Marriage_With_Benefits part 31+32

#Marriage_With_Benefits
#Part_31
Writer::Sanjida Nahar Shaanj
.
.
আভি অনেকক্ষন বসে থাকার পর খেয়াল করলো অনেক ক্ষন হয়ে গেছে।
আমি কাল রাতেও আস্থাকে অযথা বকা দিয়েছি।আস্থা যে কেনো আরমান চৌধূরীর তরফে কথা বলছিলো?ওর ওই সব কথার কারণে আমি আমার মাথা ঠিক রাখতে পারিনি।আর আবারও ওকে কথা শুনিয়ে আসলাম।মানুষ ঠিকই বলে রাগের কারনে মাথা কাজ করে না।রাগের মাথায় ওকে কথা গুলো বলে অযথাই বকা দিলাম। না দিলেও পারতাম ওকে এতো গুলো বকা।যাক এখন ওকে মানাতে মানাতে আমার আমার বারোটা বেজে যাবে।এখন না জানি আবার কি করতে বলে?


বাড়িতে সন্ধ্যায় আভি অনেক গুলো ফুলের তোড়া নিয়ে গেলো আস্থার জন্য যাতে ওর রাগ ভাঙ্গে।
আস্থা।আস্থা। দেখো তোমার জন্য কি এনেছি?(আভি সিড়ি দিয়ে যেতে যেতে)

শুধু হলো।নতুন নেকামি।(ঈশানি)

আহা।এমন করে বলছো কেনো?এখনই তো এদের বয়স!(রোহান মুচকি হেসে)

আয়ুশ শুধু তাকিয়ে তাকিয়ে দেখছে।

আভি দরজা খুলে ভিতরে গেলো কিন্তু আস্থা নেই।তাই আস্থাকে ওয়াশরুমে খুঁজলো কিন্তু আস্থা সেখানেও নেই।
আস্থা আস্থা।কোথায় তুমি?দেখো সরি বলছি?আর হবে না।আস্থা।(আভি বিভিন্ন জায়গাতে খুঁজতে লাগলো)

নিচে
মিস সাবিনা!(আভি)

জ্বি।আভি!(মিস সাবিনা)

আপনি কি আস্থাকে দেখেছেন?(আভি)

ওই মেয়ে সুট কেস নিয়ে বেরিয়ে গেছে।(আয়ুশ)

বেরিয়ে গেছে মানে?(আভি ভ্রু কুঁচকে)

বেরিয়ে গেছে মানে তোকে ছেড়ে চলে গেছে।(আয়ুশ বসে বসে ফোন টিপতে টিপতে)

তোকে কে বলছে?(আভি আয়ুশ এর সামনে দাঁড়িয়ে)

আমি দেখেছি।অবশ্য এইটা তো হবারই কথা।(আয়ুশ)

এইটা হবার কথা মানে?(আভি রাগে)

মনে যদি এখন থাকে প্রাক্তন
তাহলে কি আর মনে ধরে নতুনজন?(আয়ুশ আভির দিকে তাকিয়ে)

আয়ুশ
বলেই আভি চিৎকার করে আয়ুশ এর কলার চেপে ধরলো আভি।

সবাই দৌড়ে আসলো আভি আর আয়ুশকে আটকাতে।তখন আয়ুশ ওদের না বলে দিলো।

চিৎকার করছিস কেনো?ও কি জানে তোর আর তুলির মধ্যে সম্পর্ক কতটা গভীর ছিলো।আর এইটা যদি ও জানতে পারে তাহলে তোদের সো কলড ভালোবাসা থাকবে?(আয়ুশ)

আভি আয়ুশকে ছেড়ে দিয়ে বললো
ওর আমার মধ্যে কি থাকবে আর কি থাকবে না তা নিয়ে তোর চিন্তা করতে হবে না।আর আমার প্রাক্তন আর আমার নতুন নিয়ে তোর মাথা ব্যাথা না করলেও চলবে।
বলেই আভি যেতে লাগলো।

প্রাক্তনের জন্য নতুনকে কষ্ট দিস না।আর যদি দিস তাহলে ভাবিস না ও একা।ওর চোখের জল মুছতে আরো মানুষ আছে।(আয়ুশ)

তোর আস্থার চোখের জল মুছতে হবে না।ওর জন্য আমি একাই যথেষ্ট।(আভি)

দেখি কত দিন থাকে?(আয়ুশ)

আস্থাকে আমি যতই কষ্ট দেই না কেনো?দিন শেষে ভালোবাসাটা আমিই দিবো।আর আমার ভালোবাসা ছেড়ে আস্থা কখনও যেতে পারবে না যতই চেষ্টা করুক।যদি বিশ্বাস না হয় চেষ্টা করে দেখতে পারিস।আমি তোকে অনুমতি দিলাম।কিন্তু আমি জানি আমার আস্থা শুধু আমাকেই ভালোবাসে আর সারাজীবন ভালোবেসে যাবে।এইটা আস্থার প্রতি আমার বিশ্বাস।(আভি)

আস্থাকে এতো বিশ্বাস করিস?(আয়ুশ)

নিজের থেকেও বেশি আস্থার উপর আমার আস্থা আছে।
বলেই আস্থাকে খুঁজে বের করার জন্য বাসা থেকে বেরিয়ে গেলো আভি।


উপর থেকে দাদু
যাক। হতচ্ছাড়া নাতি আমার আস্থার প্রেমে অন্ধ হয়ে গেছে।এখন দেখি পরিস্থিতি কোথায় নিয়ে যায় ওদের ভালোবাসার ঘুড়িকে।কিন্তু আয়ুশ এর কথা শুনে মনে হলো ও আস্থাকে ভালোবেসে ফেলেছে।এইটা কি হলো!আমার দুটো অপদার্থ নাতিই আস্থার জন্য পাগল!এইদিকে একটাকে সামলাতে সামলাতে আসুর জান যায় যায়।আর এখানে বোনাস হিসেবে দেবরও।আস্থা দেখ কি করে সামলাবে?কিন্তু আসলেই তো আস্থা কোথায় গেছে?নিহালকে বলেছে?আর জানলেই আমার কি?নিজে খুঁজে বের করুক।দেখুক বউ কোন গ্রহের প্রাণী?তবে মেয়েটাকে আমার হেব্বি ভালো লেগেছে।মাত্র কয়দিনে সব কিছু ঠিক হতে শুরু করতে শুরু হলো।তবে অতীত চলে আসলে না জানি আবার কি হয়?(দাদু মনে মনে)


সারা রাত আভি আস্থাকে খুঁজেছে কিন্তু পায়নি। হসপিটাল থেকে শুরু করে ওর পালিত বাবার বাড়ি সব খুজা শেষ।মাথা একদম কাজ করছে না।কোথায় চলে গেছে মেয়েটা?আমি কি মার মতো ওকেও হারিয়ে ফেললাম?না না এটা হতে পারে না?

আভি রুমে বসে বসে এইসব কিছু ভাবছে তখনই ওর ফোনে একটা কল আসে
হ্যাল্লো।আভি চৌধুরী বলছি।আপনি?(আভি)

আমি ওসি বলছি।

জ্বি।ওসি সাহেব বলুন কি খবর?সব ঠিক আছে?

আসলে স্যার।আপনার ওয়াইফকে একটু সাবধানে রাখবেন!(ওসি)

কেনো?(আভি চিন্তিত হয়ে)

আসলে যে মহিলাটা মারা গেছে সেই মহিলা একজন চোর ছিলো।(ওসি)

তা তো আমি জানি এতে বিপদ কি?(আভি)

আসলে আমরা ওই মহিলার কাছ থেকে একটা ব্যাগ পেয়েছিলাম।আর সেই ব্যাগ থেকেই আপনার স্ত্রীর ফোনটা পেয়েছিলাম।(ওসি)

হুম।ও বলেছিলো।ওই মহিলা নাকি ওর ব্যাগ চুরি করেছে।তার সাথে এইটার সম্পর্ক কি?(আভি)

আসলে ওই ব্যাগটা আমরা ভালো করে চেক করার পর।আমরা সেখানে একটা ট্র্যাকিং ডিভাইস পাই।আর সেই ডিভাইস থেকে আমরা জানতে পেরেছি যে ওই ডিভাইস যার কাছে থাকবে তাকেই মারার প্ল্যান করা হয়েছিলো।কিন্তু ভুল বশত সেই মহিলাটা মারা যায়।আসলে ঐটা অ্যাকসিডেন্ট হলেও ওইটা একটা মার্ডার প্ল্যান ছিল আপনার স্ত্রীকে মারার জন্য।আপনার স্ত্রীর ভাগ্য ভালো ছিলো যে উনার ব্যাগ চুরি হয়ে গেছিলো আর সেই কারণে উনি এই যাত্রায় বেঁচে গেছেন।কিন্তু উনাকে নিরাপদে রাখবেন কারণ যে এত বড় প্ল্যানিং করতে পারে সে কিন্তু আরো কিছু করতে পারে আপনার স্ত্রীকে মারার জন্য।যদি বলেন আমরা প্রোটেকশন দিতে পারি।(ওসি)

না।থাক তা আর দরকার হবে না আমিই পারবো আমার স্ত্রীকে রক্ষা করতে।কিন্তু আপনি এতো কিছু কি করে জানেন?(আভি)

আমরা ড্রাইভারকে জিজ্ঞাসাবাদ করি।আর ড্রাইভারটা একজন কিলার ছিলো যে ড্রাইভার সেজেছিল।উনিই বলেছেন এই ট্র্যাকিং ডিভাইস যার কাছে থাকবে তারই মার্ডার করতে।কিন্তু উনি চিনতো না যে কাকে খুন করার জন্য ওকে ভাড়া করার হয়েছে।ওর কাছে শুধু একটা ট্র্যাক করার ডিভাইস ছিলো। আপনার ভাগ্য ভালো ছিলো যে কোনো ছবি দেয়া হয়নি।না হলে এখন সেখানে সত্যিই আপনার স্ত্রীর মৃত্যু দেহ থাকতো।(ওসি)

আস্থার মৃত্যুর কথা শুনে আভির হাত পা কাপা শুরু করতে শুরু করলো।একটু ভুল হলেই আজ ভালোবাসার মানুষের লাশ পড়ে থাকতো।

মি:আভি?আপনি কি শুনছেন?(ওসি)

জ্বি।জ্বি বলেন।এখন ওই ড্রাইভার কোথায়?(আভি)

সরি মি:আভি উনি আজ সকালেই জেলে থাকাকালীন মারা গেছে। ময়নাতদন্তের জন্য ওর লাশ পাঠানো হয়েছে।আর আমি আপনাকে সব জানালাম।এখন আমরা আরো কিছু ইনভেস্টিগেশন করবো!(ওসি)

জ্বি।প্লিজ করেন।আর শুনোন।প্লিজ আমাকে ওই ড্রাইভারের একটা ছবি দিবেন।(আভি)

আচ্ছা।আমি এখুনি পাঠিয়ে দিচ্ছি।
বলেই ওসি ফোনটা কেটে দিলো।

আভি ওসির কথা শুনে বসে পড়লো।
তখনই টিং করে একটা শব্দ করে একটা হোয়াটস অ্যাপ এ ম্যাসেজ আসলো।আভি ম্যাসেজ খুলেই দেখলো সেই ড্রাইভার।কিন্তু কে এই ড্রাইভার সেটাই আমি তো ওকে চিনি না।তাহলে কে উনি?আর আস্থাকে মারার চেষ্টা কে করতে পারে?আস্থাকে মারার জন্য ট্র্যাকিং ডিভাইস কেনো ব্যবহার করতে চেয়েছিল?চাইলে তো ছবি দিয়েই ওকে মারার চেষ্টা করতে পারতো!কিন্তু করে নি?তাহলে কি চায় ও?

এইটা ভাবতেই হোয়াটস অ্যাপ এ আরেকটা ম্যাসেজ আসে। ম্যাসেজটা এমন
মি:আভি চৌধূরী!কি ভাবছো?ট্র্যাকিং ডিভাইস দিয়ে কেনো মারতে চাইলাম।তোমার স্ত্রীর ছবি থাকা সত্ত্বেও?দাড়াও এর উত্তর আমি দিচ্ছি।এতো কষ্ট করে তোমাকে ভাবতে হবে না।আসলে কি বলো তো এতো সহজে তোমার স্ত্রীকে মারবো না।ধীরে ধীরে ওকে শেষ করবো।এইটা তো শুধু ট্রেইলার ছিলো পিকচার তো আবি বাকি হ্যায় মেরি জান।আমি চাই তুমি ভয় পাও তোমার স্ত্রীকে হারানোর ভয়।আর ভয়ের একটু ছোট্ট নমুনা দেখলাম তোমাকে।তাই তোমার স্ত্রীকে মারলাম না।আর হ্যা যেই চোরটা তোমার স্ত্রীর ব্যাগ নিয়ে পালিয়েছে সেটাও আমারই লোক।আর যে মেরেছে সেও আমারই লোক।এইবার ভাবো এতো কিছু প্ল্যান যে করতে পারে সে আর কি করতে পারে?আর আমি কিন্তু এও জানি যে তোমার স্ত্রী এখন বাসায় নেই।আর তুমি জানোই না সে কোথায় তাই না?কিন্তু আমি জানি সে কোথায়।বলবো কোথায়?থাক তুমিই খুঁজে বের করো।
Bye মেরি জান।

নাম্বার এ কল দিয়ে দেখলাম কিছুই হচ্ছে না।না এই নম্বরের পিছে ঘুরে লাভ নেই।এইটা নকল।কিন্তু ও যদি সত্যি জানে আস্থা কোথায় তাহলে?তাহলে ও কি আবার ক্ষতি করবে আস্থা?আমার আসুমনির আবার ক্ষতি করবে ও?শিট আমি কেনো আসুমনীর সাথে ঝগড়া করতে গেলাম আমি?কেনো কথা কাটাকাটি করতে গেলাম?আমি এখন কোথায় খুঁজব ওকে?নিহাল,,,!নিহালকে একটা ফোন দেই।


অন্যদিকে
তুলি তোমাকে যেই ম্যাসেজ পাঠাতে বলেছিলাম পাঠিয়েছ?

আবার বলতে।একদম আপনি যেইভাবে বলছেন সেই ভাবে পাঠিয়েছি।কিন্তু আমাকে একটা কথা বলুন তো আপনি আস্থাকে মেরে ফেলতে পারতেন কিন্তু মারেন নি কেনো?(তুলি)

আমি আভির ওর বাবার মতো হাল করতে চাই।যেমন করে ওর মা বাবাকে আলাদা করেছি আর ওর বাবাকে মরার অপেক্ষাতে ফেলিয়ে রেখেছি ঠিক তেমন ভাবে ওকেও মরার মত করে ফেলে রাখবো।তখন আরমান চৌধুরীর উপর সব দোষ চাপিয়ে ছিলাম এখনও তাই করবো।আস্থার মৃত্যুটাও আরমান চৌধূরীকে দোষী বানাবো।
আর বেচারা আভি ভাবে তুমি ওর দাদুর কারণে ওর জীবন থেকে চলে এসেছো।কিন্তু না তোমাকে আভির জীবনে আমিই নিয়েছি আর আমিই তোমাকে ওর জীবন থেকে চলে আসতে বলেছি যাতে আরমান চৌধূরী আর আভির সম্পর্ক আরো খারাপ হয়ে যায়।আর এইটাই তো আমি চাই।আর শোনো তোমাকে বলেছিলাম না।দেশ ছাড়তে! ছেড়েছ?

হুম।হুম। এতো দিন তো দেশের বাইরেই ছিলাম।আপনার জন্যই তো এই কয়দিনের জন্য আসতে হলো।এখন আবার পালাতে হচ্ছে।কতো দিন এই চোর পুলিশ খেলবো বলেন তো?(তুলি)

যতদিন না আরমান,আভি আর আস্থাকে মারতে পারছি।আর তোমার কি?তুমি তো সব টাকা পেয়েই যাচ্ছো।

আচ্ছা।যা করার করুন তো।এখন ফোন রাখি!আমার ফ্লাইট টেক অফ করবে।(তুলি)

রাখো।
বলেই ফোনটা কেটে দিলো।


নিহাল।নিহাল আস্থা কোথায় জানিস?(আভি চিন্তিত হয়ে)

কি হয়েছে তোদের বলতো?কাল রাত থেকে দুপুর পর্যন্ত আস্থা হাজার বার ফোন দিয়ে জিজ্ঞেস করছে তুই কোথায়?এখন তুই ফোন দিয়ে জিজ্ঞেস করছিস আস্থা কোথায়?আর তুই কি মানুষ?মেয়েটাকে না বলে চলে গেলি?তুই জানিস আস্থার তোর জন্য টেনশন করতে করতে কি অবস্থা হয়ে গেছে।কেমন বেপোরা তুই?মেয়েটা আমাকে ফোন দিয়ে কি কান্না?তোকে খুঁজে পাচ্ছে না বলে।আর তুই ওকে কষ্ট দিচ্ছিস।(নিহাল)

ভাই।যতো বকা দেয়ার পরে দিস আমি মাথা পেতে নিবো।কিন্তু এখন দয়া করে আস্থার কোনো খবর আমাকে দে।প্লিজ।আমার খুব টেনশন হচ্ছে।(আভি)

আচ্ছা।দেখছি আমি কি করতে পারি?(নিহাল)

আচ্ছা।
বলেই আভি ফোনটা রেখে দিলো।

আমি তো চাই তুই আস্থার জন্য এমন পাগল হয়ে যা।কিন্তু সত্যি আস্থা কোথায় গেছে?।(নিহাল মনে মনে)


আভি বসে বসে ভাবছে কে আস্থার ক্ষতি করতে পারে।কে আস্থাকে আমার জীবন থেকে সরিয়ে ফেলতে চায়?আরমান চৌধূরী?না উনি এতটাও নিচে নামবে না।তাহলে যদি উনি না হয় তবে কে হতে পারে?

পরেই আভি উঠে ওদের কক্সবাজারের তোলা সব ছবি দেখতে শুরু করলো।

এই ছবি গুলোর মধ্যে কিছু তো একটা পাবো!কিছু তো একটা খুঁজে পাবো আমি!খুঁজে বের করতেই হবে আমার।

আভি খুব গভীরভাবে সব ছবি পর্যবেক্ষণ করতে লাগলো।প্রায় অনেক গুলো ছবি দেখার পর আভির একটা ছবি দেখে চোখ কপালে উঠে গেলো।ও এইখানে কি করছে?তারমানে ও আমাদের উপর লক্ষ্য রাখছিলো?আর ওই তাহলে আস্থার ব্যাগে ট্র্যাকিং ডিভাইস রেখেছিল।তোমাকে আমি ছাড়বো না।অনেক কষ্টে তোমাকে খুঁজে পেয়েছি তুলি।
(ছবিতে দেখা যাচ্ছে তুলি আস্থার দিকে তাকিয়ে আছে আড়াল থেকে)

আভি একজনকে ফোন দিল।
হ্যালো।আমাকে একটা মেয়ের ইনফরমেশন জোগাড় করে দিতে হবে।(আভি)

কার?স্যার।(লোকটা)

তুলি।আমি ছবি পাঠাচ্ছি।তুমি যতো তাড়াতাড়ি সম্ভব খুঁজে বের করো ও কোথায়?(আভি)

জ্বি স্যার।(লোকটা)

আভি ফোনটা রেখে।
তুলি তুমি কি এর পিছনে আছো?কেনো করলে তুমি এইটা?আরমান চৌধূরী তোমাকে যেতে বাধ্য করেছে বলে তুমি তার বদলা নেওয়ার জন্য আস্থার ক্ষতি করতে চাও?নাকি আমি আস্থাকে ভালোবাসি বলে তুমি ওকে আমার কাছ থেকে সরিয়ে ফেলতে চাও?তুমি কি রাগ করেছো তোমাকে ভুলে আমি আস্থাকে ভালোবাসি বলে।আমার কাছে তোমার মূল্যটা ঠিক আগের মতোই আছে।কিন্তু আমি আস্থাকে ছাড়তে পারবো না।ওকে আমি খুব ভালোবাসে ফেলেছি হয়তো তোমার থেকে বেশি।এখন আস্থাই আমার সব।কিন্তু আমি তোমাকে ভুল করতে দিবো না।আস্থার ক্ষতি করতে দিবো না।

।#Marriage_With_Benefits
#Part_32
Writer::Sanjida Nahar Shaanj
.
.
হ্যালো ডালিয়া?(নিহাল)

আরে আজ সূর্য্য কোথা থেকে উঠেছে?সকাল সকাল আপনি আমাকে ফোন দিলেন?(ডালিয়া)

একটু দরকার ছিলো এই আর কি?(নিহাল)

ঐটাই তো!কিছু দরকার হলেই আপনার আমার কথা মনে পড়ে।এমনি এমনি তো আপনি আমাকে ফোন দেওয়ার মানুষ না।বলুন কি দরকার আছে?(ডালিয়া নিরাশ হয়ে)

এমন করে বলছো কেনো!(নিহাল অবাক হয়ে)

কেমন করে বললাম? আচ্ছা ছাড়ুন তো বলুন কি দরকার?(ডালিয়া)

আসলে তুমি কি জানো আস্থা কোথায়?(নিহাল)

কেনো কি হয়েছে আস্থার? কোথায় আস্থা?(ডালিয়া চিন্তিত হয়ে)

আসলে আভি আর আস্থার একটু মনমালিন্য হয়েছে।এখন আস্থা যেনো মন খারাপ করে কোথায় চলে গেছে।(নিহাল)

মন খারাপ থাকলে তো আস্থা একটা জায়গাতেই যায়!(ডালিয়া)

কোন জায়গাতে?(নিহাল)

অনাথ আশ্রমে!ওখানে গিয়ে খুঁজতে পারেন।আমার জানা মতে ও সেখানেই থাকবে!(ডালিয়া)

ওহ।ধন্যবাদ ডালিয়া।(নিহাল)

আচ্ছা।তাহলে এখন রাখি।(ডালিয়া)

এই শুনো,,শুনো(নিহাল)

হুম?(ডালিয়া)

তুমি কি এই শুক্রবার ফ্রি আছো?(নিহাল)

কেনো?(ডালিয়া কৌতূহল নিয়ে)

আসলে এমনি একটু বের হতাম তোমাকে নিয়ে!(নিহাল)

আমি ফ্রি।(ডালিয়া এক্সসাইটেড হয়ে)

আচ্ছা।তাহলে আমি তোমাকে তোমাদের বাড়ির মোড় থেকে পিক করবো।(নিহাল)

আচ্ছা।
বলেই ডালিয়া ফোনটা কেটে দিলো।

ইয়েস। ইয়েস।নিহাল আর আমি সারাদিন একসাথে।কি মজা হবে?(ডালিয়া মনে মনে)


হ্যালো।আভি(নিহাল)

হুম।আস্থার কোনো খবর পেলি?(আভি চিন্তিত হয়ে)

আস্থাকে কি অনাথ আশ্রমে খুঁজেছিস?(নিহাল)

শিট।সব খুঁজেছি।শুধু ওই জায়গাটা বাদ পড়ে গেছে।(আভি মাথায় হাত দিয়ে)

গিয়ে দেখ।হয়তো ও সেখানে থাকতে পারে।(নিহাল)

ওকে।এখন রাখছি।
বলেই ফোনটা রেখে আভি বেরিয়ে গেলো।


অন্যদিকে
খালা আমাকে খাওয়ানোর অনেক চেষ্টা করছে।কিন্তু আমার গলা দিয়ে কোনো খাবার নামছে না।আভির কোনো খবর আমি জানি না।ও কি বাসায় ফিরলো না ফিরলো না কিছুই বলতে পারছি না।এইদিকে কাউকে ফোনও দিতে পারবো না।তাহলে সবাই জেনে যাবে আমি এখানে।কালকে এখানে আসার পর সুট কেস করে বাচ্চাদের জন্য খেলনা আর কিনে আনা জিনিস গুলো দিলাম।মন ভালো না থাকলেও ওদের এই হাসি মাখা মুখ দেখলে খুব ভালো লাগে আমার।তাই তো সব সময় এই খানে চলে আসা।

আমার বিয়ের কথা আমি খালাকে বলতেই উনি অবাক।উনি জিজ্ঞাসা করছে আমি খুশি আছি কি না?কিন্তু আমি কি সত্যি খুশি আছি?উনাকে তো সুখী আছি বলে চালিয়ে দিলাম কিন্তু নিজেকে কি করে চালাবো?আভি আমাকে ভালোবাসে।অনেক ভালোবাসে।কিন্তু ওর এই হটাৎ রাগ আর হটাৎ অবহেলা আমাকে খুব কাদায়।আমার খুব খারাপ লাগে।আভিকে কেনো জানি অপরিচিত মানুষ লাগে আমার?

আমি রুমে বসে বসে কথা গুলো ভাবছি তখনই খালা আসলো
আসু এখন তো খেয়ে নে!(খালা)

ভালো লাগছে না খালা।(আমি অন্যদিকে মুখ করে)

কাল দুপুর থেকে কিছু মুখে দিলি না।নে আমি খাইয়ে দিচ্ছি।
বলেই মুখে খালা খাবার তুলে দিলো।

আমিও আর না করলাম না।না হলে খালার সন্দেহ হতে পারে।কেমন মানুষ আমরা? অন্যর জন্য নিজের কষ্ট ধামাচাপা দেই।

আমি বাগানে বসে আছি।এখন বিকাল প্রায়।আকাশ খুব মেঘলা রাতে হয়তো ঝড় তুফান হতে পারে।বর্ষা কাল শুরু হয়ে গেছে এখন শুধু বৃষ্টি আর বৃষ্টি।আমার মনের মত এখন আকাশেরও কান্নার পালা।কেমন তাই না?
আমি বাগানের সিড়িতে বসে আছি তখন কোথা থেকে যেনো একটা কবুতর উড়ে এসে আমার কোলে বসে পরলো।
আমি তাকাতেই দেখলাম কবুতরের পায়ে একটা কাগজ বাঁধা।
আমি কবুতরটিকে ধরে ওর পা থেকে কাগজটা খুলে হাতে নিতেই কবুতরটি উড়ে চলে গেলো।আমি কাগজটা খুললাম।কাগজটা একটা চিঠি। কিন্তু এই ডিজিটাল যুগে চিঠি কে লিখে?আমি চিঠি খুলে দেখলাম সেখানে খুব সুন্দর করে লিখা আই অ্যাম রিয়েলি সরি।
কথাটা আমার মাথার উপর দিয়ে গেলো।আমি ভাবলাম হয়তো কেউ অন্য কাউকে সরি বলার জন্য কবুতরটি পাঠিয়েছে।আর আমি তা পেলাম।মুচকি হেসে কাগজটা ছিড়ে ফেললাম।আমি আবারও বাগানে বসে আছি হটাৎ কোথা থেকে যেনো আবার একটা কবুতর উড়ে এসে আবারও আমার কোলে এসে বসলো।আমি আরো অবাক হলাম কারণ এই কবুতরের পায়েও চিঠি।আমি খুলতেই দেখতে পেলাম
আর কখনো এমন হবে না।সরি আসুমনি।দরকার হলে আমি এই বার একশো বার কানে ধরে উঠবস করবো।

চিঠি পরেই আমি বুঝে গেছি এইটা আর কেউ না আমারই গুণধর স্বামী। বাহ!কি উপায় বের করলো আমাকে সরি বলার। ইমপ্রেসিভ।

কিন্তু আমি ক্ষমা করছি না।আমি সেই চিঠিটিও ছিঁড়ে ফেললাম।ফেলে সেখান থেকে উঠে যেতে লাগলাম।তখনই অনেক গুলো বেলুন নিয়ে আমার সামনে কেউ আসলো।বেলুন গুলোর কারণে চেহারা ডেকে থাকায় আমি চিনতে পারছি না।কিন্তু আমি জানি লোকটি আর কেউ না আভিই।পরেই পিছন থেকে অনেক গুলো কবুতর উড়তে শুরু করলো।আমি অবাক হই নি বললে চলবে না!আমি অনেক অবাক হয়েছি।বলতে গেলে খুব অবাক হলাম।কিন্তু তবুও চুপ করে আছি।রাগী চেহারটা এখনও বজায় রাখতে হবে।

কি হয়েছে এইভাবে বসে আছেন কেনো মি:চৌধূরী?(আমি)

মি:চৌধূরী কবে থেকে হলাম?আমি তো আভি তোমার কিউট বর।(আভি দাত বের করে হাসি দিয়ে)

ও তাই নাকি।যে আমাকে অকারণে বকে।শুধু শুধু আমার উপর চিৎকার করে আমার তো সন্দেহ হয় আমি কি সত্যি তার বউ?(আমি কঠিন গলায়)

আসুমনি।আমি সত্যিই অনেক দুঃখিত।আমার তখন মাথা ঠিক ছিলো না।এখন তো নিজের ভুল বুঝতে পেরে তোমার কাছে ক্ষমা চাইছি।(আভি অনুতপ্ত হয়ে)

ও তাহলে যখন আপনার মাথা ঠিক থাকে না তখন আপনি আমার উপর চিৎকার করবেন।আর যখন সব ঠিক হয়ে যাবে তখন আমাকে একটা সরি বলে দিবেন।এতই সস্তা হয়ে গেছি না আমি আপনার কাছে?(আমি চিৎকার করে)

তুমি ভুল বুঝছো!আমি সত্যিই খুব অনুতপ্ত।এখন প্লিজ আমাকে ক্ষমা করে দাও।ফিরে চলো আমার সাথে।(আভি হাত জোড় করে)

আভি আমি পুতুল না যেইটা দিয়ে তুমি খেলবে!আমি যাবো না।(আমি অন্যদিকে মুখ ঘুরিয়ে)

তাহলে আমিও যাবো না।এখানেই থাকবো।(আভি)

তুমি যদি অনাথ আশ্রমে ঢুকো তাহলে আমি এখন থেকে বের হয়ে যাবো!(আমি)

আমি অনাথ আশ্রমে ঢুকবো না।কিন্তু আমি এখানেই বসে থাকবো।বাগানে বসে থাকতে তো তোমার কোনো সমস্যা নেই।(আভি)

কেনো বসে থাকবে তুমি?(আমি বিরক্ত হয়ে)

এইটাই আমার শাস্তি ধরে নিতে পারো!
বলেই আভি বাগানের রাখা চেয়ারে বসে পড়লো।

তোমার যা মন চায় তাই কোনো!আমি কিছু বলবো না।
বলেই আমি ভিতরে গেলাম।


অন্যদিকে বাচ্চারা আমার হাসবেন্ড দেখবে বলে বাগানে গেলো।আভি এখন জাতীয় দুলাভাই হয়ে গেছে।খালাও সেখানে গেলো কিন্তু আমি রুমেই বসে আছি।তবে জানালা দিয়ে সব নেকামি গুলো দেখছি।

কি স্বামী স্ত্রী যুদ্ধ চলছে?(খালা আভির পাশে বসে)

এতো জিদ্দি মেয়ে কি করে সামলাও খালা!(আভি মিন্টুকে কোলে নিয়ে)

খবরদার আমি ভালো আপুকে কিছু বলবে না।(মিন্টু আভির কোলে থেকেই)

এই পিচি তুই কিন্তু আমার কোলে বসে আছিস?আর আমার কোলে বসে আমাকেই চুপ করতে বলছিস সাহস তো কম না।(আভি মিন্টুকে চেতানোর চেষ্টা করে)

তুমি শুধু আমার ভালো আপু,আসু আপুর বর দেখে তোমার কোলে উঠছি নাইলে কি আর উঠতাম?(মিন্টু)

তাই নাকি!(আভি মিন্টুকে সুড়সুড়ি দিয়ে)

আচ্ছা।মিন্টু এখন গিয়ে খেলা কর তো,, আমি তোর আসু আপুর বরের সাথে কথা বলি!(খালা)

পরেই মিন্টু আভির কোল থেকে নেমে খেলতে চলে গেলো।

আভি কি হয়েছে তোমার আর ওর মধ্যে?(খালা)

পরেই আভি খালাকে সব খুলে বললো।

এখন আমি কি করবো খালা?কি করে ওর রাগ ভাঙ্গবো?(আভি)

দেখো আভি তুমি তো দেখছোই আস্থা কেমন মেয়ে!ওকে কেউ অকারণে বকলে ও ভীষন রেগে যায়।আর ও আমাকে সব কথা বলে একদম শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত। যেহেতু ও আমার থেকে তোমাদের ঝগড়া লুকিয়েছে তার মানে ও কিন্তু অনেক কষ্ট পেয়েছে।এখন ওর রাগ কি করে ভাঙ্গবে সে তুমি জানো?এখন যদি তুমি আমার কাছ থেকে সাহায্য নেও তাহলে কিন্তু আস্থা বুঝে যাবে আর পরে আরো রাগ করবে।পড়ে আস্থাকে মানানো কিন্তু খুব কষ্ট হয়ে যাবে।(খালা)

না।না থাক খালা আপনার কিছুই করতে হবে না।কোনো সাহায্য করতে হবে না।এমনি যথেষ্ট রেগে আছে পরে আরো বেশি রেগে যাবে।আমিই দেখি কিছু একটা খুঁজে বের করি!(আভি)

আচ্ছা।তাহলে করো।আমি বরং যাই রাতে তোমাদের জন্য কিছু রান্না করি।নতুন বর এসেছে।(খালা)

আরে খালা।এতো কষ্ট করতে হবে কেনো?(আভি)

আরে এতে কষ্টের কি আছে?
বলেই খালা চলে গেলো।

আভি বাগানে বাচ্চাদের সাথে কানামাছি,ক্রিকেট, ফুটবল,আরোও অনেক রকম খেলা খেলছে।আমি জানালা দিয়ে দেখছি আভির কান্ড।আভি আজও সেই প্রানবন্ত হাসি হাসছে।মনে হয় আমি সব ভুলে গেলেও সেই প্রানবন্ত করে ভুলবো না।মনে হচ্ছে আমার মনে যেই রাগের বরফ ছিলো তা গলে যাচ্ছে।এই হাসির আগে আমার রাগ সব সময় পানি হয়ে যায়।

এতো যখন দেখতে মন চায় তাহলে তো যেতেই পারো।আসু আপু!

আমি কথা শুনে পিছনে তাকাতেই দেখি রাবেয়া।

তুই বলে কলেজ থেকে স্টাডি ট্যুরে গিয়েছিলি?(আমি)

সারা জীবন কি স্টাডি ট্যুরে থাকবো?আজ একটু আগেই আসলাম।কেমন আছো তুমি?(রাবেয়া)

ভালো আছি।তুই?(আমি)

আমারটা ছাড়ো তুমি কি সত্যি ভালো আছো বলতো?সত্যিই কথা!(রাবেয়া)

কেনো?তোর মনে হয় না আমি ভালো আছি?(আমি)

রাবেয়া এসেই আমার গলা জড়িয়ে ধরলো আমি তখন জানালার পাশেই বসে ছিলাম। ও আমাকে জড়িয়ে জানালার দিকে চেয়ারটা ঘুরিয়ে বললো
জানো।আমি না অনেক রোমান্টিক বই পড়ি।ওই যে দেখছো লোকটা(হাত দিয়ে আভিকে ইশারা করলো)ওই লোকটার কাছে যাওয়ার জন্য যে মনটা ছটফট করছে তা কিন্তু আমি ঠিকই বুঝতে পারছি!(রাবেয়া)

আমি ওর কানে ধরে
খুব পেকে গেছিস তুই রাবেয়া! হ্যাঁ?

আহ্।আপু লাগছে।(রাবেয়া ছুটার চেষ্টা করে)

লাগুক।এখন বল এইসব কথা থেকে জানলি?(আমি)

আমি এইসব কথা থেকে জানি তা তোমার জানার দরকার নেই।তুমি শুধু এইটুকু জানো যে আমি তোমাকে যখন আমার জন্ম হয়েছে তখন থেকেই দেখে আসছি।তোমাকে খুব ভালো করেই জানি।হতে পারে তোমার সাথে তেমন চলাফেরা হয় না।কিন্তু তোমাকে চিনতে হলে আমার আর চলা ফেরা লাগবে না।(রাবেয়া)

আমি ওর কথা শুনে চুপ করে আছি।

দেখো আপু।আমি জানি না তোমাদের মধ্যে কি হয়েছে?যদি উনি কোনো ভুল করে থাকে তাহলে উনাকে শাস্তি দাও।দূরে চলে যেও না।আপন মানুষ দূরে চলে গেলে কেমন লাগে তা তুমি আর আমি কিন্তু ভালো করেই জানি।(রাবেয়া)

তাই বলে উনি যখন তখন আমার উপর রাগ করবে?(আমি)

আপু তুমিই তো বলো।যাদের আমরা বেশি ভালোবাসি তাদের উপর বেশি রাগ করি।উনিও তোমাকে অনেক ভালোবাসে।আমি দেখেছি আজ উনি তোমাকে কত সুন্দর করে সরি বলছে।উনি সত্যিই অনুতপ্ত বলেই সরি বলছে।(রাবেয়া)

রাবেয়া।তুই যা ফ্রেশ হয়ে নে।(আমি আভির দিকে তাকিয়ে)

ওকে।আমি যাচ্ছি।
বলেই রাবেয়া চলে গেলো।

আমি একাধারে আভির দিকে তাকিয়ে আছি।


রাতে খালা আভিকে খাবার খাইয়ে এসেছে।সাথে আমাকেও খাওয়াতে খাওয়াতে বুঝালো স্বামী স্ত্রীর মধ্যে এমন একটু হয়ই হেনতেন হাবিজাবি।আর কত কি?কিন্তু আমি আমার রাগে উটুট।একটুও নড়ছি না।আভিও বাগানে বসে আছে ও সেখান থেকে আমার রাগ না ভাঙিয়ে যাবে না।খালা গিয়ে খেতাবালিশ দিয়ে আসলো সাথে কয়েলও জ্বালিয়ে দিয়ে আসলো।আমার কেনো জানি খুব খারাপ লাগছে আভির জন্য।আচ্ছা আমার রাগটা কি বেশি বেশি হয়ে যাচ্ছে? তা হোক। তাতে কি?উনি তো নিজেই নিজেকে শাস্তি দিচ্ছে।আমি তো আর বলিনি বাগানের চেয়ারে গিয়ে ঘুমান!আমার কি?আমি শান্তি মতো ঘুমাবো।
বলেই ঘুমাতে গেলাম।মাঝ রাতেই শুনতে পেলাম ঝড়ো হাওয়া বইছে।বাহিরে অনেক ঝড় তুফান হচ্ছে।তখনই হটাৎ মনে হলো বাহিরে আভি।

আমার কি যেনো হলো বুঝতে পড়লাম না।এক দৌড়ে চলে গেলাম ওর কাছে।আভির কথা চিন্তা করে যেনো আমার রাগ সব পানি হয়ে গেলো আমি যে ওর উপর রাগ করে আছি সেটা আমি ভুলেই গিয়েছিলাম।হয়তো এইটাই ভালোবাসা।ভালোবাসার মানুষের কিছু হলে যে মাথা ঠিক থাকে না আমি তা খুব ভালো করেই সেদিন বুঝতে পারলাম।

আভি আভি।(আমি বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতে বাগানে আভিকে খুঁজতে খুঁজতে)

আভিকে দেখতে পেলাম না।অনেক খুঁজার পর দেখি আভি একটা গাছের নিচে কাচুমাচু হয়ে বসে আছে।হয়তো বৃষ্টি থেকে বাঁচার জন্য।কিন্তু ওর পুরো শরীর ঠান্ডায় কাপছে।

আভি। আভি কি হয়েছে তোমার?(আমি গিয়েই আভিকে জড়িয়ে ধরলাম)

আস্থা। আই অ্যাম রিয়েলি সরি।আমার অনেক বড়ো ভুল হয়ে গেছে।(আভি)

আরে রাখো তোমার সরি।আগে বলো এতো বৃষ্টি হচ্ছে তুমি ভিতরে যাওনি কেনো?(আমি)

তুমি বলেছিলে না আমি ভিতরে গেলে তুমি অনাথ আশ্রম থেকে বেরিয়ে যাবে তাই আর যাই নি(আভি কাপতে কাপতে)

তা,,,আমি তো বলে ছিলাম আমাকে বকা দিতে না সেটা তো ঠিকই দিয়েছো!(আমি)

এইজন্যই তো শাস্তি পাচ্ছি।(আভি)

হয়েছে,, অনেক শাস্তি এখন চলো।(আমি আভিকে টানতে টানতে)

তুমি ক্ষমা করছো?(আভি আমার পিছু আসতে আসতে)

হুম।কিন্তু এটাই লাস্ট বার।(আমি)

ইয়াহু। চলো।(আভি)

তুমি গাড়ি আনছো না?(আমি)

হুম।কেনো?(আভি)

আমরা এখনই বাসায় যাবো।তুমি ভিজা কাপড়ে থাকবে না।আর অনাথ আশ্রমে তোমার বয়সের কেউ নেই,,,যে তুমি তার কাপড় পরে থাকবে।তাই এখন আমরা বাসায় যাবো।ড্রেস চেঞ্জ না করলে তোমার ঠান্ডা লেগে যাবে।(আমি)


চলবে,,,,,
চলবে…..

Part 30

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here