্রাউজারও পরেছি। একদিকে শার্টের হাতা লম্বা অন্যদিকে ট্রাউজার এর পা লম্বা।
শাওন আমার কাছে এগিয়ে আসতেই আমি একটু পিছিয়ে গেলাম। কিন্তু উনি আমার হাত ধরে টেনে কাছে নিয়ে এসে কোলে তুলে নিলেন। আমি হকচকিয়ে গেলাম আর ওনার দিকে তাকালাম।
উনি আমাকে বিছানায় নিয়ে বসিয়ে দিলেন। তারপর সিরিয়াস হয়ে আমার পাশে বসে আমার শার্টের হাতা গুটিয়ে দিতে লাগলেন।
আমি ওনার কাজ দেখতে লাগলাম আর ফাকে ফাকে ওনার দিকে তাকালাম। হাতা গুটিয়ে উনি উঠে পায়ের কাছে গিয়ে বসলেন আর ট্রাউজারে হাত দিলেন।
আমি পা সরিয়ে নেওয়ার আগেই উনি হাত দিয়ে ধরে নিলেন। আমি এদিকে ওদিকে তাকাতে লাগলাম।
উনি ট্রাউজারও গুটিয়ে ঠিক করে দিলেন। তারপর আমার দিকে তাকালেন। আমি চোখ সরিয়ে মাথা নিচু করে ফেললাম। হার্টও জোরে জোরে বিট করছে।
“আমি ডিনার রেডি করে নিয়ে আসছি।” শাওন আমার দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসি দিয়ে বলল।
উনি উঠে চলে গেলেন।
যদিও আমি নিজেই ডাইনিং এ গিয়ে খেতে পারব কিন্তু তাও ওনাকে বাধা দিলাম না। কারন ওনার এসব কাজ গুলোকে অনেক ভালো লাগছে।
শাওন এক প্লেট খাবার নিয়ে রুমে চলে আসলো। তারপর আমার পাশে বসল।
আমি প্লেটের দিকে তাকালাম। ডিমভাজা দিয়ে ভাত। দেখেই খুশি হয়ে গেলাম। মুখে একটা হাসিও চলে এলো।
শাওন আমার দিকে তাকিয়ে বলল, এত খুশি!
আমি হাসিমুখে মাথা নাড়লাম তারপর ওনার হাত থেকে প্লেটটা নিলাম। উনি আমার দিকে তাকিয়ে দেখতে লাগলেন।
আমি ভাত মাখিয়ে ওনার দিকে এক গাল ভাত এগিয়ে দিলাম। উনি অবাক হয়ে আমার দিকে তাকালেন। আমি ভ্রুকুচকে নেওয়ার জন্য ইশারা করলাম।
শাওন বলল, “লাগবে না। তুমি…”
আমি এক গাল ভাত ওনার মুখে দিয়ে দিলাম আর ওনার কথাও বন্ধ হয়ে গেল।
শাওন ভ্রুকুচকে আমার দিকে তাকালো। আমি হেসে দিলাম।
শাওন বলল, “বেশি না হেসে, এখন খাও।”
“আর আপনি?” আমি প্রশ্ন করলাম।
শাওন উঠে দাড়াতে দাড়াতে বলল, টেবিলে রাখা আছে।
“আমিও টেবিলে বসে খাবো আপনার সাথে।” আমি বলে উঠলাম।
শাওন আমার দিকে প্রশ্নসূচক দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলল, “কেনো! এত কাছে আছি তাও মন ভরছে না?”
আমি হকচকিয়ে গেলাম। আর এদিক ওদিক তাকিয়ে বললাম, আমি ত…।
শাওন ঝুঁকে এসে আমার গালে কিস করলো। আমি চোখ বড়সড় করে সামনের দিকে তাকিয়ে রইলাম।
শাওন রুম থেকে বের হয়ে গেল।
আমার হার্ট আবার ঢোল পিটছে।

খাওয়া শেষে আমি চুপচাপ বিছানায় বসে রইলাম। শাওন একটু পরে এসেই রুমে ঢুকল। আমি এদিকে ওদিকে তাকিয়ে ওনাকে বললাম, “আপনি কোথায় ঘুমাবেন?”
শাওন শার্টের হাতার ভাজ খুলতে খুলতে বলল, “আজ থেকে আমরা একসাথে ঘুমাবো।”

আমি চোখ বড়সড় করে ওনার দিকে তাকালাম। উনি ভ্রুকুচকে তাকিয়ে বললেন, “কি?”
আমি না সূচক মাথা নাড়লাম।
আজ থেকে তারমানে উনি সবসময় আমার সাথে ঘুমাবেন! আমার মুখে একটা হাসি চলে এলো।
“হাসছো কেন?” শাওন ভ্রু উঁচু করে বলল।
আমি সাথে সাথে মুখ থেকে হাসি সরিয়ে ফেললাম আর বললাম, ক..কই না ত!
শাওন মুচকি হাসি দিয়ে ড্রেস চেঞ্জ করতে চলে গেল।

আমি বসে থেকেই অপেক্ষা করতে লাগলাম। খানিক বাদেই উনি বের হয়ে এলেন। নীল টি শার্টে ওনাকে অনেক বেশিই সুন্দর লাগছে। আমি ওনার দিকে তাকিয়েই রইলাম। উনি আমার দিকে ভ্রুকুচকে তাকিয়ে বললেন, “কি?”
আমি চমকে গিয়ে চোখ সরিয়ে নিলাম আর বললাম, কিছু না।
শাওন এগিয়ে এসে আমার গায়ে চাদর টেনে দিলো আর বলল, “এখনো বসে আছ কেন? শুয়ে পরো।
আমার কিছু কাজ আছে আমি ড্রয়িং রুমে যাচ্ছি।”
বলেই শাওন চলে যেতে লাগল কিন্তু আমি ওনার হাত ধরে নিলাম।
শাওন ঘুরে তাকালো।
“আমার অনেক গুলো প্রশ্ন আছে আর আজ আপনাকে উত্তর দিতেই হবে।” আমি ওনার চোখের দিকে তাকিয়ে বললাম।
“কি প্রশ্ন?” শাওন বলল।
আমি আমার পাশের বালিশটা হেলান দেওয়ার জন্য পাতিয়ে দিলাম। তারপর হাত দিয়ে দেখিয়ে বললাম, “আপনি যা কাজ আছে এখানে বসে করবেন আর উওর দেবেন।”
শাওন প্রশ্নসূচক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল। আমি ইশারায় বসতে বললাম।
উনি নিজের ল্যাপটপ আর ফাইল নিয়ে আমার পাশে এসে বালিশে হেলান দিয়ে বসলেন।
আর ল্যাপটপ চালু করতে করতে বললেন, বলো কি প্রশ্ন।
আমি বললাম, “আমি আপনার পেইন্টিং রুমে আজ গিয়েছিলাম।”
শাওন ল্যাপটপের ক্রিনে মনোযোগ আবদ্ধ রেখে বলল, “এখন থেকে তুমি সব রুমেই যেতে পারো, All yours.”
আমি ভ্রুকুচকে বললাম, এজন্য বলিনি। আমি আজ দেখেছি। আপনি যে ছবিগুলো এঁকেছেন সেগুলো।
শাওন আমার দিকে না তাকিয়ে নিজের কাজ করতে করতে বলল, হ্যা, ভাল করেছো।
আমি এবার রেগে ওনার এক বাহু ধরে টান দিলাম। উনি এবার আমার দিকে তাকালেন।
আমি রেগে বলতে লাগলাম, “এত ল্যাপটপে কি! আমার দিকে তাকিয়ে উওর দিতে পারেন না?”
শাওন আমার দিকে তাকিয়ে নিজের ল্যাপটপের ক্রিন নামিয়ে ল্যাপটপ কোল থেকে সরিয়ে নিলো। আমি ভ্রুকুচকে তাকালাম।
উনি এবার আমার হাত ধরে টেনে আমাকে ওনার কাছে নিয়ে আসলেন। আমি চোখ বড়সড় করে তাকিয়ে বললাম, কি… কি করতে চাচ্ছেন আপনি?
শাওন গম্ভীর চোখে তাকিয়ে বলল, তুমিই ত বলেছ তোমার দিকে তাকিয়ে কথা বলতে।
আমি এদিক ওদিক তাকাতে তাকাতে বললাম, তাই বলে এত কাছেও আসতে বলি নি।
শাওন কিছু না বলে আমার দিকে তাকিয়ে রইল। আমি একটা ঢোক গিলে বললাম, “আ… আপনি যেভাবে ছিলেন ওভাবেই থাকুন। আ.. আমার দিকে না তাকালেও হবে। ছাড়ুন।”
শাওন আমার হাত ছেড়ে দিল। আমি সরে নিজের জায়গায় এসে বসলাম।
উনি আবার ল্যাপটপ খুললেন।
আমার হার্ট এদিকে লাফালাফি শুরু করে দিয়েছে।
উনি কাজ করতে করতে বললেন,”কি হলো,বলো!”
আমি নিজেকে সামলে নিয়ে থেমে থেমে বলতে শুরু করলাম, “আপনি… কবে থেকে… আমাকে…?”
“জানিনা।” শাওন ল্যাপটপের ক্রিনের দিকে তাকিয়েই বলে উঠল।
আমি ওনার দিকে তাকালাম।
“নেক্সট?” শাওন সিরিয়াস হয়ে ল্যাপটপে কাজ করতে করতে বলল।
আমি ওনার দিকে তাকিয়ে বললাম, পিশামনি আমাকে যখন নিয়ে গেল তখন আপনি শুধুমাত্র স্নোবেলকে দিতেই এসেছিলেন?
“আমি মিস করছিলাম তোমাকে তাই গিয়েছিলাম।” শাওন এবারো আমার দিকে তাকালো না।
উনি এমন সোজাসাপটা উত্তর দিচ্ছেন যেন আমি ওনাকে জিজ্ঞেস করছি “আপনার নাম কি! আপনার বাবার নাম কি! মায়ের নাম কি!”
তবে শুনে অনেক ভাল লাগছে। কারন আজ উনি সব সত্যিটা বলছেন। যদিও আমি জানি উনি আমার জন্য গিয়েছিলেন তাও ওনার মুখ থেকে শুনতে পেয়ে অনেক ভাল লাগলো।
“নেক্সট?” শাওন বলল।
এবার আমি যে প্রশ্নটা করতে চাই সেটা আগে করতে চেয়েও করতে পারিনি। কিন্তু আজ করেই ফেললাম।
“মিশুর ওই অবস্থা….”
শাওন এবার আমার দিকে তাকিয়ে রেগে বলে উঠল, “হ্যা আমি করেছি। ওর সাহস কি করে হয় তোমাকে টাচ করার!”
আমি অবাক হয়ে ওনার দিকে তাকিয়ে রইলাম। উনি রেগে একটা নিঃশ্বাস বের করে দিয়ে আবার ল্যাপটপে মনোযোগ দিলেন আর বললেন,”নেক্সট?”
আমি এবার শক্ত চোখে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করলাম, সুইটির সাথে হোটেলে দেখা করতে গিয়েছিলেন কেন?
শাওন ভ্রুকুচকে আমার দিকে তাকালো আর বলল, তুমি কিভাবে…
আমি শাওনকে থামিয়ে মুখ ভেংচি দিয়ে বললাম, “নিজের চোখে দেখেছি আমি। সবটা দেখেছি, কিভাবে হাত ধরে কাদছিল আর কাধে মাথা দিয়ে…”
এটুকু বলেই আমার রাগে গা জ্বলে যেতে লাগল।
শাওন ভ্রুকুচকে তাকিয়ে বলল, এজন্য বলি এত চুপসে গেছো কেনো হঠাৎ, কারন তুমি ত চুপচাপ থাকার মতই না।
আমি চোখ পাকিয়ে বললাম,”আমাকে বলতে থাকেন অথচ নিজে গিয়ে ওই সুইটির সাথে…”
এটুকু বলেই আমি মুখ গোমড়া করে অন্যদিকে তাকিয়ে রইলাম।
“You should have ased me then. আর ওই হোটেলে মিটিং ছিল, সুমনাও ছিল। সিনক্রিয়েট করছিল সুইটি তাই আমি আগে বের হয়ে এসেছিলাম।” শাওন সিরিয়াস চোখে তাকিয়ে বলল।
আমি আড়চোখে তাকিয়ে বললাম,”তাই বলে আপনি ওকে কাধে মাথা রাখতে দেবেন?”
“দিলে কি সমস্যা?” শাওন বলল।
আমি রেগে ওনার দিকে তাকিয়ে বললাম, কি বললেন?
ওনার দিকে তাকিয়েই বুঝলাম যে উনি মজা নিচ্ছেন আমার সাথে।
আমি বিরক্তির সাথে অন্যদিকে তাকিয়ে রইলাম।
শাওন আমার হাত ধরে টেনে ওর কাছে নিয়ে আসলো আর বলল, Are you jealous?
আমি চোখ বড়সড় করে বললাম, আমি কেন jealous হব!
“তাহলে ত সমস্যা হওয়ার কথা না।” শাওন মুচকি হেসে বলল।
আমি রেগে ওনার দিকে তাকিয়ে বললাম,”হ্যা যান ওর সাথে গিয়ে থাকুন আমার কাছে কেন এসেছেন?”
বলেই আমি হাত ছাড়ানোর চেষ্টা করলাম। কিন্তু শাওন আমার হাত ধরেই রইল।
“ছাড়ুন কি করছেন!” আমি ক্ষোভের সাথে তাকিয়ে বললাম।
উনি আমাকে টেনে কাছে নিয়ে এসে সিরিয়াস হয়ে বললেন,”সুইটির সাথে আমার কিছুই নেই। তাই ওর জন্য insecure ফিল করা বন্ধ করো।”
বলেই উনি আমার কপালে কিস করলেন।
আমি শান্ত হয়ে গেলাম।
উনি আমার হাত ছেড়ে দিয়ে আবার ল্যাপটপের দিকে তাকালেন আর বললেন, “আরো আছে প্রশ্ন?”
আমি সরে নিজের জায়গায় বসলাম আর বললাম, “হ্যা আছে। আপনি তাহলে সেদিন আমার সাথে ঘুমান নি কেনো? এর আগের দুইদিন ত ঘুমিয়ে ছিলেন। সুইটির সাথে দেখা করে ওদিন অনেক রাতে ফিরেছিলেন আর…”
শাওন আমাকে থামিয়ে দিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে ভ্রুকুচকে বলল,”ঘুমিয়ে ছিলাম ত! বাট তোমার আগেই উঠেছিলাম। আর রাতে দেরি হয়েছিল কারন অফিসিয়াল প্রজেক্টের কাজ ছিল।”
শুনে আমি হতবুদ্ধি হয়ে গেলাম।
“তোমার সাথে ঘুমালে বলো ঘুমাই কেনো, আবার না ঘুমালেও সমস্যা?” শাওন কপাল কুচকে বলল।
আমি এদিক ওদিক তাকাতে লাগলাম।
“So complicated.” শাওন বিরক্তির নিঃশ্বাস ফেলে কথাটা বলে ল্যাপটপের ক্রিনে তাকালো।
তারমানে উনি ঘুমিয়ে ছিলো আমার সাথে? উফ, কত কি চিন্তা করে বসে ছিলাম আমি!
শাওন বলল, নেক্সট?
“আপনি সৌরভকে মেরেছিলেন কেনো?” আমি ভ্রুকুচকে তাকিয়ে বললাম।
শাওন এবারো রেগে আমার দিকে তাকিয়ে বলল, ”মেরেছি ভালো করেছি। আর তোমার ওকে নিয়ে কিসের মাথা ব্যথা? তার চেয়েও বড় বিষয়, তুমি সেদিন লাফাতে লাফাতে ওর সাথে দেখা করতে চলে গেলা কিভাবে? মানা করেছিলাম না?”
আমি রেগে বলে উঠলাম, লাফাতে লাফাতে মানে? আমি কি যেতে চেয়েছিলাম নাকি! ওনার কিনে দেওয়া তিন হাজারের জুতোর জন্যই ত যেতে হলো।
শাওন ভ্রুকুচকে বলল, জুতোর জন্য মানে! কে কিনে দিয়েছে?
আমি থতমত খেয়ে গেলাম। এখনি ত উনি আবার চিল্লাতে শুরু করবে। আমি ভয়ে চোখ সরিয়ে অন্যদিকে তাকালাম।
শাওন আমার হাত ধরে টান দিয়ে ওর কাছে এনে বলল, কি বললা মাত্র? জুতো কিনে দিয়েছে তোমাকে? কবে? কিসের জন্য?
শাওন রেগে গেল।
আমি ভয়ে ওনার চোখের দিকে তাকালাম না।
“কি হলো বলো?” শাওন রাগমিশ্রিত চোখ তাকিয়ে বলল।
এখন ত না বলা অব্দি উনি ছাড়বেনই না।
“বলো।” শাওন আবার বলল।
“সেদিন আপনি আমার গ্রামের বাসা থেকে হঠাৎ কোথায় গায়েব হয়ে গেলেন ওইদিন আমি রাস্তায় হাটতে গিয়েছিলাম তখন ওনার গাড়ির সামনে ভুলে পরে গিয়েছিলাম আর আমার সেন্ডেল ছিড়ে গিয়েছিল। তাই উনি জুতো কিনে দিয়েছিলেন ৩০০০ টাকার। আমার কাছে তখন টাকা ছিল না, তাই উনি বলেছিলেন পরের দেখাতে এক কাপ চায়ের ট্রিট দিলেই হবে। এজন্যই সেদিন…” আমি শাওনের দিকে না তাকিয়েই থেমে থেমে বললাম কথা গুলো।
জানিনা এখন কতটা রাগ করেছেন উনি। তাকাতেও ভয় লাগছে।
শাওন দাতে দাত চিপে বলল,”বললো আর তুমি ওর সাথে জুতো কিনতে চলে গেলা?”
আমি একটা ঢোক গিলে ভয়ে ভয়ে ওনার দিকে তাকালাম।
উনি সত্যিই রেগে আছেন।
“কোন জুতো? এখনি বাহিরে ফেলবা আর ওর চেয়ে দামি জুতো আমি তোমাকে কিনে দেবো।” শাওন রাগী চোখে তাকিয়ে বলল।
আমি হতভম্ব হয়ে গেলাম।
“কিহলো?” শাওন ভ্রুকুচকে বলল।
এবার আমি এগিয়ে গিয়ে ওনার কপালে কিস করলাম। উনি স্তম্ভিত হয়ে গেলেন।
তারপর শাওনের দিকে হাসি মুখে তাকিয়ে বললাম, “আমারো সৌরভের সাথে কিছু নেই। আর ওনার জন্য আপনি insecure ফিল করবেন না। কারন আমি আপনার ছাড়া অন্য কারো না।”
শাওন এগিয়ে এসে আমার ঠোঁটে কিস করে দিলো। আমি চমকে গেলাম।
তারপর আমাকে জড়িয়ে ধরলেন। আমিও হাসিমুখে ওনাকে জড়িয়ে ধরলাম আর বললাম, এটা নিয়ে তিনবার।
“মানে?” শাওন বলল।
আমি বললাম, “কিস।”
“এটা নিয়ে seventh, আর তোমাকে এখন থেকে আর গুনতে হবেনা।” শাওন শান্তগলায় বলল।
আমি অবাক হয়ে গেলাম। সাথে সাথে মুখ তুলে ওনার দিকে তাকিয়ে ভ্রুকুচকে বললাম, “সাতবার কিভাবে হলো?”
শাওন ভ্রুকুচকে বলল, সেটা তোমার না জানলেও চলবে।
আমি চোখ পাকিয়ে বললাম,”আপনি কখন কখন কিস করেছেন আমাকে? আমার অগোচরে? আর কি কি করেছেন আমার সাথে?”
শাওন বলল,”আর কি করেছি মানে?”
“আপনি ত অনেক খারাপ। বলেন কখন করেছেন?” আমি চোখ বড়সড় করে বললাম।
শাওন ল্যাপটপের ক্রিনের দিকে ফিরে তাকালো আর মুচকি হেসে বলল, I am not that decent যতটা তুমি (আর তোমার এই গল্প পাঠকেরা) মনে করো।
আমি হা হয়ে তাকিয়ে রইলাম।
“এখন ঘুমাবো আমি। লাইট অফ করো।” বলেই শাওন নিজের ল্যাপটপ বন্ধ করে রেখে বিছানায় শুয়ে পরলো।
আমি হা হয়েই রইলাম।

(চলবে…)
(চলবে…)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here