Marriage_With_Benefits part 33+34

#Marriage_With_Benefits
#Part_33
Writer::Sanjida Nahar Shaanj
.
.
আভি আমাকে বৃষ্টিতে জড়িয়ে ধরে
আমার বউ যাই বলবে তাতেই আমি রাজি।

হইছে!ছাড়ো।না হলে দুইজনেরই ঠান্ডা লেগে যাবে।(আমি)

ওকে।চলো।

আমি আর আভি চলে গেলাম।খালাকে কিছু বললাম না।উনি হয়তো ঘুমাচ্ছে।সকালে একটা কল করেই জানিয়ে দিবো।তাহলে আর উনি কোনো চিন্তাই করবে না।


অন্যদিকে খালা জানালা দিয়ে আভি আর আস্থাকে দেখে
আস্থা।আমার মেয়েটা বড় হয়ে গেছে। নিজের সংসার নিজে সাজাতে শিখে গেছে।


মাঝরাতে
আমি আর আভি ভিজে শরীরে বাড়িতে ঢুকলাম।বাসার সবাই ঘুমাচ্ছে।মিস সাবিনা গেট খুলে দিলো।
রুমে
আভি তুমি যাও।তুমি বেশি ভিজে গেছো?(আমি)

নাহ।তুমি যাও তুমিও ভিজে গেছো।(আভি)

আমি কি বলছি তুমি বুঝতে পারছো না? নাকি আবার আমাকে রাগাবে?(আমি কোমরে হাত দিয়ে ওয়াশরুমের দিকে অঙ্গুল দিয়ে)

আমার কাছে এর থেকে ভালো একটা আইডিয়া আছে।বলি?(আভি দুষ্টু হাসি দিয়ে)

কিহ!(আমি সন্দেহর দৃষ্টিতে)

তুমি আর আমি এক সাথে ঢুকি?কেমন আইডিয়া?(আভি হাসি দিয়ে)

খুব বাজে।এখন তুমি যাবে কি যাবে না?(আমি রাগী গলায়)

যাচ্ছি।
বলেই আভি এক বুক হতাশা নিয়ে ওয়াশরুমে ঢুকলো।

আমি ভেজা শরীর নিয়ে বেলকনিতে দাড়িয়ে আছে।আকাশে বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে।অনেক বৃষ্টি হচ্ছে বাহিরে আগের থেকে বেশি।হয়তো আজ সারারাত এমন ঝড় তুফান হবে।আকাশের ঝড় তুফান শেষ হয়ে গেলে সুন্দর একটা সকাল আসে।কিন্তু মানুষের জীবনে ঝড় হলে শুধু মন ভাঙ্গে,থাকে এক বুক হতাশা,আর চোখে বৃষ্টির মত কান্না আর কিচ্ছু না।
আমি ভাবতেই পারছি না।আজ যদি আমি টের না পেতাম।আভি সারারাত বৃষ্টিতে ভিজত!এই ছেলে বুঝা বড়ো দায় হয়ে দাঁড়াচ্ছে আমার কাছে।ভালোবাসে এতো কাছে টেনে নেয়।আবার রাগ হলে দূরে সরিয়ে দেয়।আর আমি এমনি ছেলের প্রেমে পড়ে আছি।এখন না পারবো ওকে ভুলতে না পারবো ওকে ছাড়তে।শত কষ্টেও মন শুধু ওকেই চাইবে।

আমি মনোযোগ দিয়ে কথা গুলো ভাবছিলাম।তখনই আভি ডাক দিলো।

আস্থা।(আভি)

হুম।বলো কি হয়েছে?(আমি)

আমাকে একটু ড্রেস গুলো দিবে?আমি নিতে ভুলে গেছি!(আভি)

আচ্ছা।দিচ্ছি।
বলেই আভির ড্রেস গুলো বের করে আলমারিতে থেকে নিলাম।

আভি?(আমি ওয়াশ রুমের দরজায় নক করে)

আমি ওয়াশ রুমের দরজায় নক করতেই আভি এক টানে আমাকে ওয়াশ রুমে নিয়ে চলে গেলো।

আমি আর আভি ওয়াশ রুমে শাওয়ারের নিচে দাড়িয়ে আছি।
আভি কি হচ্ছে এইটা?(আমি চোখ বন্ধ করে)

কি হচ্ছে তা চোখ খুলে তো দেখতে পারবে!(আভি একদম আমার কানের কাছে এসে ফিসফিস করে)

আমি ধীরে ধীরে চোখ খুলেই দেখতে পেলাম আভি আমার একদম কাছে দাড়িয়ে আছে।ওর খালি বুকটা বেয়ে শাওয়ারের পানি গুলো পড়ছে।তা দেখে আমি আবার চোখ বন্ধ করে ফেললাম।

আভি।তুমি খালি গায়ে কেনো?(আমি)

আমি খালি গাঁয়ে কেনো তা জানতে হবে না?তুমি এত লজ্জা পাচ্ছো কেন?তোমার তো সব কিছুই দেখা।(আভি)

ওই।তোমার কি লজ্জা করে না!(আমি মুখে হাত দিয়ে)

বউয়ের কাছে লজ্জা পেলে বাবা হবো কি করে?(আভি আমার মুখ থেকে হাত সরিয়ে)

আমি চুপ করে আছি।

শাওয়ারের নিচে দাঁড়িয়েও আপনার চোখ মুখ লাল হয়ে যাচ্ছে।এটা কি আপনার সম্মতি ভাবতে পারি আসুমনি?(আভি)

আমি লজ্জায় আভিকে জড়িয়ে ধরলাম। মন চাচ্ছে এই মুখ যেনো আমি ওর বুকে লুকিয়ে ফেলি।

আভি,,ওর থেকে আমাকে ছাড়িয়ে আমার ঠোঁটে ঠোঁট মিলিয়ে দিলো।আমাদের ভালোবাসা আরেক দফা পূর্ণতা পেলো।


সকালে
আসুমনি উঠো।(আভি পর্দা সরাতে সরাতে)

আভি প্লিজ একটু ঘুমাতে দাও না।প্লিজ।(আমি চাদর মুড়ি দিয়ে)

ভুলেও না।আর কত ঘুমাবে? কম্বকর্ণ।(আভি আমার মুখ থেকে চাদর সরিয়ে)

দূর।তুমি সারারাত ঘুমাতে দিলে তো ঘুমাবো?(আমি চিৎকার করে)

এই মেয়ে।সারা বাড়িতে জানাতে হবে কালরাতে কি হয়েছে?(আভি আমার মুখ চেপে ধরলো)

দূর।বুঝেছি এখন তুমি আমাকে দিনেও শান্তি মতো ঘুমাতে দিবে না।(আমি উঠে)

শান্তি মতো ঘুম না।কয়দিন ভার্সিটিতে যাওয়া হয় না খেয়াল আছে?(আভি)

আমি কিউট ফেস করে আভির দিকে তাকিয়ে আছি।

এইভাবে তাকিয়ে থাকলে হবে না।উঠে ফ্রেশ হয়ে নাও।(আভি)

দূর।এই দজ্জাল বর আমার কপালেই জুটলো।(আমি এক বুক হতাশা নিয়ে ওয়াশরুমে ঢুকলাম।)

বের হয়ে দেখি আভি আমার ভার্সিটি ব্যাগ গুছিয়ে নিজে শার্ট প্যান্ট পরে তৈরি হচ্ছে।
তুমি আমার ব্যাগ গুছিয়ে দিলে?তুমি জানো আজ আমার কি কি ক্লাস আছে?(আমি অবাক চোখে আভির দিকে তাকিয়ে)

হুম।তোমার ক্লাস রুটিন আমার মুখস্ত।এখন চলো আমাকে টাইটা বেধে দাও।(আভি)

আচ্ছা।একটা প্রশ্ন করি?(আমি আভির টাই বাঁধতে বাঁধতে)

হুম।করো!(আভি)

আমি জানি হয়তো আগে তোমার এই টাই অন্য কেউ বেধে দিতো আর হয়তো সে স্পেশাল ছিলো তোমার জন্য।এই জন্য তুমি আমাকে ওই দিন বকা দিয়েছিলে।কিন্তু এখন যেহেতু আমি তোমার টাই বেঁধে দেই।আমার এই কাজটা তুমি প্লীজ কাউকে দিও না।আমি যদি নাও থাকি তবুও এই টাই বাঁধার দায়িত্ব কাউকে দিও না।এইটা আমার কাছে স্পেশাল।(আমি টাই বাঁধা শেষ করে আভির মুখের দিকে তাকিয়ে আছি ওর উত্তরের আশায়)

আভি আমাকে জড়িয়ে ধরে বললো
সময় হলে তোমাকে সব বলবো কিন্তু তুমি এইটুকু বিশ্বাস রাখতে পারো তোমার জায়গা এই বুই থেকে কেউ নিতে পারবে না।আর তুমি কোথায় যাওয়ার কথা বলছো আমি তোমাকে কোথাও যেতে দিবো না।আমার বুকে আগলে রাখবো তোমাকে সব সময়।(আভি)

হুম।(আমিও আভিকে জড়িয়ে ধরে)

তুলির জন্য আমার মনে যেটুকু জায়গা ছিলো তা আছে কি না জানি না!কিন্তু তোমাকে ছাড়া যে আমি অচল।আমি যে বাঁচতে পারবো না।তা আমি হানিমুনের ঘটনাতে বুঝে গেছি।তুমিই আমার সব।তুলি আমার অতীত ছিলো যেটাকে আমি পাল্টাতে পারবো না।কিন্তু তুমি আমার বর্তমান আর ভবিষ্যত।যা আমি কিছুতেই হারাতে পারবো না।তুমি না থাকলে আমি পাগল হয়ে যাবো।তোমাকে ছাড়া আমি যে নিঃস্ব!(আভি মনে মনে)

অনেক হয়েছে।এখন রোমান্স করতে গেলে তোমার ভার্সিটি মিস হয়ে যাবে আর আমার অফিস।আমিও অনেক দিন হলো অফিসে যাই না।চলো চলো তোমাকে ভার্সিটিতে দিয়ে আমি অফিসে যাবো।
বলে আভি আমার হাত ধরে বাহিরে বেরিয়ে গেলো।


আভি আমার হাত ধরে নিচে নামছে আমার মনে হচ্ছে ও শো অফ করছে। কিন্তু কার সাথে শো অফ করছে কে জানে?আমার আভিকে দেখে মনে হচ্ছে ও একটা বাচ্চা যে নিজের একটা খেলনা দেখিয়ে শো অফ করছে।বলছে দেখো এমন একটা জিনিস শুধু আমারই আছে আর কারো না।আর কোনো দিন কারো হবেও না।সত্যিই এই অ্যাংরি বার্ড যে কখন বস বেবি হয়ে যায় বুঝাই মুশকিল। যাই হোক উনার শো অফ করা দেখে আমারও ভালো লাগছে।

আমরা খাবারের টেবিলে বসতেই আয়ুশ খাবারের টেবিল থেকে উঠে পড়লো।
আমার খাবার শেষ!আমি ভার্সিটিতে যাচ্ছি।
বলেই আয়ুশ বেরিয়ে গেলো।

মম।আমিও খাবো না।আমি কলেজে যাচ্ছি।
বলেই আরশিও বেরিয়ে গেলো।

হয়েছে শান্তি আমার ছেলে মেয়ে দুটো তোমার কারণে না খেয়ে চলে গেলো।এখন তোমার ভালো লেগেছে।(ঈশানি)

এতে ওর দোষ কি?ওদের খাওয়া শেষ তাই ওরা চলে গেছে।(রোহান)

তুমি চুপ থাকো।সব সময় আমার বিপক্ষে তোমার কথা বলতে হবে।কেনো তুমি সব সময় এই মেয়ের তরফে কথা বলো?আমাদের ছেলেমেয়ে কি তোমার কাছে কিছুই না?(ঈশানি)

রোহান চাচু কিছু বলতে যাবে তার আগেই আভি বলে উঠলো
কারোর না খাওয়া নিয়ে আপনি আমার স্ত্রীকে দায়ী করতে পারেন না।ওইটা সম্পূর্ণ আয়ুশ আর আরশির ব্যাক্তিগত ব্যাপার।এতে আস্থার কোনো দোষ আছে বলে তো আমার মনে হচ্ছে না।(আভি খেতে খেতে)

খুব ভালো আভি!এইভাবেই আস্থাকে রক্ষা করতে থাক তুই।তুই আর আস্থা এক থাকলে বাকি দুনিয়া তোদের কিছু করতে পারবে না (দাদু মনে মনে)

ওয়াও।আভি স্যার কি সুন্দর আস্থা ম্যাম এর পক্ষে কথা বলছে।আমি এইটার একটা ভিডিও করে নিহাল স্যার,কলি ম্যাম আর জিসান স্যারকে পাঠিয়ে দেই।নিহাল স্যার অনেক খুশি হবে।কলি ম্যাম আর জিসান স্যার ও আস্থা আর আভি স্যারকে আলাদা করার কথা ভাববে না।
বলেই আরিফ ভিডিও করতে শুরু করলো।

আর হ্যা। কথায় কথায় আমার স্ত্রীকে দোষ দেয়া বন্ধ করুন।ওর যা ইচ্ছা ও তাই করতে পারে।ও এই বাড়ির বউ যেমন আপনি!(আভি খেতে)

বাড়ির বউ হয়ে হকুম চালবে তেমন তো আর কথা না।এই বাড়িতে সবার এক সাথে খাবার খেতে হবে।এই নিয়ম যদি তোমার স্ত্রী না বানাতো তাহলে তো আর এইসব কিছুই হয় না।(ঈশানি)

আভি কিছু বলতে যাবে তার আগেই আমি ওকে থামিয়ে বললাম
এইটা এই বাড়ির নিয়ম যখন আমি করেছি।তখন মানতেই হবে।আর যদি না মানে তাহলে না খেয়ে থাকবে।এতে আমার কিছুই করার নেই।আর এই নিয়ম আপনি মানতে বাধ্য তো আপনার ছেলে মেয়ে কি?আর হ্যা চিন্তা করবেন না আপনার অমানুষ ছেলেমেয়ে দুটোকে আমি মানুষ করে দিবো বলেছি না।এখন শুরু করে দিবো।নিজে নিজে শুধরানোর মানুষ তো আপনার ছেলেমেয়ে না।কারণ হয়েছে তো আপনার মতই। এখন আমিই ঠিক করবো।আভি আমার খাবার হয়ে গেছে।চলো আমাকে দিয়ে আসবে।(আমি)

চলো!
বলেই আভি আমার হাত ধরে নিয়ে গেল।

বাহ!এই জুটির জুটি নেই।একটা ধানী লংকা তো একটা বোম্বাই মরিচ।যেই খাবে ঝালে মরে যাবে। ও সরি যেই লাগবে সেই ঝালে পুড়ে যাবে।এইবার শুধু পপকর্ন নিয়ে মুভি দেখার পালা।(দাদু খাচ্ছে আর ভাবছে)

বাবা।(ঈশানি)

দাদু মনোযোগ দিয়ে ভাবছে আর খাচ্ছে।

বাবা।(ঈশানি চিৎকার করে)

ছোটো বৌমা।কার উপর চিৎকার করছো তুমি?(দাদু ভ্রু কুঁচকে)

সরি বাবা।কিন্তু আপনিই দেখুন বাবা।ওই বেয়াদব মেয়ে কি করছে!(ঈশানি)

ঐটাই তো দেখছি।(দাদু বিড়বিড় করে)

কি বললেন বাবা!(ঈশানি)

কিছু না।দেখছি ওই মেয়েকে কি করা যায়।তুমি চিন্তা করো না।আমার খাওয়া হয়ে গেছে।আমি এখন অফিসে যাই।
বলেই দাদু আরিফকে নিয়ে বেরিয়ে গেলো।

আপনি কিছুই করতে পারবেন না বাবা।যা করার আমিই করছি।(ঈশানি মনে মনে)

আমার খাবার শেষ আমি অফিসে গেলাম।
বলেই রোহান ও চলে গেলো।


গাড়িতে
আসুমনি।তোমার আর আয়ুশ এর মধ্যে কিছু হয়েছে ভার্সিটিতে?(আভি ড্রাইভ করতে করতে)

তুমি কেনো জিজ্ঞেস করলে?(আমি চিন্তিত হয়ে)

আসলে।কালকে
পরেই আভি আয়ুশ এর বলা সব কথা গুলো বললো।

আমি সত্যিই জানতাম না ওর মনে এই সব ছিলো।বিশ্বাস করো!(আমি)

আমি বিশ্বাস করি।কিন্তু আমি জানতে চাই ভার্সিটিতে কি সত্যি কিছু হয়েছে?(আভি)

আমার মনে হয় আভিকে সব কথা বলে দেয়া দরকার।এখন না বললে পরে যদি আবার কিছু হয় তাহলে অযথা ভুল বোঝাবুঝি হবে আমাদের মধ্যে।আর তা আমি চাইনা।

কি হলো?বলো।(আভি)

আভি হয়েছিল কি
পরেই আমি আভিকে আয়ুশ এর প্রপোজ করার কথা বলি।আর যা যা হয়েছে সব খুলে বলি।আমার মনে হচ্ছে আভি রেগে আছে অবশ্য রাগবেই বা না কেনো নিজের বউকে নিজের ছোটো ভাই গার্লফ্রেন্ড হাওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে আর তা আবার আমি লুকিয়েও গিয়েছি।এখন নিশ্চয়ই আভি আমাকে বকবে।আর বকলেও আমার কোনো আফসোস নেই কারণ আমি যা করেছি তা আমার প্রাপ্য।আমি বসে আছি আভি র বকা খাওয়ার আশায় তখনই আভি গাড়ি ব্রেক করে হাসতে শুরু করলো।

তুমি কি ঠিক আছো?পাগলের মত হাসছো কেনো?(আমি অবাক হয়ে আভির দিকে তাকিয়ে আছি)

আয়ুশ সেই বাচ্চাই রয়ে গেল।তুমি জানো আয়ুশ আগে আমাকে ছাড়া কিছু বুঝতো না।সারাক্ষণ আমার পিছু পিছু ঘুরতো।আমি ছিলাম ওর অনুপ্রেরণা।কিন্তু কোথা থেকে যে কি হয়ে গেলো।ও এখন ওর অনুপ্রেরণা থেকে আমাকে ওর দুশমন ভাবে।কখনও ভাবিনি আমাদের ভাই ভাইয়ের এই সম্পর্ক এতো খারাপ হয়ে যাবে।(আভি)

হাহ!উনার ভাই উনার স্ত্রীকে প্রপোজ করছে তাতে উনার কোনো মাথা ব্যাথা নেই।এখন উনার ভাই আর উনার সম্পর্ক নিয়ে কথা বলা শুরু করে দিয়েছে!সত্যিই চৌধুরীরা মানুষ না এলিয়েন বুঝা বড়ো দায়।(আমি মনে মনে)

আভি ও আমাকে প্রপোজ করছে।আর আমি তোমাকে তা বলিনি।তোমার কি আমার বা আয়ুশ এর প্রতি কোনো রাগ নেই?(আমি সন্দেহর দৃষ্টিতে)

আছে তবে ওর উপরে না তোমার উপর।তুমি আমাকে বলো নি কেনো?তবে এই জন্য রাতে তোমাকে সুইট পানিশমেন্ট দিবো।(আভি আমার কানের কাছে ফিসফিস করে বলে গালে একটা চুমু দিলো)

আমি ওকে দূরে সরিয়ে গালে হাত দিয়ে বললাম
তোমার কি আমাকে বকা দিতে মন চায় না?আমি তোমার বিবাহিত স্ত্রী হয়েও,,,,

।#Marriage_With_Benefits
#Part_34
Writer::Sanjida Nahar Shaanj
.
.
আভি আমার ঠোঁটে আঙ্গুল দিয়ে চুপ করিয়ে বললো
হুশ।আমি তোমাকে বিশ্বাস করি তুমি কখনও আমাদের সম্পর্ক ভেঙ্গে যাবে এমন কোনো কাজ করবে না।আর এইটা তোমার প্রতি আমার বিশ্বাস।একটা সম্পর্কে শুধু ভালোবাসা থাকলেই চলে না বিশ্বাসও থাকতে হয় আর আমি তোমাকে বিশ্বাস করি((আমি আমার প্রতি আভির বিশ্বাস দেখে অবাক হয়ে গেলাম। ও এতো বিশ্বাস করে আমার উপর))।আর আয়ুশ এর কথা তোমার জন্য ওর মনে যেই ফিলিংস আছে সেইটা ও নিশ্চয়ই কাবু করবে।ও কখনই চাইবে না আমাদের সম্পর্ক ওর কারণে খারাপ হয়।আর এখন যা করছে তা শুধু রাগে করছে।আসলে কি বলতো বাবা মার আলাদা হয়ে যাওয়ার পর আমি আয়ুশকে একটা ভাইয়ের ভালোবাসা দিতে পারিনি।ওকে আমার যখন প্রোটেক্ট করার দরকার ছিল তখন আমি ওর কাছেও যায়নি।তাই ও আমার প্রতি একটু রাগ দেখাচ্ছে।আচ্ছা আস্থা তুমি কি আমাদের ভাইদের মধ্য সব কিছু ঠিক করে দিতে পারবে না?আমি চাই ও আবার সেই আমার আগের ভাই হোক।(আভি অনেক আশা নিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে)

আমি মুচকি হাসি দিয়ে বললাম
গাড়ি স্টার্ট করে ভার্সিটিতে গেলে তো আমি কিছু করতে পারবো।আর যদি এখানেই বসে থাকো তাহলে কিন্তু কিছুই হবে না।

হবে একটা জিনিস!(আভি দুষ্টু হাসি দিয়ে)

কিহ!(আমি সন্দেহর দৃষ্টিতে তাকিয়ে)

রোমাঞ্চ।
বলেই আভি এগুতে থাকলো।

আমি আভির মুখ ধরে

অনেক হয়েছে মি:কোবরা।এখন গাড়ি স্টার্ট করেন।

কাবাবের হাড্ডি অন্য মানুষের হতে হবে না আমার জনই কাবাবের হাড্ডি থেকে কম না।
বলেই গাড়ি স্টার্ট দিলো।

আমি মুচকি হাসি দিয়ে ওর গালে একটা চুমু দিলাম
এইটাই যথেষ্ট আর না।

এইটাই যথেষ্ট সারাদিনের জন্য।
বলেই আভি চোখ টিপ মারলো।

আমি উনার কান্ড দেখে হাসছি।


আভি আমাকে ভার্সিটিতে দিয়ে গেলো।
মেরি জান।খেয়াল রেখো।(আভি)

তুমিও আমার জান।(আমি)

আভি মুচকি হেসে গাড়ি নিয়ে চলে গেলো।


আমি ভার্সিটিতে ঢুকতেই ডালিয়া কোথা থেকে যেনো হাপাতে হাপাতে চলে আসলো।

বন্ধু তুই কই ছিলি?অনেক বড় কান্ড হয়ে গেছে।(ডালিয়া)

কি হয়েছে?(আমি চিন্তিত)

তোর দেবর আয়ুশ আছে না!(ডালিয়া)

কি হয়েছে আয়ুশ এর?(আমি)

ওর বিরুদ্ধে কে যেনো অভিযোগ আনছে! ও নাকি ড্রাগস নেয় আর ড্রাগস বেচেও নাকি কলেজে।ওকে সবাই মিলে অপমান করছে।ওর পক্ষে কেউ নেই ওর বন্ধুরাও ওর বিপক্ষে সাক্ষী দিয়েছে।ওকে পুরো তালে ফাঁসিয়ে দিয়েছে।ছেলেটা হল রুমে একা।সবাই ওকে কথা শুনাচ্ছে।বেচারার কথা কেউ বিশ্বাস করছে না।(ডালিয়া)

শিট।আয়ুশ কখনও এমন খারাপ কাজ করতে পারে না।এতো দিন যতই আমাকে বিরক্তি করেছে কখনও বাজে কোনো মন্তব্য করেনি।বাজে ভাবে ছুয়ার চেষ্টাও করেনি।নিশ্চয়ই কোনো বড়ো কারসাজি আছে কেউ ওকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছে।আমাকে এখুনি আভিকে জানাতে হবে।

যেই ভাবা সেই কাজ।আমি আভিকে ফোন করলাম।

হেলো আভি? কোথায় তুমি এখন?(আমি)

এইতো ভার্সিটির কাছেই আছি।কেনো কোনো সমস্যা হয়েছে?তোমাকে এতো চিন্তিত লাগছে কেনো?(আভি চিন্তিত হয়ে)

আমি আভিকে সব খুলে বললাম।

আস্থা।আমি আসা পর্যন্ত সব কিছু সামলাও।পারবে তো তুমি?(আভি)

আরে আমি সামলে নিবো!চিন্তা করো না।(আমি)

ওকে।আমি আসছি।
বলেই আভি ফোনটা রেখে দিলো।


আমি আর ডালিয়া দৌড়ে হল রুমে গেলাম।গিয়ে দেখি আয়ুশকে যে যেমন করে পারছে তেমন করে কথা শুনাচ্ছে।যারা আয়ুশ এর পায়ের যোগ্য ও না তারাও ওকে কথা শুনিয়ে যাচ্ছে।আয়ুশ প্রমাণের অভাবে কথাও বলতে পারছে না।
এই ছেলেকে কলেজে থেকে বের করে দেয়া হোক!(স্টুডেন্টরা)

এর কারণে অন্য ছেলে মেয়েরা খারাপ হয়ে যাবে।(প্রফেসররা)

প্রিন্সিপাল স্যার শুধু বসে বসে শুনছেন।আর আয়ুশ মাথা উচুঁ করে দাড়িয়ে আছে।

দেখো কি ছেলে এতো কিছু হয়েছে এখনও মাথা নিচু করলো না!(স্টুডেন্টের ভিড়ের মধ্যে থেকে একজন)

আমি যখন ভুল কিছু করিনি।তাহলে আমি মাথা নিচু কেনো করবো?ড্রাগস গুলো শুধু আমার ব্যাগ থেকে বেরিয়েছে বলে যে আমি ড্রাগস সেবন করি বা ড্রাগস নিয়ে ব্যবসা করি এইটা তো আর প্রমাণ হয় না।(আয়ুশ রাগে চিৎকার করে)

এই ছেলে তোমার ব্যাগ থেকে ড্রাগস বেরিয়ে, তোমার এতে হাত নেই এইটা প্রমাণ করার জন্য কোনো প্রমাণও নেই তোমার কাছে।আর তুমি এখানে চিৎকার করে গলা উঠিয়ে কথা বলছো!(ইংলিশ প্রফেসর)

এই ছেলেকে গণপিটুনি দেয়া উচিত বলেই কিছু ছেলে মেয়ে হল রুমের স্টেজে উঠে আয়ুশকে মারার জন্য আসতে লাগলো।

অনেক হয়েছে আমার দেবরকে মারার চেষ্টা দাড়া দেখাচ্ছি মজা।বলেই ওড়না ভালো করে কোমরে বেধে নিলাম।
ডালিয়া আমার ব্যাগটা রাখ।বলেই স্টেজে একটা লাঠি হাতে নিয়ে উঠে আয়ুশ এর সামনে গিয়ে দাঁড়ালাম।

যেইটা আসবে সেইটাই মার খাবে বলে দিলাম।আয়ুশ কি সত্যি কারের অপরাধী কিনা এখনও তা প্রমাণ হয় নি।তাই এক ওকে মারা তো দূরে থাক ছুতেও পারবে না।

আস্থা।সরে যাও এখান থেকে আমি সামলে নিবো।আমার তোমার প্রোটেকশনের দরকার নেই।(আয়ুশ)

দেখছি কেমন সামলেছ?আয়ুশ তোমার ভাই আছে!(আমি)

আমার কাওকে প্রয়োজন নেই।আমার কোনো দরকার নেই তোমাকে আর না আমার ওই শুধু মাত্র নামে ভাইকে(আয়ুশ রেগে)

আয়ুশ।তোমার ভাই তোমাকে সেই আগের মতই ভালোবাসে।শুধু ওই ভালোবাসাটা ওর মা বাবা হারানোর কষ্টের নিচে চাপা পড়ে গেছে।(আমি)

ভুলেও না।উনি কখনও আমাকে ভালোবাসত না।এতো দিনের আওয়ারা হয়ে কাটিয়েছি।কিন্তু উনি কখনও আমার দিকে তাকানোর প্রয়োজন বোধ করেনি।আমাকে শাসন করে নি।আর এখন এসেছে ভাইয়ের ভালোবাসা দেখাতে!
(আয়ুশ এর চোখে পানি টলটল করছে যা আমি স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি)

ওদের কথা শুনার জন্য এখানে এসেছি নাকি!ওই মেয়ে আটকাতে পারবে না।এখনই ওকে আর ওই মেয়েকে ইচ্ছা মত দিয়ে নেই।
বলেই সবাই আমার দিকে এগোতে লাগলো।আয়ুশ আমাকে ওর পিছনে দিয়ে দিলো।
যখনই ভিড় আয়ুশকে মারতে যাবে তখনই আভি বলে উঠল

আমার ভাইকে মারার কথা চিন্তা করলে তার ফল কি হবে তা কি ভেবে দেখেছ?
আমি আর আয়ুশ তাকিয়ে দেখি আভি আর ওর পিছু পিছু অনেক গুলো পুলিশ সাথে নিহাল ভাইয়া আর আরিফও আছে।উনার হাতে একটা ল্যাপটপ।

তোমার বরকে কে ফোন দিয়েছে?(আয়ুশ ফিসফিস করে)

বরকে তো আর বউই ফোন দিবে তাই না? দেখো কি হ্যান্ডসাম লাগছে তোমার ভাইকে আর আমার বরটাকে। হায় নজর লাগে না যেনো কারো।(আমি উনার এই লুকে ফিদা হয়ে)

নিজেকে সংযত করো আস্থা।(আয়ুশ ভ্রু কুঁচকে)

দূর।সংযত করার গুষ্টি কিলাই।এমন বর থাকলে নিয়ত বিগড়ে নিতে মন তো চাইবেই(আমি আভির হ্যান্ডসাম লুকে হাবুডুবু খেতে খেতে)

তুমি সত্যি ভাইকে অনেক ভালোবাসো তাইনা আস্থা?(আয়ুশ আস্থার দিকে তাকিয়ে মনে মনে)

আরে আমার দেখি তাকিয়ে কি দেখছো।তোমার ভাইকে দেখো।আজ সব কয়টায় খবর নিবে!(আমি এক্সসাইটেড হয়ে)

দেখছি।তুমি বেশি এক্সসাইটেড হওয়া বন্ধ করবে?(আয়ুশ)

দূর।
বলেই আমি আভির দিকে মনোযোগ দিলাম।

আভি স্টেজে উঠেই প্রিন্সিপালের কাছে গেলো। প্রিন্সিপাল ওকে উনার পাশেই বসতে বললো।উনি আর নিহাল ভাইয়া প্রিন্সিপাল স্যারের পাশে গিয়ে বসলো।আমি আর আয়ুশ স্টেজে দাড়িয়ে আছি।ডালিয়া নিহাল ভাইয়ার পাশে গিয়ে দাঁড়ালো।আরিফ আভির পিছনে দাড়ালো।কিছু বডিগার্ড এসে আমাদের পিছনে দাড়ালো।


এখন দেখি কে আমার ভাইকে মারার চিন্তা করছে?(আভি পায়ের উপর পা তুলে বসে আছে)

আভির এমন রাগী লুক দেখে সবাই ভয় পেয়ে পিছিয়ে গেলো। প্রিন্সিপাল স্যার ও একটু ভয় পাচ্ছে দেখেই বুঝা যাচ্ছে আর সাথে প্রফেসররাও।

কি হলো?এখন সবার জোশ কোথায়?(আভি রাগে চিৎকার করে)

সবার জোশ এখন জুস হয়ে গেছে।আর আভি স্যারকে দেখার পর সেই জুস সবাই গিলে ফেলেছে।এখন কারোর জোশ আর বাকি নেই।তাই না?(আরিফ)

আমি আরিফের কথা শুনে ফিক করে হেসে দিলাম।আরিফের এমন একটা গুণ আছে যা সব সিরিয়াস পরিস্থিতিকেই মুহূর্তের মধ্যে কমেডি বানিয়ে ফেলতে পারে।

আস্থা তোমার কি টেনশন হচ্ছে না?তোমার এমন পরিস্থিতির মধ্যে কি করে হাসি পায়?(আয়ুশ ফিসফিস করে)

আমার কোনো টেনশন হচ্ছে না।কারণ তোমার ভাইয়ের প্রতি আমার সম্পূর্ণ বিশ্বাস আছে উনি ঠিক তোমাকে নির্দোষ প্রমাণ করবে।(আমি আভির দিকে তাকিয়ে)

আমি আভি দিকে তাকাতেই আভি আমাকে চোখ টিপ মারলো।আমি অবাক হয়ে গেলাম।একটু আগেই উনি সবাইকে রাগী গলায় সাসাচ্ছিলো।আর এখন আমাকে চোখ টিপ মারলো।আর এইটা শুধু আমি না আয়ুশ ও দেখলো।

তোমাদের জুটি খুবই অদ্ভুত।একজন টেনশনে হাসে আরেকজন রাগের মধ্যেও রোমান্স খুঁজে।বাহ!(আয়ুশ)

হিহি।(আমি দাত বের করে হাসি দিয়ে)


অন্যদিকে
মি:আভি!আপনার ভাইয়ের ব্যাগ থেকে আমরা ড্রাগস পেয়েছি(ইংলিশ প্রফেসর)

তো!(আভি ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে)

তো!নিশ্চয়ই উনি ড্রাগস সেবন করে তাই উনার ব্যাগ থেকে ড্রাগস পাওয়া গেছে।আর ইদানিং আমাদের কলেজে কলেজে ড্রাগস সেবন করার নিয়ে অনেক গুঞ্জন শোনা যাচ্ছিল।আর এখন তো সরাসরি আপনার ভাইয়ের কাছ থেকে ড্রাগস পাওয়া গেছে।(ইংলিশ প্রফেসর)

তাই নাকি!আয়ুশ এইটা কি সত্যি?(আভি)

আমি বললে কি আপনি বিশ্বাস করবেন?(আয়ুশ অন্য দিকে মুখ ফিরিয়ে)

হুম।করবো।আমি আমার ভাইকে বিশ্বাস করবো!(আভি)

আমি এইসব ব্যাপারে কিছুই জানি না।আজ সকালে কলেজে এসে ব্যাগ রেখে বাহিরে গেছি।আসার পর দেখি উনারা আমার ব্যাগ থেকে কি যেনো খুঁজছিল।জিজ্ঞেস করতেই বললো কে জানি বলেছে আমি নাকি ড্রাগস সেবন করি আর বেচাকেনাও করি।পরেই তারা আমার ব্যাগ চেক করে ড্রাগস পেলো।কিন্তু আমি এইসব কিছুই করি নি।আর আমি জানি আপনি(আভি) আমার কথা কিছুই বিশ্বাস করবেন না।(আয়ুশ)

দেখলেন আমার ভাই কি বললো? ও এই ব্যাপারে কিছুই জানে না।আপনাদের কারো কাছে কি প্রমাণ আছে ওর বিরুদ্ধে?(আভি)

আয়ুশ আভির কথা শুনে অবাক।কারণ ওর বিশ্বাস ছিলো আভি ওকে বিশ্বাস করবে না।কিন্তু আভি ওর সাপোর্টেই কথা বললো।

কি হলো দেবর মশাই!অবাক হলে বুঝি?(আমি আয়ুশ কে টিজ করে)

চুপ করে দেখো।এখনও তোমার স্বামীর প্রতি আমার কোনো ভরসা নেই।(আয়ুশ)

সব গুলো এক।মুখে এক মনে আরেক।(আমি বিড়বিড় করে)

কিছু বললে?(আয়ুশ)

না।চুপ করে দেখছি(আমি)

আছে প্রমাণ।ওর বন্ধু রাই ওর বিরুদ্ধে সাক্ষী দিয়েছে!ওরা নাকি ওকে ড্রাগস সেবন করতে দেখেছে।(প্রোফেসর)

তাই নাকি!দেখি তো ওর বন্ধুদের!(আভি ভ্রু উচুঁ করে)

পরেই আয়ুশ এর বন্ধুদের স্টেজে আনা হলো।

তোমরা কি সত্যি দেখেছো আয়ুশ ড্রাগস নিচ্ছে!(আভি)

জ্বি।(আয়ুশ এর বন্ধুরা)

কোথায় নিয়েছে?(আভি)

ক্লাস রুমে,,কমন রুমে আরো অনেক জায়গাতে আমরা দেখেছি ওকে ড্রাগস নিতে!

তা তখন কেনো সবাইকে বলো নি ওর ব্যাপারে?(আভি)

তখন আমরা জানতাম না ও যেটা নিচ্ছে ওইটা ড্রাগস।

ও তাহলে হঠাৎ আজ জেনে গেছো ওইটা ড্রাগস!ভালো।আয়ুশ দেখ এদের তুই তোর ফ্রেন্ড সার্কেল বলেছিলি।(আভি)

আয়ুশ হাত মুষ্টি বদ্ধ করে নিচের দিকে তাকিয়ে আছে।

এই তুমি?তুমি তো ওর বেস্ট ফ্রেন্ড তাইনা।তোমারও মনে হয় ও ড্রাগস নেয়।(আভি)

জ্বি।(আয়ুশ এর বেস্ট ফ্রেন্ড ইমরান)

তা এখন তো প্রমাণ হয়ে গেছে আপনার ভাই সত্যিই দোষী!(প্রফেসর)

আমার ভাইকে দোষী প্রমাণ করতে পারলে যেনো আপনার খুব শান্তি হবে!
খুব।ভালো।আমি এতো ক্ষন আপনাদের সাক্ষ্য দেখছিলাম।এখন আপনারা আমার সাক্ষ্য প্রমাণ দেখুন।নিহাল দেখা তো।(আভি)

আরিফ লেপটপটা দাও তো।(নিহাল)

এই যে স্যার।হাজির।(আরিফ)

নিহাল ভাইয়া লেপটপে কি যেনো টিপলো।তারপরই হল রুমের বড়ো পর্দায় কি যেনো প্লে করা হলো।

আর তা দেখেই আমরা সবাই হা করে তাকিয়ে রইলাম।ওইটাতে দেখা যাচ্ছে ইমরান যে কিনা আয়ুশ এর বেস্ট ফ্রেন্ড ও আয়ুশ এর ব্যাগে ড্রাগস গুলো রাখছে।

আয়ুশ এইটা দেখেই রাগে ইমরানকে মারতে শুরু করলো।কেউ ওকে থামাতে পারছে না।আভি গিয়ে ওকে থামালো।

ভাই ছাড়ো।ওর মতো বিশ্বাস ঘাতককে মেরে ফেলা উচিত।(আয়ুশ)

থাম।অনেক হয়েছে।
আভি আয়ুশকে শান্ত করলো।

মি:আভি আপনি কি করে এই সিসিটিভি ফুটেজ পেলেন?ওইটা তো ডিলেট করা হয়েছিল আর ওইটা কে করেছে আমরা জানি না?(প্রিন্সিপাল)

এই প্রশ্নের উত্তর বোধহয় ইংলিশ প্রফেসর দিতে পারবে। তাই না স্যার?(আভি)

মানে।স্যার উনি কি বলছেন?(প্রিন্সিপাল)

আমি বলছি স্যার।আসলে উনি অনেক বছর ধরে এই কলেজে ড্রাগস কেনাবেচা করছে।আর এইটা আয়ুশ টের পেয়ে যায়।আর ও এইটা আপনাকে বলে দিবে,, এইটা আবার ইমরান ইংলিশ প্রফেসরকে খবর দেয়।কারণ ইমরান হলো ইংলিশ প্রফেসর এর স্পেশাল কাস্টমার।তখন প্রফেসর ইমরানকে দিয়ে আয়ুশ কে ফাঁসানোর চেষ্টা করে।আর সিসিটিভি ফুটেজ ইংলিশ প্রফেসরই ডিলেট করেছে।কিন্তু আমাদের জিনিয়াস নিহাল ফুটেজ রিকোভার করে।তাই না প্রোফেসর?(আভি)


চলবে….
চলবে,,,,
এখন আভি আস্থাকে কি বকা সত্যিই দিবে?🤔🤔🤔

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here