মেঘ-বৃষ্টি ❤❤পর্ব=৫

# মেঘ-বৃষ্টি
❤❤পর্ব=৫
রোদ-রোদেলা

# তানিয়া[আনিতা]

সন্ধ্যার দিকে………

বৃষ্টি সব কাজ করে অফিস থেকে তৃনা সহ একসাথে বের হলো। তৃনার বাসা উল্টো দিকে হওয়ায় তৃনা বৃষ্টির থেকে বিদায় নিয়ে চলে গেল। এদিকে বৃষ্টি গাড়ির জন্য অপেক্ষা করছে কিন্তু গাড়ি আসছে না দেখে হাঁটতে লাগলো।

হঠাৎ তার পাশে এসে একটা গাড়ি দাঁড়ালো। গাড়ি দরজা খুলতে দেখতে পেল মেঘকে। মেঘকে দেখে বৃষ্টি তার হাটার গতি বাড়িয়ে দিল। কিন্তু মেঘ তো দমাবার পাএ নয় তাই নিজে গাড়ি থেকে বের হয়ে বৃষ্টির সামনে দাড়ালো, বলল,

——-কি হলো আমাকে দেখতে পারছনা নাকি, না দেখে চলে যাচ্ছ যে।

——-আসলে আমার তাড়া আছে তাই।

——-তো এভাবে হেটে যাচছ যে গাড়ি নিলে তো পারতে

——-আসলে গাড়ি পাচ্ছি না তাই

——-ও উঠ আমার গাড়িতে আমি পৌঁছে দিচ্ছি

কথাটি শুনে বৃষ্টি কিছুটা ঘাবড়ে গেল তবুও নিজেকে শক্ত করে বলল,

——-না দরকার নাই আমি যেতে পারব

কথাটি বলতে না বলতে একটা রিকশা এসে বৃষ্টির সামনে দাড়ালো আর বৃষ্টি সাথে সাথে উঠে পরল আর বলল,

——যান চাচা

মেঘ তখনও সেখানে দাঁড়িয়ে ছিল এরপর গাড়ি নিয়ে চলে গেল।

বৃষ্টি বাসায় গিয়ে নিত্যদিনের মত সব কাজ করে নিল। এদিকে মেঘ বাসায় গিয়েও ঠিক থাকতে পারছে না, তার মনে এখনও সকালে বলা বৃষ্টির কথা গুলো ঘুরপাক খাচ্ছিলো, কিছু ফাইল নিয়ে কাজ করছিল কিন্তু কোনোভাবে মনোযোগ দিতে পারছে না, তার মধ্যে একপ্রকার অস্থিরতা কাজ করছিল কখন ফোন আসবে সে চিন্তা করছিল, হঠাৎ রোদেলা মেঘের রুমে এসে,

——-ভাইয়া কি হলো সেই কখন থেকে খেতে ডাকছি তুমি সাড়া দিচ্ছ না কোনো সমস্যা?

——-না কোনো সমস্যা না তুই যা আমি কাজটা সেরে আসছি

——-না এখন কোনো কাজ না আগে ডিনার তারপর কাজ চলো, চলো।

কথাটা বলতে বলতে মেঘকে টেনে নিয়ে খাবার টেবিলে বসালো খাবার নিল ঠিকই কিন্তু খাচ্ছে না সেগুলো নিয়ে নাড়াচাড়া করছে এটা দেখে তার মা বলল,

——-কিরে কিছু খাচ্ছিস না যে কিছু কি হয়েছে

——-না মা এমনি এতো খাচ্ছি
,
,
,
,
,
,
খাবার মুখে নিতে যাবে এমন সময় মেঘের ফোনটা বেজে উঠল ফোনটা দেখে মেঘ হেসে দিল মনে হচ্ছে এতোক্ষণ এটার অপেক্ষায় ছিল আর মেঘ ফোনটা নিয়ে উঠতে যাবে তখনি ওর মা বলে উঠল,

——কিরে খাবার রেখে উঠে যাচ্ছিস খাবি না

——-না মা অনেক খেয়েছি আর খাব না

কথাটা বলেই হাটা ধরল আর মেঘের মা তার যাওয়ার দিকে চেয়ে রইল।

——-হ্যা বলো কোনো তথ্য পেলে?
,
,
,
,
,
,
——-what are you sure?
,
,
,
——-Ok tanx ভালো করে নজর রাখো আর কোনো তথ্য পেলে জানাবে




তুমি কি মনে করেছ এভাবে আমার কাছ থেকে তুমি সবকিছু লুকিয়ে রাখবে কখনো না এই মেঘ আহমেদ থেকে লুকানো এতো সহজ না ভেবেছিলাম তোমাকে একটা সুযোগ দিব কিন্তু সেই পথটা তুমি নিজেই বন্ধ করে দিয়েছো একদিকে ভালো হয়েছে আমার কাজটা সহজ করে দিলে এখন শুধু দিনটির অপেক্ষায় রইলাম কথাটা বলেই মুখের মাঝে একটা পৈশাচিক হাসি দিল।
,
,
,
,
এভাবে কেটে গেল আরও কিছু দিন হঠাৎ একদিন খেতে বসে বৃষ্টির মা বলল,

——-কিরে মা ছুটি নিলি বিয়ের তো আর কিছুদিন বাকি অনেক কাজ তো পড়ে রইল।

——-হুম মা কাল নিব চিন্তা করছি আসলে ভয় লাগছে আদো ছুটি পাবো কিনা তুমি তো জানো অসুস্থ থাকার কারণে কিছু দিন অফিসে যেতে পারিনি যদি বস ছুটি না দেয়।

——হুম ঠিক বলছিস দেখ একটু বুঝিয়ে বললে না করবে না

——হুম সেটাই করতে হবে
,
,
,
,
পরদিন সকালে অফিস গিয়ে বৃষ্টি সোজা মেঘের রুমে গেল। গিয়ে দেখল মেঘ এখনো আসে নি তাই মেঘের কেবিনে বসে অপেক্ষা করতে লাগলো। মেঘ কেবিনে ঢুকে বৃষ্টিকে দেখে একটু অবাক হলো আর বলল,

——-কি হলো আজ আমার কেবিনে বসে আছেন কোনো important কিছু?

——-আসলে কিভাবে যে বলি

——-সমস্যা নেই নির্দ্বিধায় বলুন

——-আমার ৫ দিনের ছুটি লাগবে

——ওকে নিন এটা আর এমন কি কথা যে বলতে পারছেন না তা কি কাজের জন্য নিচ্ছেন জানতে পারি

——-না একান্ত ব্যাক্তিগত

——-ওকে বলতে হবে না

কথাটি শুনে বৃষ্টি বের হতে যাবে ঠিক তখনি মেঘ বলে উঠল,

——-যে কাজের জন্য ছুটি নিলেন তা আদো হবে তো

কথাটা শুনে বৃষ্টি থমকে গেল পিছনে ফিরে বলল,

——-মানে?

——-সব কথার কি আর মানে হয়?

কথাটি বলে হাসতে লাগলো আর বলল,

——-আরে তেমন কিছু না মজা করছিলাম দোয়া করি যে কাজের জন্য ছুটি নিলেন সেটা যেন সফল হয়।
,
,
,
,
,
বৃষ্টি কেবিন থেকে বের হয়ে মেঘের কথা গুলো ভাবতে লাগলো কেমন জানি রহস্যময় লাগছিল কথা গুলো তাহলে ওকি কিছু জানতে পারল না না কেমনে সম্ভব ওনি যাতে না জানেন তাই অফিসের কাউকেও বলে নি এমনকি তৃনা আর শ্রাবনকেও না বৃষ্টি ভেবে রেখেছে একেবারে বিয়ের পর ওদের দুজনকে জানাবে যদি রাগ করে তবে সেটা যেকোনো ভাবে সামলে নিবে তাই কিছুটা নিশ্চিন্ত হয়ে আর কিছু না ভেবে নিজের ডেক্সে গিয়ে বসল।
.
.
.
.
এতোক্ষণ বৃষ্টির সব কাজ মেঘ আড়াল থেকে দেখছিল আর হেসে বলল এতটুকু তে ভয় পেয়ে গেলে তাহলে বিয়ের দিন কি করবে।

এভাবে দেখতে দেখতে বিয়ের দিন চলে এলো। আজ বৃষ্টির গায়ে হলুদ। রোদের বাসা থেকে হলুদ নিয়ে এসেছে বৃষ্টির গায়ে হলুদ দেওয়ার জন্য। যথারীতি তাকে হলুদ গোসল করানো হলো। কিন্তু সকাল থেকে বৃষ্টির মা লক্ষ্য করল বৃষ্টিকে কেমন যানি চিন্তিত লাগছিল মনে হচ্ছে কিছু একটা নিয়ে খুব ডিপ্রেশনে ভুগছে তাই তিনি তার রুমে গেলেন কথা বলতে। বৃষ্টি রুমে বসে ছিল, মাথায় কারো স্পর্শ পেয়ে পেছনে ফিরে দেখে তার মা।

——কিছু বলবে

——তোর কি কিছু হয়েছে

——কই না তো এই কথা কেন জিজ্ঞেস করছ

——-না সকাল থেকে তোকে কেমন জানি মনমরা লাগছে

——-কই তেমন কিছু না

——-ও দেখিস কোনো সমস্যা হলে বলবি ঠিক আছে

.
.
.
.
.
কথাটা বলে তিনি চলে গেলেন এদিকে বৃষ্টি মনে মনে বল্ল তোমাকে কোনো টেনশনে রাখতে চাই না মা আসলে আমার খুব ভয় লাগছে মনে হচ্ছে বিয়ের দিন কিছু একটা হবে তখনি রোদের কল এল রিসিভ করতেই,

——-কিরে কেমন লাগছে আজকে একদিন পর তো আমার কাছে চলে আসবি

——-হুম ভালো

——তোর কি কিছু হয়েছে এমন উদাস হয়ে কথা বলছিস

——-কই কিছু না আসলে মা আর ভাইকে ছেড়ে চলে যাব তাই একটু মন খারাপ করছে

——-ও আচ্ছা এ ব্যাপার সমস্যা কী যখন ওদের মনে পরবে তখন চলে যাবি আর কি

——হুম

——আচ্ছা একটা কথা বলি বিয়ের পর ও কি আমরা এভাবে কথা বলব

——কিভাবে

——এই যে তুই তাই কারী করে

——তুই বল কিভাবে বলবি

——-বিয়ের পর আমরা তুমি করে বলবো ঠিক আছে
,
,
,
কথাটা শুনে বৃষ্টি হো হো করে হেসে উত্তর দিল

——-আচ্ছা তোর ইচ্ছে এখন রাখি

ফোনটা রেখে বৃষ্টি ঘুমিয়ে পড়ল

আজ দুপুরে বিয়ে আয়োজন করা হয়েছে বৃষ্টিদের বাড়ির ছাদে। ছোট খাটো করে একটা পেন্ডেল করা হয়েছে। বৃষ্টিকে খুব সুন্দর করে সাজানো হয়েছে, যদিও
বৃষ্টি দেখতে এমনিও সুন্দর।

————————–+————————–

স্টেজে এনে বসানো হলো বৃষ্টিকে কিন্তু বৃষ্টির অস্থিরতা এবার যেন আরও বেড়ে গেল তবুও নিজেকে শক্ত রাখার চেষ্টা করছে। এদিকে বরযাএীও এসে পরেছে। যথাযথ ভাবে বৃষ্টির পাশে রোদকে বসানো হলো। কাজীকে বিয়ে পড়াতে বলল। কাজী বিয়ে আরম্ভ করবে এমন সময় একটা আওয়াজ আসল দরজার দিক থেকে।
.
.
.
.
.
.
দরজার দিকে তাকাতে…………
,
,
,
,
,
,
চলবে…………….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here